বাঁকুড়া: বাবা চান পুত্র সন্তান। কিন্তু পরপর দুই কন্যা সন্তান হয়েছে। তাই মাত্র ১৬ দিনের কন্যাসন্তানকে খুন করে ধানজমিতে পুঁতে রাখার অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে। কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিন ধানজমি থেকে উদ্ধার হল মাত্র ষোল দিন বয়সী সেই কন্যাসন্তানের মৃতদেহ। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়া (Bankura) জেলার ছাতনা থানা এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, পর পর দুই কন্যা সন্তানের জন্ম হওয়ায় খুশি ছিল আশ্বিনাথ সোরেন। এদিকে ছোট মেয়েকে হঠাৎ খুঁজে না পেয়ে সন্দেহ হয় মায়ের। এর পর তাঁর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছিল ছাতনা থানার পুলিশ। তার পর ধানজমি থেকে পাওয়া যায় শিশুর মরদেহ। অভিযোগ, তার বাবাই তাকে খুন করে দেহ লোপাটের জন্য লুকিয়ে রাখে ধানজমিতে। এদিন মৃতদেহ উদ্ধারের পাশাপাশি আশ্বিনাথ সোরেন নামে যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, তুলসা গ্রামের বাসিন্দা আশ্বিনাথ সোরেন ও সোহাগী সোরেনের কন্যাসন্তানের জন্ম হয় মাত্র ১৬ দিন আগে। তাদের আরও একটি মেয়ে রয়েছে। আশ্বিনাথ চেয়েছিল তাদের ছেলে হবে এবার। কিন্তু এমনটা না হওয়ায় রাগে ফুঁসছিল সে।
এর পর গত সোমবার বাড়িতে সদ্যোজাত সন্তানকে রেখে যখন মা সোহাগী বাড়ির কাজে ব্যস্ত ছিলেন সে সময় আচমকাই ১৬ দিনের ওই কন্যা সন্তান নিখোঁজ হয়ে যায়। কোথাও খুঁজে পায় যায়নি তাকে। কান্নাকাটি সোহাগী দেবী ছাতনা থানায় হাজির হন কন্যাসন্তানের নিখোঁজ ডায়েরি করতে। ঘটনার তদন্তে নেমে প্রথম থেকেই পুলিশের সন্দেহ হয় নিখোঁজ হওয়া কন্যাসন্তানের বাবা আশ্বিনাথ সোরেনকে।
এর পর মঙ্গলবার ছাতনা থানার পুলিশ আশ্বিনাথ সোরেনকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে প্রথমে কিছু বলতে না চাইলেও পরে ভেঙে পড়ে আশ্বিনাথ। পুলিশ সূত্রে খবর, সে স্বীকার করে পরপর দুটি কন্যাসন্তান হওয়ায় না-খুশ ছিল। তাই দ্বিতীয় কন্যাসন্তানকে প্রথমে কুয়োতে ফেলে দেয়। তার পরে প্রমাণ লোপাটের জন্য মৃতদেহটি প্লাস্টিকে মুড়ে গ্রাম থেকে ২ কিলোমিটার দূরে নিয়ে গিয়ে একটা ধানজমিতে পুঁতে ফেলে। আশ্বিনাথের এই স্বীকারোক্তিতে কার্যত চমকে যান পুলিশ অফিসাররা। তাকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার করা হয় সেই মরদেহ। এর পর ছাতনা থানার পুলিশ বাবাকে গ্রেফতার করে।
উল্লেখ্য, এদিনই শহর কলকাতা থেকে উঠে এসেছে আরেক চাঞ্চল্যকর খবর। নিজের একদিনের কন্যাসন্তানকে হাসপাতালেই বালিশ চাপা দিয়ে মেরে দেয় মা। কলকাতার একবালপুরের এই ঘটনায় আটক করা হয়েছে ওই মাকে। এখন হাসপাতালেই পুলিশি নজরদারিতে আছে সে।