রামপুরহাট : ‘আমি নির্দোষ, নির্দোষ।’ এ কথা বলতে বলতেই আদালতে ঢুকলেন বগটুই-গণহত্যা মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত আনারুল হোসেন। বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা হিসেবে পরিচিত আনারুল গ্রেফতার হওয়ার পরও দাবি করছেন, এই ঘটনায় তাঁর কোনও হাত নেই। শুক্রবার তাঁকে রামপুরহাট মহাকুমা আদালতে তোলা হয়েছিল। এ দিন তাঁর কেস ডায়েরি জমা নিয়েছে আদালত। আনারুলকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বগটুইতে গিয়ে ডিজিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন যাতে আনারুলকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাঁর বাড়ি ঘিরে ফেলে পুলিশ। কিন্তু অধরা আনারুল। ঘণ্টা দুয়েক পর তারাপীঠে থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রামপুরহাট আদালতের বিচারক সৌভিক দে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন এ দিন।
সোমবার রাতে যাঁদের ঘর পুড়ে গিয়েছে, প্রথম থেকেই তাঁরা দাবি করে আসছিলেন, আনারুলের নির্দেশেই আগুন লাগানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, আনারুলকে আগে থেকে বিপদের কথা জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেননি। এ দিন বিচারক জানান, পুলিশ আনারুল হোসেনকে মূল মাস্টার মাইন্ড হিসেবে উল্লেখ করেছে। বাকি অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসা আনারুলের নাম পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিচারক। তাই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই বাকিদের নাম পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন তিনি।
সরকার পক্ষের আইনজীবী জানান, ঘটনার পুনর্নিমাণের জন্য আনারুলের পুলিশি হেফাজতের দাবি জানানো হয়। তাছাড়া, আনারুলকে জেরা করলে জানা যাবে এ ঘটনার পিছনে আর কে কে আছে? তদন্তের স্বার্থেই এ দিন আদলত হেফাজতের নির্দেশ দেন বলে জানান সরকার পক্ষের আইনজীবী। অন্যদিকে আনারুলের কৌঁসুলি অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, কেন মুখ্যমন্ত্রী রামপুরহাটে গিয়ে নির্দেশ দেওয়ার পর আনারুলকে গ্রেফতার করা হল? ধৃতদের কাছ থেকে ২৩ তারিখেই নাম মিলেছিল, সে দিনই কেন আনারুলকে গ্রেফতার করা হয়নি? রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রামপুরহাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডিজিকে বলেছিলেন, ‘আনারুল আমাদের ব্লক প্রেসিডেন্ট। তাঁর কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল ওরা। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই আনারুলকে গ্রেফতার করা হবে।’ কেন সময় মতো পুলিশ পাঠাননি আনারুল, সেই প্রশ্নও তুলেছিলেন মমতা। তিনি মনে করেন, সময় মতো পুলিশ পাঠালে হয়ত এই ঘটনা ঘটত না। মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, যেখান থেকে সম্ভব তুলে এনে গ্রেফতার করতে হবে আনারুলকে। সেই মতো পুলিশ চিরুনি তল্লাশি চালিয়ে তড়িঘড়ি গ্রেফতার করা হয় তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লকসভাপতিকে।
আরও পড়ুন : Anubrata on CBI order: বগটুই-কান্ডে সিবিআই তদন্ত, মুখ খুললেন অনুব্রত