বগটুই: বগটুই হত্যাকাণ্ডে মৃত আরও এক। রবিবার সকালে মৃত্যু হয় আতাহারা বিবি নামে এক মহিলার। ২১ মার্চ রামপুরহাটের বগটুইয়ে গণহত্যার ঘটনা ঘটে। পরপর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে। এই নিয়ে গণহত্যা কাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১০।
ঘটনার বিষয়ে এই হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী মিহিলাল বলেন, “প্রথম দিন থেকেই ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে। সেই সময় অবস্থার উন্নতি হয়। তাই বাড়ি নিয়ে চলে আসি। এরপর ফের অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর আজ সকাল নাগাদ মৃত্যু হয়।”
বস্তুত, ২১ মার্চ বীরভূমের রামপুরহাটের ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে রামপুরহাট বগটুই মোড়ে বোমা মেরে খুন করা হয় বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান ভাদু শেখকে। সেই খুনের বদলা নিতে বগটুই গ্রামে ১০ টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরদিন সকালে আটজনের পোড়া দেহ উদ্ধার করা হয়। দিন কয়েক পর রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আরও এক মহিলার মৃত্যু হয়। দীর্ঘ একমাস মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করার পর আজ সকালে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হল আতাহারা বিবির। ফলে হত্যাকাণ্ডে এক নাবালিকা, এক পুরুষ এবং আট মহিলার মৃত্যু হল।
বগটুই হত্যাকাণ্ডে জল গড়িয়েছে সিবিআই পর্যন্ত। হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার নেওয়ার পর রামপুরহাট হত্যাকাণ্ড নিয়ে তৎপর হয় তারা। বগটুইয়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির জন্য আর্থিক সাহায্য ও চাকরির কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, মৃতদের পরিবার পিছু ৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। যে বাড়িগুলি পুড়ে গিয়েছে, সেগুলি আবার তৈরি করার জন্য ১ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। যদি প্রয়োজন পড়ে, তাহলে ২ লাখ পর্যন্ত দেওয়া হবে। এছাড়াও যাঁদের দেহ আগুনে ৬০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে, তাঁদের ১ লাখ টাকা করে এবং যে শিশুরা জখম হয়েছে, তাদের ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এছাড়া চাকরির প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারপিছু একজন করে চাকরি দেওয়া হবে। নিজের মুখ্যমন্ত্রী কোটা থেকে ১০ জনকে চাকরি দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন। প্রাথমিকভাবে মাসে ১০ হাজার টাকার বেতনে কাজ দেওয়া হবে। এক বছর পর তা স্থায়ী হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
যদিও, বগটুইয়ে গিয়ে এইভাবে চাকরি ও আর্থিক ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজ্য সরকার ঘটনার সাক্ষীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন এক মামলাকারী। তাঁর বক্তব্য, এই ক্ষতিপূরণ দেওয়া প্রক্রিয়া নিয়ম বিরুদ্ধভাবে করা হয়েছে। মামলাকারীর সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই রাজ্য সরকারের কাছে হলফনামা চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: Bagtui Massacre: মমতা দিলেও হাতে পাননি চেক, বগটুই কাণ্ডে মৃত বৌদির ক্ষতিপূরণ নিয়ে ক্ষোভ কাজলের