আলিপুরদুয়ার: উত্তরবঙ্গে চা শিল্পকে সামনে রেখে চা পর্যটনের প্রসার ঘটাতে চাইছে রাজ্য। সম্প্রতি শিলিগুড়ির কাওখালিতে বিশ্ববাংলা শিল্পী হাটে এক বাণিজ্য সম্মেলন হয়। সেখানে ছিলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। উত্তরবঙ্গের ছোট বড় শিল্পপতি, ব্যবসায়ীদের নিয়ে এই ‘বিজনেস মিট’-এও উঠে আসে চা পর্যটন প্রসঙ্গ। কিন্তু রাজ্য সরকার চা পর্যটনকে তুলে ধরতে চাইলেও তৃণমূলের ঝান্ডা হাতে নিয়েই রবিবার বিকেলে আলিপুরদুয়ারের মাঝেরডাবড়ি চা বাগানে বিক্ষোভ দেখাল একদল। সূত্রের খবর, এই জেলার ৯টি চা বাগানকে চা পর্যটনের কাজে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে এই মাঝেরডাবড়িও রয়েছে। এই চা বাগানে চা পর্যটনের প্রসার ঘটাতে চা বাগান কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছে বলেও দাবি আন্দোলনকারীদের। তৃণমূলের পতাকা হাতে নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শনকারীরা জানান, বাগানের শ্রমিকরা ন্যূনতম পরিষেবাটুকু পান না। আগে সেসবের ব্যবস্থা হোক। তারপর পর্যটন নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা যাবে। রবিবার বিকেলে চা শ্রমিকরা মিছিল করে চা বাগানের সামনে এসে বিক্ষোভে সামিল হন। যে এলাকায় টুরিস্ট লজ হওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে, সেখানে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখান চা শ্রমিকরা।
তৃণমূলের চা শ্রমিক নেতা প্রদীপ সরকার বলেন, মাঝেরডাবড়ি চা বাগান যেন শিলিগুড়ির চাঁদমণি চা বাগান না হয়। তিনি অভিযোগ করেন, চা বাগানের হাসপাতালে বেড নেই, ঘর নেই, লাইট নেই। চা গাছ তুলে এখন যদি পর্যটন হয় তা হলে এর জোরাল প্রতিবাদ হবে। যদিও এ বিষয়ে চা বাগানের ম্যানেজার চিন্ময় ধরকে পাওয়া যায়নি। আদৌ এই চা পর্যটন নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোনও পরিকল্পনা রয়েছে কি না সে বিষয়ও জানা যায়নি। তবে মাঝেরডাবড়ির শ্রমিকরা বলেন, দু’ বছর হল চা বাগানে ডাম্পিং গ্রাউন্ড হয়েছে। এর মধ্যে লজ হলে তাঁদের কী হবে তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
প্রদীপ সরকারের কথায়, “এখানে শ্রমিকদের ঘর নেই, রাস্তায় আলো নেই। সেগুলো আগে দেখা হোক। আমরা তৃণমূল করি। দিদিকে ভোট দিই। আমরা দিদির সৈনিক। আমরা চাই দিদি এর সঠিক বিচার করুক। আমরা এখানে কোনওভাবেই কোনও লজ করতে দেব না। এখানে খুবই অসুবিধা। এখানে কত চা গাছ ছিল। সেসব উঠিয়ে দিয়ে এখন লজ করবে বলছে। এসব টাকার খেলা। এদিকে গরীব শ্রমিকগুলোর বাড়ি নেই, টাকা নেই। মালিক উপর মহলে হাত দিয়ে কারবার করে চলে যাবেন এটা হবে না। আমাকে শ্রমিকরাই ডেকে এনেছেন এখানে। আমি দেখি ওনারা বিক্ষোভ করছেন। ওনাদের দাবি ন্যায্য। তাই আমিও তাতে শামিল হয়েছি। আমি বলেছি, যাই হোক আমরা এর প্রতিবাদ করব। এসব পর্যটন ছেড়ে চা গাছ বাড়াক এখানে। বাগানের উন্নতি হোক। বাগানের উন্নতির জন্য দিদি যা করছেন, সেটাই ঠিক।”