বিষ্ণুপুর: দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া বিষ্ণুপুর পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের (Shyamaprasad Mukherjee) পোষ্ট অফিস ও এল.আই.সিতে জমা থাকা চার কোটি টাকা উদ্ধার করেছেন তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকরা। ঘটনার তদন্ত চলছে। বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে আবেদন জানালেও আজ জামিন পেলেন না মূল অভিযুক্ত শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় সহ তিন জন।
আদালতের নির্দেশে আগামী আরও ১৪ দিন জেল হেফাজতেই কাটাতে হবে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় সহ তিনজনকে। বৃহস্পতিবার অভিযুক্তদের বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
সরকারী আইনজীবী ইন্দ্রনারায়ণ বিশ্বাস জানান, এখনও পর্যন্ত সব মিলিয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী অ্যাকাউন্ট থেকে চার কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। নতুন করে এলআইসি ও পোস্ট অফিসে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের অ্যাকাউন্ট থেকেও উদ্ধার হয়েছে কোটি টাকা। এখনও তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
টেন্ডার দুর্নীতি-কাণ্ডে কাণ্ডে গত ২২ অগস্ট গ্রেফতার হন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। দু’দফা পুলিশি হেফাজত শেষে গত ২৯ অগস্ট তাঁকে ১১ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালত। এর মধ্যেইওই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে দিলীপ গরাই ও শ্যামাপ্রসাদ ঘনিষ্ঠ রামশঙ্কর মহান্তী ওরফে খোকনকে পুলিশ গ্রেফতার করেন। আদালতের পূর্ব নির্ধারিত সূচী অনুযায়ী, এদিন মূল অভিযুক্ত শ্যামাপ্রসাদ সহ অন্য দুই সহযোগী দিলীপ গরাই ও রামশঙ্কর মহান্তী ওরফে খোকনকে ফের পুলিশ আদালতে তোলে।
ইতিমধ্যেই, তদন্তে নেমে শ্যামাপ্রসাদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে মোট ৬টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে পুলিশ। পাশাপাশি শ্যামাপ্রসাদের নামে একাধিক জমির হদিশও পেয়েছেন তদন্তকারীরা। একাধিক পেট্রোল পাম্পের মালিক হিসাবেও উঠে এসেছে প্রাক্তন মন্ত্রীর নাম। তদন্তকারীরা বলছেন, এই মামলার জট অত্যন্ত গভীরে। জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও তাঁর পরিবারের অ্যাকাউন্টের নথি খতিয়ে দেখে দেখা গিয়েছে, অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। আর্থিক লেনদেনের হিসাব পাওয়া যায়নি।’
আরও পড়ুন: Kolkata Water Logging: পচা জলে দিন কাটছে ৯৬-এর বৃদ্ধার, দুর্দশার কথা বলতে গিয়ে ডুকরে কাঁদলেন ছেলে
গত ৩৪ বছর ধরে বিষ্ণুপুর পুরসভায় চেয়ারম্যান ছিলেন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। সে সময় একাধিক প্রকল্পের টেন্ডার হয়েছিল। অভিযোগ, সেই প্রকল্পগুলিতে কোনও কাজই হয়নি। মহকুমা শাসকের তরফে তদন্ত শুরু হয়। পরে রিপোর্ট জমা দেয় চিফ ভিজিল্যান্স অফিসার। তদন্তে দুর্নীতির একাধিক তথ্য উঠে আসছে। দীর্ঘদিন তৃণমূল বিধায়ক ছিলেন তিনি। পরে শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। এই ঘটনা ঘিরে তৃণমূল ও বিজেপির চাপানউতোর শুরু হয়েছে। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চর্চা।
আরও পড়ুন: Bangladesh Helicopter: বাংলার বায়ুসেনা ঘাঁটির ৪০ কিলোমিটার দূরে চক্কর কাটল বাংলাদেশি কপ্টার