৮ জানুয়ারি, ২০২২, ইতিহাসের সবথেকে প্রভাবশালী বিজ্ঞানী মস্তিষ্ক, কসমোলজিস্ট, লেখক এবং থিওরেটিক্যাল ফিজিসিস্ট স্টিফেন উইলিয়াম হকিংয়ের ৮০ তম জন্মদিন (Stephen Hawking 80th Birthday)। আর এই বিশেষ দিনে গুগলের তরফ থেকে একটি ভিডিয়োর মাধ্যমে হুইলচেয়ারে বসেই বিশ্বটাকে বদলে দেওয়ার মালিককে শ্রদ্ধা জানানো হল। হকিংয়ের এই ৮০তম জন্মদিনে গুগল তার ডুডলে (Google Doodle) একটি বিশেষ অ্যানিমেটেড ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে। ২:৩১ মিনিটের সেই ভিডিয়োর বর্ণনায় যে কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে, তা আসলে স্টিফেন হকিংয়ের নিজস্ব কম্পিউটার জেনারেটেড ভয়েস। এই মহাবিশ্বে তাঁর অবদান, তাঁর জীবনে নিয়তির নিষ্ঠুর পরিহাস এবং হুইলচেয়ারে বসেই জীবনযুদ্ধের খেলায় হকিংয়ের লড়াই – এই সব দিকই ফুটে উঠেছে আড়াই মিনিটের ছোট্ট ওই ভিডিয়োতে।
গুগল তার পোস্টে লিখছে, “আজকের ভিডিয়ো ডুডল উদযাপন করছে ইতিহাসের সবথেকে প্রভাবশালী বিজ্ঞানী মস্তিষ্ক, ইংলিশ কসমোলজিস্ট, লেখক এবং থিয়োরেটিক্যাল ফিজিসিস্ট স্টিফেন হকিংকে। ব্ল্যাক হোল তত্ত্ব থেকে বিগ ব্যাং নিয়ে তাঁর আজীবন লড়াই, মহাবিশ্বের উৎস এবং যান্ত্রিকতা নিয়ে মতবাদ মডার্ন ফিজিক্সে অন্য মাত্র যোগ করেছিল। সেই সঙ্গেই আবার তাঁর একাধিক বইও এক দিকে যেমন বিভিন্ন মহলে সমাদৃত হয়েছিল, তেমনই আবার বেস্ট সেলারও ছিল।”
১৯৪২ সালের ৮ জানুয়ারি ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে জন্মগ্রহণ করেছিলেন হকিং। ছোট বেলা থেকেই মহাজাগতিক দুনিয়ার অগাধ পাণ্ডিত্য দেখে সবাই ‘আইনস্টাইন’ বলেই ডাকতেন তাঁকে। মা এবং বাবা দু’জনেই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন। মা’য়ের বিষয় ছিল রাজনীতি, অর্থনীতি ও দর্শন এবং বাবা ছিলেন মেডিসিনের ছাত্র। মাত্র ২১ বছর বয়সে মোটর নিউরোনের দুরারোগ্য ব্যাধি অ্যামিওট্রপিক লেটারেল স্কেলরোসিস-এ আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। চিকিৎসকরা পরিষ্কার জানিয়েছিলেন, এই পরিস্থিতিতে দু’বছরের বেশি কোনও মতেই বাঁচা সম্ভব নয় হকিংয়ের।
পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে চলাফেরা, কথা বলা সবই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল হকিংয়ের। তার পর থেকে মৃত্যু ইস্তক হকিংয়ের জীবন কেটেছিল হুইলচেয়ারেই। কিন্তু লড়াইটা ছাড়েননি। কম্পিউটার স্পিচ সিন্থেসাইজারের সাহায্যে কথা বলতেন। ২১ বছর বয়সে যখন তিনি মোটর নিউরোনের বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেই সময়ে মিউজিক কম্পোজ়ার রিচার্জ ওয়্যাগনর ও হকিংয়ের প্রেমিকা তাঁকে ফিজিক্স ও গণিত নিয়ে রিসার্চ করতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিলেন।
