
বাঁকুড়া: বৃষ্টি চলছে পুরোদমে। সেই যে জুনের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয়েছে, বিরাম নেই এখনও। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় পশ্চিমের জেলাগুলিতে রয়েছে ভারী বর্ষণের সতর্কতা। চলতি মাসের লাগাতার বৃষ্টিতে গোটা জেলাজুড়েই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রচুর কাঁচা বাড়ি। রেবারে আবেদন জানিয়েও মেলেনি ত্রাণের ত্রিপল।
সামান্য ত্রাণের ত্রিপলের জন্য বারংবার ক্ষতিগ্রস্তরা ছুটে গিয়েছেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতে। পঞ্চায়েতের কর্মকর্তাদের কথামতো লিখিত আবেদনও করেছেন। কিন্তু ১৫ দিন কেটে গেলেও এখনও মেলেনি ত্রাণের ত্রিপল। তাতেই ক্ষোভ বেড়েছে গোটা গ্রামে। ঘেরাও হল পঞ্চায়েত। ক্ষোভে ফেটে পড়ল এলাকার বাসিন্দারা। ঘটনা বাঁকুড়ার সিমলাপাল ব্লকের বিক্রমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের।
জুনের মাঝামাঝি টানা ৭ দিনের বৃষ্টিতে গোটা জেলাতেই ব্য়াপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাজারেরও বেশি বাড়ি। শুধুমাত্র সিমলাপাল ব্লকের বিক্রমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও শতাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারও বাড়ির মাটির দেওয়াল ধসে পড়ে তো কারও আবার মাথার চালা ভেঙে যায়। অবস্থায় এমনই দাঁড়ায় অনেককেই নিজের বাড়ি ছেড়ে বাধ্য হয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয়। বর্তমানে বৃষ্টির দাপট কমলেও দুর্ভোগ কমেনি। গ্রামের লোকজন বলছেন, তাঁদের ত্রাণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও এখনও পর্যন্ত ত্রাণের ত্রিপলটুকু দেওয়া হয়নি।
বিক্ষুব্ধরা বলছেন, ত্রিপলের দাবিতে তাঁরা বারবার ছুটে গেছেন বিক্রমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে। পঞ্চায়েতের কর্মকর্তাদের কথামতো লিখিত আবেদনও করেন। অভিযোগ, ত্রিপল তো জোটেইনি। উল্টে মিলেছে পঞ্চায়েতের কর্মকর্তাদের দুর্ব্যবহার। তারই প্রতিবাদে এদিন বিক্রমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন এলাকার বাসিন্দারা। দ্রুত ত্রাণের ত্রিপল না দেওয়া হলে আরও বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
বিক্রমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ফুলমণি সোরেনের সাফাই, ১০০ জনেরও বেশি ত্রাণের ত্রিপলের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু সমীক্ষা করে বিডিও অফিস থেকে পাঠানো হয়েছিল মাত্র ২৫টি ত্রিপল। স্বাভাবিকভাবেই সকলকে ত্রিপল দেওয়া যায়নি। তবে তাঁর আশ্বাস দ্রুত ফের সমীক্ষা করে আসল ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রিপল দেওয়ার জন্য বিডিও অফিসে আবেদন জানানো হবে। ক্ষোভে ফুঁসছে বিজেপি। সিমলাপাল পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপির সদস্য সৌভিক পাত্র কটাক্ষের সুরেই বলছেন, রাজ্যে খেলায় মেলায় কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। অথচ সাধারণ ক্ষতিগ্রস্তরা ত্রিপল পাচ্ছেন না। এর থেকে লজ্জার আর কিছু হতে পারে না। তিনি অবিলম্বে পঞ্চায়েত প্রধানের পদত্যাগের দাবি তুলছেন।