Octopuses Came From Space: মহাকাশ থেকে অক্টোপাসের আগমন? সে আবার কী! গবেষণা তো তাই বলছে…

Octopuses Are Aliens: কয়েক বছর আগে একটি রিসার্চ থেকে এমনই তথ্য জানা গিয়েছিল, যে অক্টোপাসরা আসলে এলিয়ন। এবার একটি নতুন গবেষণার পরও এই একই দাবি করা হয়েছে এবং তার স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে বলা হয়েছে, অক্টোপাসদের আগমন মহাকাশ থেকেই।

Octopuses Came From Space: মহাকাশ থেকে অক্টোপাসের আগমন? সে আবার কী! গবেষণা তো তাই বলছে...
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 02, 2022 | 10:37 PM

অক্টোপাস (Octopus) দেখতে যে একটু উদ্ভট, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই! জেলির মতো একটা সামুদ্রিক প্রাণী, যার চোখ রয়েছে, শুঁড় রয়েছে, রয়েছে হৃদয়ও। আপনার সামনে থেকেও আপনার চোখের পলক পড়তে না পড়তেই সে গায়েব হয়ে যেতে পারে। শরীরকে আশ্চর্যজনক ভাবে সংকুচিতও করতে পারে অক্টোপাস। কিন্তু তার সেই রূপ দেখে যদি কেউ তাকে এলিয়নের সঙ্গে তুলনা করে, বা এলিয়ন (Aliens) বলেই দাবি করে, তাহলে তো একটু ভ্রুকুঞ্চিত হয় বৈকি! ক্রিস্টোফার নোলানের সায়েন্স ফিকশনেও ফিরে যেতে হয় আমাদের। কয়েক বছর আগে একটি রিসার্চ থেকে এমনই তথ্য জানা গিয়েছিল, যে অক্টোপাসরা আসলে এলিয়ন। এবার একটি নতুন গবেষণার পরও এই একই দাবি করা হয়েছে এবং তার স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে বলা হয়েছে, অক্টোপাসদের আগমন মহাকাশ (Space) থেকেই।

সেই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে প্রোগ্রেস ইন বায়োফিজ়িক্স অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি নামক একটি জার্নালে। রিপোর্টের শিরোনাম, ক্যামব্রিয়ান বিস্ফোরণের কারণ – স্থলজ বা মহাজাগতিক, যেখানে পৃথিবীতে জীবনের উৎস নিয়ে অনেকটাই গভীরে গিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। রিসার্চে বলা হয়েছে, পৃথিবীতে জীবনের সঞ্চার হয়েছে রেট্রোভাইরাসের বৃষ্টির জন্য, যা আক্ষরিক অর্থে মহাকাশ থেকেই পড়েছিল। সেই রেট্রোভাইরাসগুলি তখন স্থলজ জিনোমে নতুন ডিএনএ সিকোয়েন্স যোগ করে এবং তার পরে মিউটাজেনিক পরিবর্তন হতে শুরু করে।

গবেষণাপত্রটি অন্য মোড় নিতে শুরু করে, যখন সেখানে সেফালোপডের আগমন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। রিসার্চ পেপারে বলা হচ্ছে, অক্টোপাস, স্কুইড এবং অন্যান্যদের মতো বেশ কিছু সেফালোপড মহাকাশ থেকেই পৃথিবীতে পড়েছিল। প্রাথমিক অবস্থায় এরা ছিল হিমায়িত। গবেষণায় আরও দাবি করা হয়েছে, “কয়েকশো বছর আগে ক্রিওপ্রিজ়ার্ভড স্কুইড এবং অক্টোপাসের ডিম বরফের বোলিড হিসেবে আসার সম্ভাবনাকে কখনই উড়িয়ে দেওয়া যায় না।” শুধু অক্টোপাস কেন, যে কোনও প্রাণী যে জৈবিক বৈশিষ্ট্যগুলি থেকে উপকৃত হয়, সেগুলির মধ্যে ‘কিছু না কিছু প্রাক-অস্তিত্ব’ থেকেই উদ্ভূত বলে মনে হয়, এমনই তথ্য জানাচ্ছেন গবেষণাপত্রের লেখকরা।