কোয়ান্টাম তত্ত্ব, আপেক্ষিকতাবাদ, এই মহাবিশ্বের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা ও তাদের চরিত্র নিয়ে বিশ্লেষণ এবং সর্বোপরি ব্ল্যাক হোল তত্ত্ব – স্টিফেন হকিং তাঁর জীবন কাটিয়ে দিয়েছিলেন এই সব বিষয় নিয়ে গবেষণা করে। ব্ল্যাক হোল নিয়ে তাঁর বিখ্যাত তত্ত্ব ‘হকিং রেডিয়েশন’ প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছিলেন ১৯৭৪ সালে। হইহই রব পড়ে গিয়েছিল সারা বিশ্বে। আর সেই সালেই মাত্র ৩২ বছর বয়সে রয়্যাল সোসাইটির ফেলো হয়ে যান হকিং। তার ঠিক ৫ বছর পরে ১৯৭৯ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগের লুকেয়িসান প্রফেসর হন। একদা এই পদে ছিলেন স্যার আইজ্যাক নিউটনও।
দীর্ঘদিনের প্রেমিকা জেন ওয়াইল্ডকে ১৯৬৫ সালে বিয়ে করেন হকিং। তিন সন্তান ছিল তাঁদের। বিয়ের ২৫ বছর পরে হকিং ও জেনের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তার পরে তাঁরই নার্স এলাইনকে ম্যাসনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। কিন্তু সে বিয়েও বেশিদিন টেকেনি। তবে বিজ্ঞানকে আরও পাঁচটা বিষয়ের মতো জনপ্রিয় করার জন্য হকিংয়ের অবদান ছিল অভাবনীয়। তাঁর একাধিক বই-ই তার প্রমাণ দেয়। তাঁর লেখা বই ‘আ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ টাইম’ প্রকাশিত হয় ১৯৮৮ সালে। সেই সময় সেই বইয়ের কেবল মাত্র ইংরেজি সংস্করণের কপি বিক্রি হয় ১ কোটি। অন্য ভাষার রূপান্তর ধরলে যে সংখ্যাটা প্রায় কয়েক গুণ হয়ে যাবে। মোট ৩৫টি ভাষায় অনূদিত হয়েছিল বইটি। পরে আবার ২০০১ সালে প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর আর একটি বই, ‘দ্য ইউনিভার্স ইন আ নাটশেল’।
শুধু বিজ্ঞান নয়। রাজনীতি নিয়েও নিজের মত প্রকাশে কুণ্ঠা বোধ করতেন না স্টিফেন উইলিয়াম হকিং। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের আগে ডোনাল্ট ট্রাম্পের ‘বুদ্ধিমত্তা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধেও আওয়াজ তুলেছিলেন। দীর্ঘদিন হুইলচেয়ারে বসে লড়াই করতে করতে ২০১৮ সালের ১৪ মার্চ তিনি প্রয়াত হন। ঘটনাচক্রে ১৪ মার্চ অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের জন্মদিন। আর তাঁর যে দিন জন্ম অর্থাৎ ৮ জানুয়ারি, সে দিন মারা গিয়েছিলেন গ্যালিলিও গ্যালিলি। ২০১৪ সালে স্টিফেন হকিংকে নিয়ে তৈরি হয় সিনেমা ‘দ্য থিওরি অফ এভরিথিং’।
আরও পড়ুন: মাছও গাড়ি চালাতে জানে? গোল্ডফিশকে প্রশিক্ষণ দিয়ে ‘প্রমাণ’ করলেন ইজ়রায়েলের বিজ্ঞানীরা
আরও পড়ুন: গিরগিটির মতো রং বদলাবে বিএমডব্লিউ-র এই গাড়ি! বোতাম টিপলেই কালার স্কিম চালু…
আরও পড়ুন: মঙ্গলগ্রহের উত্তর মেরুর চোখ ধাঁধানো ছবি! প্রকাশ্যে আনল চিনের তিয়ানওয়েন-১
