আলিপুরদুয়ার: মাঝখানে কালজানি নদী। নদীর ওপর দিয়ে রেলব্রিজ। একদিকে ১৫ নম্বরের ওয়ার্ড, অপরদিকে রয়েছে ১২ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডই জনবহুল এবং তাতেই রয়েছে স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল। এদিকে কোচবিহার জেলা সংলগ্ন ১৫ নম্বর ওয়ার্ডটিকে যেন কালজানি নদীর একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ! কারণ শহরের এপ্রান্তের সঙ্গে ১৫নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছুটা অংশের যোগাযোগই কার্যত বিচ্ছিন্ন। যাতায়াতের ভরসা বলতে দিনে চলা কয়েকটি নৌকা ও রেল ব্রিজ। আলিপুরদুয়ারের ১২ নং ওয়ার্ডের কালজানি রেল ব্রিজের ওপর দিয়েই নিত্য দিন কয়েকশো মানুষ যাতায়াত করছেন প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে। ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে গ্রামের সকলেরই যাতায়াতের ভরসা এই ব্রিজ। এমনকি রোগীদেরও হাসপাতালে নিয়ে যেতে হচ্ছে ওই ব্রিজের ওপর দিয়েই।
যে কোনও মুহূর্তে চলে আসতে পারে ট্রেন। ঘটতে পারে বড় কোনও দুর্ঘটনা। গ্রামের বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীরাই স্কুলে যাওয়ার সময়ে রেল ব্রিজ পেরিয়েই যায়। রেললাইনের ওপর দিয়ে বসানো লোহার পাত। তার ওপর দিয়েই চলে যাতায়াত। গ্রামবাসীদের দাবি, প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন এই ব্রিজের ওপর দিয়ে।
যাতায়াতের সময়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে. এমন দৃষ্টান্তও কম নয়। আচমকাই ট্রেন চলে আসায় ঝাঁপ দিতে হয়েছে নদীতে, তেমনও উদাহরণ রয়েছে। তা সত্ত্বেও উদাসীন প্রশাসন। নদীর ওপারে রয়েছে কোচবিহার জেলার খোল্টা গ্রাম পঞ্চায়েত। খোল্টা গ্রামের প্রচুর ছাত্র-ছাত্রীরাও প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে এই ভাবেই যাতায়াত করে আলিপুরদুয়ারের স্কুলে।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, একাধিকবার বিকল্প ব্যবস্থার দাবি করা হয়েছে। বিভিন্ন দফতরে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। আলিপুরদুয়ারের ডি.আর.এম দিলীপ কুমার সিং বলেন, “এই ব্রিজের ওপর দিয়ে যাতায়াত করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। রেলওয়ে ব্রিজ তৈরি করা হয়েছেশুধুমাত্র ট্রেন, রেল ইঞ্জিন চলাচল করার জন্য। বিভিন্ন সময়ে রেল দফতরের তরফে এই ব্রিজের ওপর দিয়ে যাতাযাত না করার জন্য সচেতনতা করা হয়। সাধারণ মানুষ রাজ্য সরকারের কাছে পাশে আরেকটি ব্রিজ তৈরি করার আবেদন করতে পারে।”
এ ব্যাপারে আলিপুরদুয়ার পুরসভার পুর প্রশাসক প্রসেনজিৎ কর বলেন, “ছাত্র ছাত্রী ও সাধারণ মানুষকে রেল লাইন দিয়ে যাতায়াত করতে না করব। এটা ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা।পাশে নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। একটু ঘুরে গেলে রাস্তা রয়েছে। বিকল্প সেতুর কথা রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছে। এভাবে যাতাযাত হচ্ছে। রেল ও প্রশাসনের দেখা উচিত।” গ্রামবাসীরা বলছেন, ঘুর রাস্তা যেতে হলে অনেকটাই যেতে হয়। পাশের আরেকটি ব্রিজ তৈরি না হলে প্রবল সমস্যায় এলাকাবাসী।