বীরভূম: একদিনে একবার নয়, দু’বার। বোমা ফেটে কেঁপেছে বীরভূম। সকালে উড়েছে নাবালকের কব্জি। বিকেলে আহত চারজন। পরে মৃত্যু। এরপর বৃহস্পতিবার ফের বোমা উদ্ধার। আর দু’দিন পর যখন বীরভূমে ভোট তার আগে এভাবে বারবার বোমা উদ্ধার রীতিমত কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে জেলা প্রশাসনকে। কীভাবে মিলছে এত বোমা? কারাই বা রাখছে? এই সকল প্রশ্ন কিন্তু উঠছেই।
বুধবার সদাইপুর গ্রামে বোমা ফেটে চার শিশু গুরুতর জখম হয়। এক শিশুর মৃত্যুও হয় বলে খবর। এরপর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। লাগাতার চলে তল্লাশি অভিযান। এরপর সেই তল্লাশির পরিপ্রেক্ষিতে মারগ্রাম থানার অন্তর্গত খারপুকুরের কাছে দু’ড্রাম বোমা উদ্ধার হয়। সূত্রের খবর, ওই দু’টি গ্রামে ৪০ পিস তাজা বোমা ছিল বলে জানা গিয়েছে। বোমাগুলিকে নিষ্কৃয় করার পক্রিয়া চালাচ্ছে পুলিশ।
প্রথম ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার। ওইদিন সকালে কাগজ কুড়াতে যায় এক নাবালক। ভোরের আলো ফোটার আগেই সে ওই এলাকায় গিয়ে কাগজ কোড়াতে থাকে। কিন্তু কাগজের স্তুপে হাত দিতেই ঘটে গেল অঘটন। বিস্ফোরণে উড়ে গেল বাচ্চাটির হাতের কব্জি। এরপর তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন থাকে সে। সেদিন থেকেই প্রশ্ন ওঠে ওই এলাকার জঞ্জালের স্তুপে কে বা কারা বোমা রেখেছে?
এরপর বেলা গড়াতেই ফের অন্য আর এক জায়গা থেকে উঠে আসে বোমা বিস্ফোরণের খবর। ওইদিন বিকেল নাগাদ বল ভেবে খেলতে গিয়ে বোমা ফেটে গুরুতর জখম হয় চার শিশু। তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। সদাইপুর থানার কুইঠা গ্রামের মণির শেখ নামে এক ব্যক্তির বাড়ির পিছনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিকেলে এলাকারই কয়েকজন শিশু মণিরের বাড়ির পিছনের ফাঁকা মাঠে খেলতে যায়। সেই সময় বল ভেবে বোমাগুলিকে স্পর্শ করে তারা। তখনই হঠাৎ ফেটে যায় সেগুলি। ঘটনায় গুরুতর আহত হয় নাজমা, রুজিয়া, রহিমা আতিয়া নামে ওই চার শিশু। এদের মধ্যে একজনের প্রাণ যায়। এই ঘটনার পরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। তারপর তল্লাশি চালাতেই উদ্ধার হয় ড্রাম ভর্তি বোমা।
বস্তুত, সামনেই বীরভূমের পুরভোট। তার আগে আবর্জনার স্তুপে বোমা । সেই বোমা ফেটে জখম। সেই কারণে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। তবে গোটা ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এর আগেও বীরভূমের ইতিহাসে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। কখনও মাঠে খেলতে গিয়ে, কখনও বা বুঝতে না পেরে বোমা ফেটে কারোর হাত উড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বীরভূম নির্বাচনের আগে এই ধরনের ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে। বারবার বোমা উদ্ধারও করেছে বীরভূম পুলিশ। চলেছে লাগাতার তল্লাশি অভিযান। বোমা নিষ্কৃয় করেছে বোমাস্কোয়াড। কিন্তু এত বোমা আসছে কোথা থেকে? সেই প্রশ্নের উত্তর কিন্তু মিলছে না।
আরও পড়ুন: Child Harmed by Sharp weapon: ‘খবরটা শুনে বাড়িতে এসেই দেখি শুধু রক্ত আর রক্ত, ছেলেটাকে আমার ওরা…’