
ইলামবাজার: “বাংলার মেধা পুরো পৃথিবী চালায়। বাংলা ছাড়া চলে না।” মমতার দাবি, বাংলায় বুদ্ধি আছে, মেধা আছে, সে কারণেই বাংলা ভাষার উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। তা কোনওভাবেই মানা যাবে না। বীরভূমের মাটিতে দাঁড়িয়ে ফের একবার হুঙ্কার দিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। ফের একবার শান দিলেন বাঙালি অস্মিতায়।
এদিন ইলামবাজারে ১ হাজার কোটি টাকারও বেশি প্রকল্পের উদ্বোধন-শিলান্যাস করেন মমতা। প্রশাসনিক সভা থেকেই বাংলা ভাষার উপর আক্রমণ, বাংলার পরিযয়াী শ্রমিকদের উপর আক্রমণের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন মমতা। সাফ বললেন, “ভাষার উপর অত্যাচার হল মানব না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নেতাজির ভাষাতে আক্রমণ মানব না। আমরা জীবন দিতে রাজি আছি! কিন্তু ভাষার উপর অত্যাচার, মনীষীদের উপর অত্যাচার মানব না।”
সোমবারও বীরভূমে পরপর দুটি সভা করতে দেখা গিয়েছিল মমতাকে। স্বাধীনতা আন্দোলনে বাঙালিদের ভূমিকা থেকে দেশ গঠনে বাংলার ভূমিকার কথা বারবার মনে করান মমতা। এদিনও ফের বলেন, “বাংলার মেধা পুরো পৃথিবী চালায়। বাংলা ছাড়া চলে না।” সোমবার বারবার রবি ঠাকুর থেকে নজরুলের ভাবধারা, দর্শনের কথা শোনা গিয়েছিল মমতার মুখে। উঠে আসে স্বামীজি থেকে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কথাও। বলেন, “বাংলার মাটি, এ মাটি সোনার চেয়েও খাঁটি, এই মাটিতে জন্ম নিল রবীন্দ্র-নজরুল, একইবৃন্তে দু’টো কুসুম আলোকময় সে ফুল। এই মাটিতে স্বামীজির অবদান ভুলে গিয়েছেন? রামকৃষ্ণের অবদান ভুলে গিয়েছেন?” এরপর সুর আরও চড়িয়ে, বাঙালি অস্মিতার ধার আরও বাড়িয়ে বলেছিলেন, “স্বাধীনতা আন্দোলনে পথ দেখিয়েছিল বাংলা। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের আজাদ হিন্দ বাহিনী, শহিদ দ্বীপ, স্বরাজ দ্বীপ, জয় হিন্দ স্লোগান, প্ল্যানিং কমিশন, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি! এত তাড়াতাড়ি কী করে ভুলে গেলেন? কী করে ভুলে গেলেন লাল-বাল-পালের কথা? কী করে ভুলে গেলেন রাজা রামমোহন রায়ের কথা? কী করে ভুলে গেলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কথা? কী করে ভুলে গেলেন মাতঙ্গিনী হাজরার কথা? কী করে ভুলে গেলেন দেশবন্ধুর কথা? কী করে ভুলে গলেন নব জাগরণের কথা? বঙ্গভঙ্গের সময় কবিগুরু বাংলায় বেরলেন। হিন্দু-মুসলমান সবাইকে রাখি পরিয়ে দিয়ে বলেছিলেন বাংলার মাটি বাংলার জল বাংলার বায়ু বাংলার ফল পুণ্য হউক, পুণ্য হউক হে ভগবান। ভুলে গেলেন?”