আসানসোল: বগটুই-হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে চর্চার কেন্দ্রে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। ওই ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই আঙুল উঠছিল বীরভূমের জেলা সভাপতির দিকে। আর এবার বগটুইতে মৃত নাজেমা বিবির স্বামী শেখলাল যে অভিযোগ সামনে আনছেন, তা কার্যত বিস্ফোরক। স্ত্রীর মৃত্যুর পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সরাসরি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ এনেছেন শেখলাল শেখ। শুধু তাই নয়, তিনি দাবি করেছেন অনুব্রত মণ্ডল চাইলে সে দিনের ওই গণহত্যা রুখতে পারতেন। কিন্তু তিনি সেই চেষ্টা করেননি। বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে আসার পরই থেকেই কেউ কেউ বলছেন, তবে কি এবার চাপ বাড়ছে দাপুটে তৃণমূল নেতার? এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কোনও জবাবই পাওয়া গেল না অনুব্রতর মুখ থেকে। তবে গরু পাচার-কাণ্ড নিয়ে জবাব দিতে গিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন তিনি।
আগামী ১২ এপ্রিল আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচন। তার আগে ওই কেন্দ্রে প্রচারে এসেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। মঙ্গলবার আসানসোলের এক কর্মিসভায় যোগ দেন তিনি। আসানসোলের রবীন্দ্রভবনে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন তিনি। সেই বৈঠকে ছিলেন বিতর্কিত পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীও।
‘হাইকোর্টের রক্ষাকবচ চলে গেল, কী বলবেন?’ এই প্রশ্ন করতেই এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেন অনুব্রত। বললেন, ‘এই প্রশ্ন ছাড়া অন্য কিছু আছে?’ তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ‘রক্ষাকবচ তো উঠে গেল। সিবিআই তো এবার গ্রেফতার করবে।’ এ কথা শুনে কিছুটা অসন্তুষ্ট হন অনুব্রত। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বলেন, ‘সিবিআইয়ের কাছে বসেছিলেন? ওনারা আপনাকে তাই বলেছে?’ তবে রামপুরহাট নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কোনও উত্তর দেননি তিনি। স্বজনহারা পরিবার তাঁর দিকে আঙুল তুলছে। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলেও অনুব্রতর মুখ দেখে মনে হয়, শুনতেই পাননি তিনি।
আসানসোলে অনুব্রত মণ্ডলকে প্রচার করতে দেওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন উপ নির্বাচনের বিজেপির প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল। সে কথা শুনেই অনুব্রত বলেন, ‘আসানসোলটাকে কি উনি কিনে নিয়েছেন? রাস্তা, ঘাট, বাড়ি কিনে রেখেছেন নাকি? কবে দলিল করলেন? ওনাকেই প্রশ্ন করুন আপনারা।’ সেই সঙ্গে শত্রুঘ্ন সিনহার জয় যে নিশ্চিত এ কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। অনুব্রত বলেন, ‘এবার উন্নয়নের ভোট হলে। আমি চ্যালেঞ্জ করলাম তৃণমূল জিতবে। জেনে রাখানু শত্রুঘ্ন সিনহা না জিতলে আসানসোল থাকবে না।’ তাহলে কি খেলা হবে? এ কথা শুনেই কেষ্ট মণ্ডলের জবাব, ‘১০০ বার খেলা হবে।’
গরু পাচারকাণ্ড মামলায় চাপ বেড়েছে অনুব্রত মণ্ডলের। আদালতের রক্ষাকবচ পেলেন না বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। অর্থাৎ সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকলে এবার অনুব্রতকে যেতেই হবে। সিঙ্গল বেঞ্চে রক্ষাকবচ চেয়ে মামলা করেছিলেন তিনি। গত ১১ মার্চ বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার সিঙ্গল বেঞ্চ অনুব্রতর আর্জি খারিজ করে দেয়। মঙ্গলবার ডিভিশন বেঞ্চও সেই আর্জি খারিজ করে দেয়।
আরও পড়ুন : Basanti Bomb Blast: ঝলসে গিয়েছিল হাত-মুখ, বোমা বিস্ফোরণের ৭ ঘণ্টা পর মৃত্যু বাসন্তীর সেই যুবকের