Birbhum: করোনা কেড়েছে পড়াশোনা, স্কুলছুট ভাই বেচছে পেয়ারা, বোন শাড়ি!
Bolpur: লকডাউনে অনলাইনে পড়াশোনা শুরু হয়। তার জন্য আবার আলাদা স্মার্টফোন কেনা এই পরিবারের কাছে সাধ্যের বাইরে। তাই নবম শ্রেণিতে স্কুল ছেড়েছে শিল্পী।
বীরভূম: বিভিন্ন সমীক্ষাতেই প্রকাশ করোনা (Corona) পরিস্থিতিতে স্কুলছুটের সংখ্যা বেড়েছে। এ রাজ্যের অবস্থাও তেমনই। এখন স্কুলছুট পড়ুয়াদের ঘরে ফেরাতে নানা জায়গায় শুরু হয়েছে দুয়ারে শিক্ষক উদ্যোগ। এই প্রেক্ষিতে এক করুণ চিত্র দেখা গেল বীরভূমের (Birbhum) বোলপুরে (Bolpur)। আর্থিক অনটনের কারণে পড়াশোনা বন্ধ হয়েছে ভাইবোনের। সংসারের হাল ধরতে ভাই বিক্রি করছে পেয়ারা। আর দিদি কাজ করছে কাপড়ের দোকানে। এমনই ছবি ধরা পরল বোলপুরের বুকে।
একটি অতিমারি ভাইরাসের জন্য বিধ্বস্ত সারা বিশ্ব। অনেকের জীবন থেকে অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছে এই ভাইরাস। যেমন বোলপুরের দুই খুদে। স্কুল খুলতেই নজরে আসছে একের পর এক স্কুলছুট। এমনকী শিক্ষকদেরও রাস্তায় ঘুরতে দেখা যাচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার জন্য। স্কুল ছেড়েছে বোলপুরের সুরি পাড়ার দুই ভাইবোন শিল্পী ও সুরোজ হালদার। স্কুল ছাড়তে চায়নি তারা, বলা ভাল বাধ্য হয়েছে তারা। পেটের দায় যে বড় দায়।
বীরভূমের বোলপুরের সুরি পাড়ার বাসিন্দা জুরান হালদার। তাঁর ছেলে সুরজ ও মেয়ে শিল্পীর পড়াশোনা বন্ধ হয়েছে আর্থিক অনটনে। জুরানবাবুর মেয়ে পড়ত নবম শ্রেণিতে, ছেলে অষ্টম। পরিবার সূত্রে খবর, বাবা জুরান অসুস্থ, তিনি টিবি-তে আক্রান্ত। তার উপর একটি হাত-ও ভেঙেছে। বাড়িতেই শয্যাশায়ী তিনি। তাই সংসারের হাল ধরতে ছেলে সুরোজ হালদার এখন পেয়ারা বিক্রেতা। আর মেয়ে শিল্পী বোলপুরের একটি কাপড়ের দোকানে কাজ করেন।
সুরোজের কথায়, “বাড়িতেই দাদুর একটি দোকান ছিল। লকডাউনে জেরে দোকানও বন্ধ হয়েছে। তার পর দাদু মারাও গেলেন। আবার অন্যদিকে বাবা ফলের দোকানে কাজ করতেন। অসুস্থতার কারণে তিনিও কাজে যেতে পারেন না। সে কারণে সংসারের হাল ধরতে কাজে নেমেছি”। এখন বোলপুরের আদালতের সামনে বা সোনাঝুরির হাটে পেয়ারা বিক্রি করতে দেখতে পাওয়া যায় ক্লাস এইট থেকে স্কুলছুট সুরজকে ।
দিদির পড়াশোনার ইচ্ছা থাকলেও সেটাও সম্ভব হয়ে ওঠেনি। লকডাউনে অনলাইনে পড়াশোনা শুরু হয়। তার জন্য আবার আলাদা স্মার্টফোন কেনা এই পরিবারের কাছে সাধ্যের বাইরে। তাই সে-ও স্কুল ছেড়েছে। শিল্পী জানায়, বোলপুরের শৈলবালা স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল সে। মোবাইল না থাকায় গতবার পরীক্ষা দিতে পারেনি। এরপর এই সংসারের হাল ধরতে বোলপুরের একটি কাপড়ের দোকানে কাজ করছে। আর সুরজের ইচ্ছা, সংসারে একটু হাল ফিরলে বোনকে অন্তত পড়াশোনা করাবে।
আরও পড়ুন: Malda Police: ভুঁড়ি দেখে ধমক মমতার, শরীরচর্চায় মন দিল গোটা মালদহ পুলিশ
আরও পড়ুন: Coal Scam Case: ‘অসুস্থ’ বিকাশ মিশ্রকে কয়লাকাণ্ডে আদালতে হাজির করতে পারল না সিবিআই