৮ জানুয়ারি, ২০২২, ইতিহাসের সবথেকে প্রভাবশালী বিজ্ঞানী মস্তিষ্ক, কসমোলজিস্ট, লেখক এবং থিওরেটিক্যাল ফিজিসিস্ট স্টিফেন উইলিয়াম হকিংয়ের ৮০ তম জন্মদিন (Stephen Hawking 80th Birthday)। আর এই বিশেষ দিনে গুগলের তরফ থেকে একটি ভিডিয়োর মাধ্যমে হুইলচেয়ারে বসেই বিশ্বটাকে বদলে দেওয়ার মালিককে শ্রদ্ধা জানানো হল। হকিংয়ের এই ৮০তম জন্মদিনে গুগল তার ডুডলে (Google Doodle) একটি বিশেষ অ্যানিমেটেড ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে। ২:৩১ মিনিটের সেই ভিডিয়োর বর্ণনায় যে কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে, তা আসলে স্টিফেন হকিংয়ের নিজস্ব কম্পিউটার জেনারেটেড ভয়েস। এই মহাবিশ্বে তাঁর অবদান, তাঁর জীবনে নিয়তির নিষ্ঠুর পরিহাস এবং হুইলচেয়ারে বসেই জীবনযুদ্ধের খেলায় হকিংয়ের লড়াই – এই সব দিকই ফুটে উঠেছে আড়াই মিনিটের ছোট্ট ওই ভিডিয়োতে।
গুগল তার পোস্টে লিখছে, “আজকের ভিডিয়ো ডুডল উদযাপন করছে ইতিহাসের সবথেকে প্রভাবশালী বিজ্ঞানী মস্তিষ্ক, ইংলিশ কসমোলজিস্ট, লেখক এবং থিয়োরেটিক্যাল ফিজিসিস্ট স্টিফেন হকিংকে। ব্ল্যাক হোল তত্ত্ব থেকে বিগ ব্যাং নিয়ে তাঁর আজীবন লড়াই, মহাবিশ্বের উৎস এবং যান্ত্রিকতা নিয়ে মতবাদ মডার্ন ফিজিক্সে অন্য মাত্র যোগ করেছিল। সেই সঙ্গেই আবার তাঁর একাধিক বইও এক দিকে যেমন বিভিন্ন মহলে সমাদৃত হয়েছিল, তেমনই আবার বেস্ট সেলারও ছিল।”
১৯৪২ সালের ৮ জানুয়ারি ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে জন্মগ্রহণ করেছিলেন হকিং। ছোট বেলা থেকেই মহাজাগতিক দুনিয়ার অগাধ পাণ্ডিত্য দেখে সবাই ‘আইনস্টাইন’ বলেই ডাকতেন তাঁকে। মা এবং বাবা দু’জনেই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন। মা’য়ের বিষয় ছিল রাজনীতি, অর্থনীতি ও দর্শন এবং বাবা ছিলেন মেডিসিনের ছাত্র। মাত্র ২১ বছর বয়সে মোটর নিউরোনের দুরারোগ্য ব্যাধি অ্যামিওট্রপিক লেটারেল স্কেলরোসিস-এ আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। চিকিৎসকরা পরিষ্কার জানিয়েছিলেন, এই পরিস্থিতিতে দু’বছরের বেশি কোনও মতেই বাঁচা সম্ভব নয় হকিংয়ের।
পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে চলাফেরা, কথা বলা সবই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল হকিংয়ের। তার পর থেকে মৃত্যু ইস্তক হকিংয়ের জীবন কেটেছিল হুইলচেয়ারেই। কিন্তু লড়াইটা ছাড়েননি। কম্পিউটার স্পিচ সিন্থেসাইজারের সাহায্যে কথা বলতেন। ২১ বছর বয়সে যখন তিনি মোটর নিউরোনের বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেই সময়ে মিউজিক কম্পোজ়ার রিচার্জ ওয়্যাগনর ও হকিংয়ের প্রেমিকা তাঁকে ফিজিক্স ও গণিত নিয়ে রিসার্চ করতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিলেন।
