Covid Vaccine Pill: ইঞ্জেকশন-ভীতি দূর করতে কচ্ছপ আকৃতির বড়ি নিয়ে এলেন ভারতীয় বিজ্ঞানী, কোভিড টিকাকরণের কার্যকর পিল!
বিজ্ঞানীরা একটি বিশেষ আকারের পিল বা বড়ি ডেভেলপ করেছেন, যা গিলে নিলেই কোভিড টিকার কাজ করবে। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির যে বিজ্ঞানীরা এই গবেষণাটি করেছে, সেই দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন এক ভারতীয়, নাম ডক্টর আমেয়া কীর্তনে যাঁর জন্ম মুম্বইতে।
ভ্যাকসিন সাধারণত সূচ ব্যবহার করেই মানুষের শরীরে প্রবেশ করানো হয়ে থাকে। তা সে কোভিডের আরএনএ ভ্যাকসিন (Covid RNA Vaccine) হোক বা হেপাটাইটিস বি। আর সেই কারণেই অনেকে ভ্যাকসিন নিতে চান না, ভয় পায় বাচ্চারাও। আর এই সমস্যার সমাধানে এমআইটি বা ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (Massachusetts Institute of Technology) বিজ্ঞানীরা একটি বিশেষ আকারের পিল বা বড়ি ডেভেলপ করেছেন, যা গিলে নিলেই কোভিড টিকার কাজ করবে। আরএনএ ভ্যাকসিনের উপাদানগুলি অবক্ষয়ের জন্য খুব সংবেদনশীল হতে পারে, বিশেষ করে পাচনতন্ত্রে। তাই পরিপাকতন্ত্রে গিয়ে ভ্যাকসিনের অবদানগুলির যাতে ক্ষয় না হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য গবেষকরা এই বড়ি তৈরি করেছেন, তা দেখতে কচ্ছপের খোলের (Tortoise Shaped Pill) মতো।
দিন দুয়েক আগে সংবাদমাধ্যম ডেলিমেল-এ এই রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়েছে, এই ওষুধটি ২০১৯ সালে তৈরি করা হয়েছিল মূলত পেটের আস্তরণে ইনসুলিনের কাজ করার জন্য। পরবর্তীতে ২০২১ সালে তরল আকারে মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডির মতো বড় অণু সরবরাহ করার জন্য এটি পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং পরে নিউক্লিক অ্যাসিড পরিচালনা করার চেষ্টা করেছে এই গবেষকদল। উভয় ক্ষেত্রেই সফল প্রমাণিত হন তাঁরা। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির যে বিজ্ঞানীরা এই গবেষণাটি করেছে, সেই দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন এক ভারতীয়, নাম ডক্টর আমেয়া কীর্তনে যাঁর জন্ম মুম্বইতে।
গবেষণার মূল লেখক ডক্টর আমেয়া কীর্তনে ব্যখ্যা করে বলছেন, যে কণাগুলির মাধ্যমে বড়ি তৈরি হয় সেগুলি এক ধরণের পলিমার ডাব পলি (বিটা-অ্যামিনো ইস্টার) থেকে তৈরি করা হয়। এমআইটি টিমের আগেকার একটি কাজে দেখা গিয়েছিল যে, এই সব পলিমারের শাখাযুক্ত রূপ নিউক্লিক অ্যাসিডগুলিকে রক্ষা করতে এবং কোষের ভিতরে প্রবেশ করাতে লিনিয়ারগুলির থেকে বেশি প্রভাব ফেলে। গবেষকরা আরও লক্ষ্য করে দেখেছেন যে, দুটি পলিমার একসঙ্গে ব্যবহার করলে তা একটির চেয়ে অনেক ভাল কাজ করে।
ওষুধের এই বড়িগুলি রিসার্চাররা সর্বপ্রথম শূকরের উপরে প্রয়োগ করেন। প্রতিটি শূকরকে তিনটি করে বড়ি দেওয়া হয়েছিল, যার প্রতিটিতে ছিল ৫০ মাইক্রোগ্রাম করে এমআরএনএ, যা কোষগুলিকে এক ধরনের প্রোটিন তৈরি করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, ফাইজ়ারের জনপ্রিয় কোভিড টিকায় ৩০ মাইক্রোগ্রাম এমআরএনএ রয়েছে। গবেষকরা তারপর পরীক্ষিত প্রোটিনের শোষণ এবং প্রক্রিয়াকরণ দেখতে বিশ্লেষণ শুরু করে দেন। সেখানে তাঁরা দেখতে পান, এটি পেটে বিকাশ করতে পারলেও অন্যান্য অঙ্গে পারেনি। আর সেখান থেকেই বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন যে, কোভিড টিকাকরণে যথেষ্ট কার্যকর এই কচ্ছপ আকৃতির বড়ি।
এই গবেষণার আর এক লেখক ডক্টর অ্যালেক্স আব্রামসন বলছেন, একটা ওরাল ভ্যাকসিন কার্যকরী হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট। তাঁর কথায়, “গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টে অনেকগুলি ইমিউন কোষ রয়েছে এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টের ইমিউন সিস্টেমকে উদ্দীপিত করার মধ্যে দিয়ে একটি ইমিউন প্রতিক্রিয়া তৈরির প্রচেষ্টা অত্যন্ত পরিচিত একটি উপায়। এখানেও তাই করা হয়েছে।”
অ্যাব্রামসন আশা করেন যে, এই চিকিৎসাটি ভবিষ্যৎে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যাগুলি নিরাময়েও সাহায্য করতে পারে। আরও যোগ করে তিনি বললেন, “যখন আপনার শিরায় ইঞ্জেকশন বা সাবকুটেনিয়াস ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে সিস্টেমিক ডেলিভারি হয়, তখন পেটকে লক্ষ্য করা খুব সহজ কাজ নয়। আমরা এটিকে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টে উপস্থিত বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার একটি সম্ভাব্য উপায় হিসাবেই দেখছি।”
আরও পড়ুন: মহাকাশ থেকে অক্টোপাসের আগমন? সে আবার কী! গবেষণা তো তাই বলছে…
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকির কথা বলবে চোখ! কৃত্রিম বুদ্ধিমতা নির্ভর পদ্ধতির সন্ধান দিলেন গবেষকরা
আরও পড়ুন: এলন মাস্কের স্পেসএক্স রকেটের একটি বড় অংশ ধাক্কা খেতে পারে চাঁদে, বিপদের মুখে ‘চন্দ্রযান’-ও…