বাঁকুড়া: প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ। বাঁকুড়ার বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের ছেলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হল থানায়। আর অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার স্বামী। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ।
মৃতের নাম মৌসুমী দে। গত ২১ মার্চ বাঁকুড়ার থানাগোড়া এলাকায় থাকা সুভাষ সরকারের নার্সিংহোম হিসাবে পরিচিত একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হন মৌসুমী। এরপর সিজার করে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসার গাফিলতির জেরেই অস্ত্রপচারের পর মৌসুমীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছিল। পরবর্তীতে তাঁকে ওই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে দুর্গাপুরের অপর একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু এরপরও শেষ রক্ষা হয়নি।
গত ২৫ মার্চ দুর্গাপুরের বেসরকারি নার্সিংহোমে মৃত্যু হয় মহিলার। এরপরই পরিবার অভিযোগ তোলেন, চিকিৎসায় গাফিলাতির কারণেই মৌসুমীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পরের দিনই মৃতার স্বামী বাঁকুড়ার নার্সিংহোমের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এলাকার স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বও এই ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হন। চিকিৎসায় গাফিলাতির অভিযোগ খতিয়ে দেখা শুরু করে স্বাস্থ্য দফতর।
সম্প্রতি, বাঁকুড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এ বিষয়ে একটি রিপোর্ট পাঠানো হয় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে। এরপরই গত ২৪ এপ্রিল মৃতার স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ সুভাষ সরকারের ছেলে চিকিৎসক সোমরাজ সরকারের নামে এফআইআর গ্রহণ করে। মৃতার স্বামীর দাবি, চিকিৎসক সোমরাজ সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হয়। শুধু তাই নয়, নার্সিংহোমের লাইসেন্স বাতিল করার দাবিও তুলেছেন তারা। মৃতার স্বামী তন্ময় দে বলেন, “আমার স্ত্রীর মৃত্যু কারণ হিসাবে আমি ওদের দায়ী করছি। প্রথমে পুলিশ মামলা নিতে চায়নি। এর জন্য আমরা স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছি। তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। আমি দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি করছি।”
যদিও এই ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসক সোমরাজ সরকারের বক্তব্য মেলেনি। প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি সুভাষ সরকারও। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি অভিযোগের কথা জানা নেই। স্বাস্থ্য দফতর যে শোকজ করেছিল তার জবাব দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ করা হবে। এ প্রসঙ্গে অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “মেয়েটি মারা গিয়েছিলেন। আন্দোলন হয়েছিল। প্রতিবাদ হয়েছিল। এটা নিয়ে কথা হয়েছিল। তদন্তে জানা গিয়েছে সুভাষ সরকারের হাসপাতালে অব্যবস্থা হয়েছে। তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।”