‘তেলে সেস কমাক রাজ্য’, পদ্মের সুরে ‘সুর’ সূর্যকান্তের?

Surjya Kanta Mishra: নির্বাচন আবহেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় জানিয়েছিলেন ক্ষমতায় এলে বিধান পরিষদ তৈরি হবে। সেই মোতাবেক বিধানসভা অধিবেশনে প্রস্তাবও পেশ করা হয়। কিন্তু, তাতে বাদ সাধে বিজেপি।

'তেলে সেস কমাক রাজ্য', পদ্মের সুরে 'সুর' সূর্যকান্তের?
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 10, 2021 | 10:47 PM

আলিপুরদুয়ার: বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে বামেদের। সংযুক্ত মোর্চার তরফে মাত্র একটি আসন লাভ হয়েছে ভাঙড়ে। পেয়েছেন আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকী। বামশূন্য বিধানসভার কথা শুনে অবাক হয়েছিলেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দুঃখপ্রকাশ করেছেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। সম্প্রতি, সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন একটি ‘পলিটিক্য়াল ভুলের’ জন্য গোটা একটি দল নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। বামেদের ভরাডুবির পেছনে কার্যত জোটকেই ‘পলিটিক্যাল এরর’ বলছেন বিশ্লেষকরা। বঙ্গের মানুষ কেন ফিরিয়ে দিল তা খতিয়ে দেখতে পথে নেমেছেন বামনেতারা। শনিবার, আলিপুরদুয়ারে এসে শাসন শিবিরকে নিশানা করার পাশাপাশি ‘বিকল্পের’ কথাও বললেন বামফ্রন্টের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ( Surjya kanta Mishra)।

এদিন, পেট্রোপণ্য়ের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে সরাসরি তৃণমূল সরকারকে তোপ দেগে সূর্যকান্ত বলেন, “কেন্দ্র যা করেছে তা অপূরণীয় ক্ষতি। কিন্তু, রাজ্য সরকার কেন সেস কমাচ্ছেন না? ফেব্রুয়ারিতে মোটে একটাকা সেস কমিয়েছিল রাজ্য, সেই ফায়দা সাধারণ মানুষ পাননি। এখন কেন সেস কমানো হচ্ছে না? পরিবহনের এত অপ্রতুলতা কেন?” বস্তুত, পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে পথে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। শাসক-বিরোধী এই ‘টাগ অব ওয়ারে’ তেলের দামে রাজ্য সরকারকে সেস কমানোর কথা বলেছিল বিজেপি। কার্যত, সেই একই সুর সূর্যকান্তের ( Surjya kanta Mishra) গলায়।

এখানেই শেষ নয়, নির্বাচন আবহেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় জানিয়েছিলেন ক্ষমতায় এলে বিধান পরিষদ তৈরি হবে। সেই মোতাবেক বিধানসভা অধিবেশনে প্রস্তাবও পেশ করা হয়। কিন্তু, তাতে বাদ সাধে বিজেপি। পদ্ম শিবিরের অভিযোগ, বিধান পরিষদ আসলে ব্যয়বাহুল্য ছাড়া আর কিছু নেই। তৃণমূল স্বগোষ্ঠীর কথা ভেবেই এই পরিষদ গঠন করতে চাইছে। যদিও, তৃণমূলের তরফে বলা হয়, কার্যত বামশূন্য বিধানসভা চায় না রাজ্য সরকার। বিধানপরিষদের মাধ্যমে বাম-কংগ্রেস শিবিরের নেতাদেরকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে। কিন্তু, তৃণমূলের এই সিদ্ধান্তের পরিপন্থী বাম শিবির। বরং এদিক থেকে পদ্ম শিবিরের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন বাম নেতারা। সূর্যকান্ত এদিন বলেন, “মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বিধান পরিষদ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন। যে বিধান পরিষদের এখন কোনও প্রয়োজন নেই। অর্থবাহুল্য ছাড়া এ আর কিছুই নয়। তৃণমূলের যারা জায়গা পায়নি, তাদেরকে জায়গা করে দেওয়ার আরেক নাম বিধান পরিষদ।”

এরপর, স্বদলীয় পরাজয় প্রসঙ্গে বর্ষীয়ান বাম নেতা ( Surjya kanta Mishra) জানান, মানুষ বিকল্প খুঁজে পায়নি বলেই হয়ত ভোট দেয়নি। সেই বিকল্প তৈরি হবে। তবে সেই বিকল্পের নাম তৃণমূল বা বিজেপি নয়। সেই বিকল্প বাম জোটই এ কথাও স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন সূর্যকান্ত। আসন্ন পুরভোটেও যে জোট থাকবে তাও এদিন স্পষ্ট করে বলে দেন বামফ্রন্ট রাজ্য় কমিটির সম্পাদক। যদিও, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূলকে নির্বাচনের কারণই হল জোটের অপ্রাসঙ্গিকতা। নির্বাচন আবহে কেবল তৃণমূল বিরোধিতা আসলে স্পষ্ট করেছিল ‘আগে বাম পরে রাম’-এর ধারণাকে। ফলে, জোটের উপর বিশেষ করে বাম শিবিরের উপর আস্থা রাখতে অসমর্থ হয় আমজনতা, যা ত্বরান্বিত করে বামেদের পতন। আরও পড়ুন: ‘মানুষের টানা বাসগাড়ি’! পুরুলিয়ার রাস্তায় অভিনব প্রতিবাদ তৃণমূলের