প্রাণের উৎপত্তি যে পৃথিবীর বাইরে হয়েছে, এ ধারণা আজকের নয়। অনন্তকাল ধরে এই তত্ত্ব আমরা শুনে আসছি। ২০১৮ সালে একটি গবেষণাপত্রে বিজ্ঞানী স্টিফেন ফ্লেশফ্রেসার উল্লেখ করেছিলেন যে, প্রাচীন গ্রিসের সময় থেকেই প্যানস্পারমিয়ার তত্ত্বটি চলে আসছে। সে বার তিনি অক্টোপাসদের এলিয়নের আর একটি রূপ বললেও, মহাকাশ থেকে তার পৃথিবীতে পড়ার বিষয়ে আলোকপাত করতে পারেননি। এই প্রথম বার এমন কোনও গবেষণা করা হল, যেখানে যুক্তি সপক্ষে দাবি করা হয়েছে যে, অক্টোপাসদের আগমন মহাকাশ থেকেই।

এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, অক্টোপাসগুলির মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে আসার তত্ত্ব যথেষ্টই উত্তেজনাপূর্ণ। সর্বোপরি, জীবনের উৎস নিয়ে এখনও এমন অনেক কিছুই রয়েছে, যার বিন্দুবিসর্গ আমাদের জানা নেই। এমনকি আমাদের নিজস্ব গ্রহের বাইরেও প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিনা, সে ব্যাপারেও আশাব্যঞ্জক কোনও ফলাফল নিয়ে আসতে পারিনি আমরা। আমরা ধীরে ধীরে মহাবিশ্ব সম্পর্কে আরও আবিষ্কার করছি, সে কথা মানতেই হবে। কিন্তু, পৃথিবীতে প্রাণের সঞ্চার নিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রচলিত ধারণার উপরে আমাদের বিশ্বাস যেন অনেকটাই ভেঙে দিচ্ছে এই গবেষণা।

এই গবেষণাপত্রের রিভিউ করেছেন, ইস্টার্ন ফিনল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল রিসার্চার কেইথ বেভারস্টক। রিভিউতে বেভারস্টক বলছেন, প্রচুর প্রমাণ এই থিসিসটিকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছে। যদিও তার পরক্ষণেই তিনি আবার বলেছেন, “বিজ্ঞান তো আর কখনও এভাবে অগ্রসর হয় না। কারণ এই প্রমাণগুলি নিয়ে নিশ্চিত হওয়া খুব একটা সহজ কাজ নয়। তবে একটা কথা নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে যে, এই থিসিসটি জীবনের উৎসকে নিয়ে একাধিক রহস্য তৈরি করেছে।” (বিজ্ঞান-বিষয়ক সংবাদমাধ্যম সায়েন্স অ্যালার্ট-এর এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্টে কেইথ বেভারস্টককে উদ্ধৃত করা হয়েছে।)

তবুও, মহাকাশ থেকে অক্টোপাসের আসার সম্ভাবনা সম্পর্কে আকর্ষণীয় কিছু দিকও তুলে ধরা হয়েছে এই রিপোর্টে। হ্যাঁ, তা শুনলে হেঁয়ালি মনে হতেই পারে। কিন্তু এই গবেষণাপত্রের লেখকরা অন্যান্য বিজ্ঞানীদের চিন্তা করার জন্য অনেক আকর্ষণীয় প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন। যদি তা প্রমাণ করতেও অনেক কিছু লাগবে। তার থেকেও বড় কথা হল, প্রাণীদের একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে একক করার কাজটি আসলে কিছু প্রমাণ করার জন্য ফোকাসকে অনেকটাই সংকীর্ণ করে তুলতে পারে। সেই কারণেই আপাতত আমাদের সেই গবেষণাপত্রটিতেই ফিরে যেতে হবে এবং আগামী দিনে বিজ্ঞানীরা এই বিষয়ে আর কোনও প্রমাণ নিয়ে আসতে পারে কি না, সেই দিকেই হাপিত্যেশ নয়নে তাকিয়ে থাকতে হবে।

আরও পড়ুন: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি রাজ্য জুড়ে দেখা গিয়েছে বিদ্যুতের ঝলকানি! প্রসারিত প্রায় ৫০০ মাইল এলাকায়

আরও পড়ুন: রুম সার্ভিস থেকে খাবার ডেলিভারি, শীতকালীন অলিম্পিক্সে অতিথি আপ্যায়নের দায়িত্বে রোবট-বাহিনী

আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকির কথা বলবে চোখ! কৃত্রিম বুদ্ধিমতা নির্ভর পদ্ধতির সন্ধান দিলেন গবেষকরা