কোয়ান্টাম তত্ত্ব, আপেক্ষিকতাবাদ, এই মহাবিশ্বের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা ও তাদের চরিত্র নিয়ে বিশ্লেষণ এবং সর্বোপরি ব্ল্যাক হোল তত্ত্ব – স্টিফেন হকিং তাঁর জীবন কাটিয়ে দিয়েছিলেন এই সব বিষয় নিয়ে গবেষণা করে। ব্ল্যাক হোল নিয়ে তাঁর বিখ্যাত তত্ত্ব ‘হকিং রেডিয়েশন’ প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছিলেন ১৯৭৪ সালে। হইহই রব পড়ে গিয়েছিল সারা বিশ্বে। আর সেই সালেই মাত্র ৩২ বছর বয়সে রয়্যাল সোসাইটির ফেলো হয়ে যান হকিং। তার ঠিক ৫ বছর পরে ১৯৭৯ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগের লুকেয়িসান প্রফেসর হন। একদা এই পদে ছিলেন স্যার আইজ্যাক নিউটনও।
দীর্ঘদিনের প্রেমিকা জেন ওয়াইল্ডকে ১৯৬৫ সালে বিয়ে করেন হকিং। তিন সন্তান ছিল তাঁদের। বিয়ের ২৫ বছর পরে হকিং ও জেনের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তার পরে তাঁরই নার্স এলাইনকে ম্যাসনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। কিন্তু সে বিয়েও বেশিদিন টেকেনি। তবে বিজ্ঞানকে আরও পাঁচটা বিষয়ের মতো জনপ্রিয় করার জন্য হকিংয়ের অবদান ছিল অভাবনীয়। তাঁর একাধিক বই-ই তার প্রমাণ দেয়। তাঁর লেখা বই ‘আ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ টাইম’ প্রকাশিত হয় ১৯৮৮ সালে। সেই সময় সেই বইয়ের কেবল মাত্র ইংরেজি সংস্করণের কপি বিক্রি হয় ১ কোটি। অন্য ভাষার রূপান্তর ধরলে যে সংখ্যাটা প্রায় কয়েক গুণ হয়ে যাবে। মোট ৩৫টি ভাষায় অনূদিত হয়েছিল বইটি। পরে আবার ২০০১ সালে প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর আর একটি বই, ‘দ্য ইউনিভার্স ইন আ নাটশেল’।
শুধু বিজ্ঞান নয়। রাজনীতি নিয়েও নিজের মত প্রকাশে কুণ্ঠা বোধ করতেন না স্টিফেন উইলিয়াম হকিং। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের আগে ডোনাল্ট ট্রাম্পের ‘বুদ্ধিমত্তা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধেও আওয়াজ তুলেছিলেন। দীর্ঘদিন হুইলচেয়ারে বসে লড়াই করতে করতে ২০১৮ সালের ১৪ মার্চ তিনি প্রয়াত হন। ঘটনাচক্রে ১৪ মার্চ অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের জন্মদিন। আর তাঁর যে দিন জন্ম অর্থাৎ ৮ জানুয়ারি, সে দিন মারা গিয়েছিলেন গ্যালিলিও গ্যালিলি। ২০১৪ সালে স্টিফেন হকিংকে নিয়ে তৈরি হয় সিনেমা ‘দ্য থিওরি অফ এভরিথিং’।
আরও পড়ুন: মাছও গাড়ি চালাতে জানে? গোল্ডফিশকে প্রশিক্ষণ দিয়ে ‘প্রমাণ’ করলেন ইজ়রায়েলের বিজ্ঞানীরা
আরও পড়ুন: গিরগিটির মতো রং বদলাবে বিএমডব্লিউ-র এই গাড়ি! বোতাম টিপলেই কালার স্কিম চালু…
আরও পড়ুন: মঙ্গলগ্রহের উত্তর মেরুর চোখ ধাঁধানো ছবি! প্রকাশ্যে আনল চিনের তিয়ানওয়েন-১