Anubrata Mondal: ‘রবীন্দ্রনাথও আত্মহত্যা করতেন’, বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের ‘লাগামহীন নেশায়’ তোপ কেষ্টর!
Visva Bharati University: বোলপুরের ‘শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজ’-এর অনুমতি নিয়ে আপত্তি তুলে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্যকে চিঠি পাঠিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বীরভূম: তাঁর অনেকদিনের ‘সাধ’ ছিল বিশ্বভারতীর মতো কলেজ হবে। সেই ‘সাধের কথা’ দিদিকে জানতে দেরি করেননি তিনি। ‘স্নেহধন্য কেষ্টর’ আবদার ফেলে দিতে পারেননি খোদ ‘দিদি’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুমতি দিয়েছিলেন বোলপুরে একটি মেডিক্যাল কলেজ তৈরিতে। সেই মতো কাজও চলছিল। তবে, সেই কলেজ বেআইনি বলে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে সে প্রসঙ্গে মন্তব্য় করতে গিয়ে সরাসরি বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদেরই নিশানা করলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)।
এদিন, বোলপুর গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে পশ্চিমবঙ্গের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের সঙ্গে একটি সম্মেলনে সামিল হন অনুব্রত। সেখানেই তিনি বলেন, “আমি দিদির কাছে আবদার করেছিলাম বিশ্বভারতীর মতো একটা মেডিক্যাল কলেজ আমার চাই। সেই কলেজে ছেলেমেয়েরা যাতে পড়তে পারে। আমার মেয়েকে বিশ্বভারতীতে পড়ানোর খুব ইচ্ছে ছিল। কিন্তু, পড়ানো হয়নি।” তারপরেই খেদ প্রকাশ করে তৃণমূল নেতা বলেন, “অবশ্য এখন বিশ্বভারতীর যা অবস্থা! ওখানকার ছেলেমেয়েরা যেভাবে নেশা করছে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বেঁচে থাকলে আত্মহত্যা করতেন।” কার্যত, রবিভূমে রাজনীতির অবসান হয়নি। বারবার বিভিন্ন সময়ে বিতর্কে নাম জড়িয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের।
মঙ্গলবার নিজের ‘স্বপ্নের’ মেডিক্যাল কলেজ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সেই বিরোধেই ফের সুর চড়ান অনুব্রত। তিনি আরও বলেন, “বোলপুরের ওই মেডিক্যাল কলেজটা আমার স্বপ্ন। দিদিকে বলেছিলাম। দিদি অনুমোদন দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী যখন বলেছেন তখন কলেজ হবেই। কে কী বলল তাতে কিছু যায় আসে না।”
উল্লেখ্য, বোলপুরে গড়ে উঠতে চলেছে একটি প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ। সেই কলেজকে ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। বোলপুরের ‘শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজ’-এর অনুমতি নিয়ে আপত্তি তুলে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্যকে চিঠি পাঠিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই চিঠিতেই বিজেপি নেতা শুভেন্দু দাবি করেছেন, ‘স্বাধীন’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা ওই মেডিক্যাল কলেজ বানালেও তার নেপথ্যে কার্যত হাত রয়েছে অনুব্রক মণ্ডলের। চিঠিতে অনুব্রতকে ‘অসত্’ বলেও উল্লেখ করেছেন অধিকারী পুত্র।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) আরও অভিযোগ করে জানিয়েছেন, বীরভূম জেলা সভাপতি গো-পাচার থেকে কয়লা কেলেঙ্কারিতে যুক্ত এমন অভিযোগও রয়েছে। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থা সে বিষয়ে তদন্ত করছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের প্রতিনিধিরা প্রস্তাবিত ওই মেডিক্যাল কলেজ পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু, ,সেই কলেজ তৈরিতে যেন অনুমোদন না দেওয়া হয় চিঠিতে তেমনই আবেদন করেছেন অধিকারী পুত্র। পাশাপাশি, তিনি জানিয়েছেন, যে জমিতে মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হতে চলেছে সেই জমির মালিকানা নিয়েই সংশয় রয়েছে। বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে তা অনুব্রতর প্রভাবেই বলে অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু। যদিও সেই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে তৃণমূল। মঙ্গলবার অনুব্রত সে প্রসঙ্গে যদিও বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি, কিন্তু স্পষ্ট জানিয়ে দেন বোলপুরে মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হবেই। তাঁর এই মন্তব্যেই ফের কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের সম্ভাবনা দেখছে রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন: Kaliachak: ফের ‘কুরুক্ষেত্র’ কালিয়াচক, আচমকা বোমা ফেটে জখম ২ শিশু!
আরও পড়ুন: Bhawanipur Bypoll Results 2021: যো জিতা ওহী সিকন্দর : নওশাদ সিদ্দিকি