
বাঁকুড়া: স্বামী, পরিবার নিয়ে ঘর করছেন। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে ভোটও দিয়েছেন। এসআইআরের ফর্ম না আসার পর খোঁজ করতে গিয়েই মাথায় হাত পড়ল বাঁকুড়ার গৃহবধূর। জানতে পারলেন, ভোটার তালিকায় তাঁর নামে পাশে ডিলিটেড স্ট্যাম্প রয়েছে। এনুমারেশন ফর্ম না পেয়ে চিন্তায় পড়েছেন মল্লিকা রক্ষিত নামে ওই গৃহবধূ। ওই গৃহবধূর এনুমারেশন ফর্ম না আসা নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে।
মল্লিকা রক্ষিতের বাড়ি বাঁকুড়ার ছাতনা চিনাবাড়ি গ্রামে। ওই গ্রামের ১২০ নম্বর বুথের দীর্ঘদিনের ভোটার মল্লিকা রক্ষিত এবং পেশায় শিক্ষক তাঁর স্বামী নিতাই রক্ষিত। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় দু’জনেরই নাম রয়েছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও ওই দম্পতি ভোট দিয়েছেন। সম্প্রতি এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হলে স্বামী নিতাই রক্ষিত-সহ পরিবারের অন্য ৪ সদস্য ফর্ম পান। কিন্তু, ফর্ম পাননি মল্লিকা রক্ষিত।
স্থানীয় বিএলও-র কাছে এর কারণ জানতে চাইলে বিএলও জানান, ২০২৫ সালের ভোটার তালিকায় মল্লিকা রক্ষিতের নামের পাশে ডিলিটেড স্ট্যাম্প থাকায় তাঁর নামে ফর্ম ইস্যু হয়নি। এতেই চিন্তায় পড়েন ওই দম্পতি। নিতাই রক্ষিতের বক্তব্য, কোনও ব্যক্তির মৃত্যু হলে কিংবা স্থানান্তরিত হলে তবেই তাঁর নামের পাশে ডিলিটেড স্ট্যাম্প পড়ে। তাঁর জীবিত স্ত্রীর ক্ষেত্রে এমনটা কীভাবে হল, তা ভেবেই কুলকিনারা পাচ্ছেন না ওই শিক্ষক। এভাবে ভোটাধিকার হারানোয় প্রবল চিন্তায় আছেন মল্লিকা রক্ষিত নিজেও। তিনি বলেন, “২০০২ সালের ভোটার তালিকায় আমার নাম রয়েছে। চব্বিশেও ভোট দিয়েছি। এখন জানতে পারি, আমার নাম ভোটার তালিকায় ডিলিটেড দেখাচ্ছে। এটা ভীষণ চিন্তার। এখন শুনছি, এসআইআর ফর্ম না হলে তাঁকে ভারতীয় ধরা হবে কি না, তা দেখা হচ্ছে।” এই ঘটনার জন্য পূর্বতন বিএলও-কে দায়ী করলেন তিনি।
ছাতনা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা ব্লক তৃণমূল নেতা বঙ্কিম মিশ্র এই ঘটনায় নির্বাচন কমিশনকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, রাজ্য সরকারি কর্মীরা বিএলও হিসাবে দায়িত্ব নিয়ে অত্যন্ত সচেতনভাবে কাজ করেন। তাই তাঁদের ভুলে নয়, নির্বাচন কমিশনের ভুলেই এমনটা হয়েছে। বিজেপির পাল্টা দাবি, নির্বাচন কমিশন এর জন্য দায়ী নয়। বিএলও-র ভুলের কারণেই এমনটা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা স্থানীয় ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হবে বলে জানান বিজেপি নেতা স্বপন মুখোপাধ্যায়।