Anubrata Mondal: পুলিশের সামনেই গলা টিপে ধরেছিলেন অনুব্রত? চুপ থেকে শিবঠাকুরের উত্তর…
Anubrata Mondal: তাহলে কি এফআইআর-এ অনুব্রতর পাশাপাশি সেই নিরাপত্তারক্ষীরও নাম রয়েছে? প্রশ্ন করা হয় শিবঠাকুর মণ্ডলকে।
বোলপুর: বীরভূমের বেতাজ বাদশার বিরুদ্ধে তিনি মুখ খুলেছিলেন। শুধু মুখই খোলেননি, তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই তুলেছেন বিস্ফোরক অভিযোগ। খুনের চেষ্টার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করেছেন এফআইআর। তিনি হলেন দুবরাজপুরের প্রত্যন্ত গ্রাম বালিগুড়ি পঞ্চায়েতের একসময়ের প্রধান। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এটাই, প্রত্যন্ত গ্রামের বর্তমানের কোনও দলীয় পদে না থাকা এই ব্যক্তির একটা অভিযোগের খোঁচায় ধাক্কা খেয়েছে ইডি-র মতো কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যেতে পারলেন না ইডি আধিকারিকরা। বরং শিবঠাকুরের দায়ের করা এফআইআর-এর ভিত্তিতে অনুব্রতর ঠিকানা হল দুবরাজপুর পুলিশ লকআপ। কিন্তু অভিযোগ ঠিক কী? TV9 বাংলাকে শিবঠাকুর মণ্ডল জানিয়েছেন, দুবরাজপুরের দলীয় কার্যালয়ের ভিতর তাঁর গলা টিপে ধরেছিলেন অনুব্রত। আর সে সময়ে তাঁর সামনে ছিলেন এক নিরাপত্তারক্ষী। এবং তিনি নাকি রাজ্য পুলিশের মতো পোশাক পরে ছিলেন। অর্থাৎ নিরাপত্তারক্ষীর সামনেই শিবঠাকুরের গলা টিপে ধরেছিলেন অনুব্রত। তাহলে কি এফআইআর-এ অনুব্রতর পাশাপাশি সেই নিরাপত্তারক্ষীরও নাম রয়েছে? প্রশ্ন করা হয় শিবঠাকুর মণ্ডলকে।
(TV9 বাংলাকে দেওয়া শিবঠাকুরের বক্তব্য)
শিবঠাকুর মণ্ডল: ওঁর (অনুব্রত মণ্ডল) নামেই কেসটা করেছি আমি।
প্রশ্ন: আপনি কি অভিযোগপত্রে লিখেছেন, ওখানে একজন নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন? সেই নিরাপত্তারক্ষীর নাম দিয়েছেন?
শিবঠাকুর মণ্ডল: নিরাপত্তারক্ষীর নাম আমি দিইনি। কারণ ওঁর নাম আমি জানি না। সেই কারণে নামটা আমি দিইনি।
প্রশ্ন: সেখানে কি তাহলে রাজ্য পুলিশের কেউ ছিলেন? নাকি অনুব্রতর ব্যক্তিগত সিকিউরিটি?
শিবঠাকুর মণ্ডল: সিকিউরিটি তো কেষ্টদার প্রচুর। না দেখলে তো আমি বুঝতে পারব না। ওর জন্য নামটা দিইনি।
প্রশ্ন: কী পোশাক পরেছিলেন ওই নিরাপত্তারক্ষী? পুলিশের উর্দি নাকি সাধারণ?
শিবঠাকুর মণ্ডল: কী বললেন? (কিছুটা চুপ শিবঠাকুর)
প্রশ্ন: পুলিশের উর্দি নাকি সাধারণ?
শিবঠাকুর মণ্ডল: পুলিশের ড্রেস পরাই ছিল। পুলিশের ড্রেস…
প্রশ্ন: তার মানে এক জন পুলিশ কর্মীর সামনেই অনুব্রত মণ্ডল আপনার গলা চিপে ধরেন…
শিবঠাকুর: এখন তো ড্রেস পরা… পুলিশের ড্রেস বলতে….এখন ড্রেসটা যে কার, সেটা কীভাবে বলব? এখন তো সবাই সচরাচর ড্রেস পরেছে (এই লাইনের অবশ্য মানে বোঝা যায়নি) তবে পুলিশের মতো ড্রেসটা পরেছিল। না দেখলে বুঝতে পারব না কিন্তু…ওর জন্যই তো আমি নামটা দিইনি।
প্রশ্ন: ওই নিরাপত্তারক্ষীকে আগে কোনওদিন দেখেছিলেন? আপনি তো অনুব্রত মণ্ডলের কাছে আগেও যেতেন…
শিবঠাকুর মণ্ডল: পুলিশের ড্রেসের মতো ড্রেসটা ছিল। অনুব্রতর কাছে আনাগোনা ছিল না।
প্রশ্ন: বাইরে কারা ছিল সেসময়ে?
শিবঠাকুর মণ্ডল: বাইরে ছিল… সবাই ছিল, সমর্থকরা ছিল… আমি তখন টেনশনে সোজা চলে এসেছিলাম।
প্রশ্ন: আপনার যখন গলা চিপে ধরা হল, তখন আপনি কোনও আর্তনাদ করেননি?
শিবঠাকুর মণ্ডল: (বেশ খানিকটা চুপ) কী করব, আমাকে ছেড়ে দেন, এটাই বলেছিলাম। আর যা বলবেন, সেটাই মেনে নেব, এটাই বলেছিলাম। আপনি (সঞ্চালককে প্রশ্ন) যদি থাকতেন, আপনি কী করতেন? আপনি তো সেই একই কথা বলতেন না? আমাকে তো প্রাণে বাঁচতে হবে।
প্রশ্ন: তাহলে হঠাৎ করে গতকাল কেন অভিযোগ?
শিবঠাকুর মণ্ডল: পরিষ্কার কথা আমি প্রতিবাদমুখী ছেলে। আমাকে যে যা করুক না কেন, আমি প্রতিবাদ করবই…
প্রশ্ন উঠছে, কে ওই নিরাপত্তারক্ষী? ওয়াকিবহাল মহল বলছে, এই মামলায় ওই নিরাপত্তারক্ষীর ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। কারণ, সেদিন ঠিক কী হয়েছিল, তার সাক্ষী তিনি। কিন্তু, ওই নিরাপত্তারক্ষী সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে কোনও তথ্য দিতে পারছেন না শিবঠাকুর।