
বাঁকুড়া: কাজের চাপে দিকে দিকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বিএলও। কেউ ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে, কেউ আবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। একের পর এক বিএলও-র মৃত্যুর খবরেও জুড়ে গিয়েছে এসআইআর তত্ত্ব। কয়েকদিন আগে ক্যানিংয়ে দেখা গিয়েছিল এক ব্যতিক্রমী ছবি। দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে জখম হয়েছিলেন বিএলও। কিন্তু একটু সুস্থ হতেই টোটোয় চেপে তিনি নেমে পড়েছিলেন এসআইআরের কাজে। এবার শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করেও পুরোদমে এসআইআরের কাজ করতে দেখা গেল বাঁকুড়ার এক বিএলও-কে। বিশেষভাবে সক্ষম ওই আইসিডিএস কর্মী কার্যত এক পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরেলেন। সেরে ফেললেন ৯৯ শতাংশ কাজ।
আইসিডিএস কর্মী শোভানারা বায়েন। বাড়ি বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর ব্লকের বেলশুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের জামশুলি গ্রামে। জন্ম থেকেই তাঁর একটি পা হাঁটুর নীচ থেকে নেই। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধকতা দমাতে পারেনি তাঁকে। নিজের জেদে লড়ছেন জীবন যুদ্ধে। স্কুলের পড়াশোনার পাঠ শেষ করে স্নাতকোত্তর বিএড-ও করে ফেলেছেন। গ্রামেই এখন তিনি আইসিডিএস কর্মী। সম্প্রতি তাঁর কাঁধে এসে পড়েছে এসআইআর-এর দায়িত্ব। যদিও শুরুতে নিজের শারীরিক সমস্যার কথা জানিয়ে কাজ থেকে অব্য়াহতিও চান তিনি। যদিও শেষ পর্যন্ত কাজ নামতে হয়। আর তারপরেই যেন করে ফেললেন রেকর্ড।
শুরুতেই নিজের গ্রাম জামশুলির ২৩৮ নম্বর বুথের ১০৩৯ জন ভোটারের বাড়ি বাড়ি ঘুরে এসআইআরের ফর্ম বিতরণ করেন তিনি। মানুষের কোনওরকম সমস্যা হলে তাঁদের সঙ্গে কথা বলা, তারপর আবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে সব ফর্ম সংগ্রহ করা, সব কাজ ওই এক পায়ে। কাজ শেষে বাড়ি ফিরে নির্দিষ্ট পোর্টালে আপলোডের কাজ করেন। কখনও কখনও আবার তা একেবারে গভীর রাত পর্যন্ত। এভাবেই লাগাতার কাজ শেষে দেখা যায় ইতিমধ্যেই এলাকার ৯৯ শতাংশ ভোটারের কাছ থেকে গণনা ফর্ম সংগ্রহ করে তা কমিশনের নির্দিষ্ট পোর্টালে আপলোড করে ফেলেছেন শোভানারা। তাঁর এই উদ্যোগে স্বভাবতই খুশি এলাকার স্থানীয় ভোটাররাও।