বাড়ছে পড়ুয়াদের সাসপেনশনের মেয়াদ, ‘বিদ্যুৎ বিতর্কে’ বিশ্বভারতী

TV9 Bangla Digital | Edited By: tista roychowdhury

Jul 14, 2021 | 5:45 PM

Visva Bharati University: এ বিষয়ে বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি স্পষ্টই জানিয়ে দেন উচ্চ কর্তৃপক্ষ যা সিদ্ধান্ত নেবে তা বহাল থাকবে।

বাড়ছে পড়ুয়াদের সাসপেনশনের মেয়াদ, বিদ্যুৎ বিতর্কে বিশ্বভারতী
ফের বিতর্কে বিশ্বভারতী, ফাইল চিত্র

Follow Us

বীরভূম: বিতর্ক যেন পিছু ছাড়তে চায় না বিশ্বভারতীর। প্রতিবারই সেই বিতর্কের কেন্দ্রে থাকেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, সাসপেন্ড হওয়া পড়ুয়াদের সাসপেনশের সময়সীমা আরও ৩ মাস বাড়িয়ে দেওয়া হল। পূর্বেই, অধ্য়াপকদের বেতন দেরিতে হওয়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। ফের পড়ুয়াদের সাসপেনশনের মেয়াদ বাড়ানোয় বিতর্কে জড়াল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ (Visva Bharati University)।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাসপেন্ড হওয়া পড়ুয়াদের মধ্যে রয়েছেন অর্থনীতি ও রাজনীতি বিভাগের ছাত্র যথাক্রমে ফাল্গুনী পান ও সোমনাথ সৌ। এ ছাড়াও সাসপেনশনের শিকার হন অর্থনীতি ও হিন্দুস্থানী শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বিভাগের ছাত্রী রূপা চক্রবর্তী। চলতি বছরেই গত ১৪ জানুয়ারি এই তিন পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করা হয় বলে অভিযোগ। অর্থনীতির অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যের সাসপেনশনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় কর্তৃপক্ষের ‘কঠোর সিদ্ধান্তের’ শিকার হন ওই তিন পড়ুয়া।

সাসপেনশনের সেই সময়সীমা শেষ হতেই ফের সেই মেয়াদ বাড়িয়ে করে দেওয়া হয় জুলাই মাস পর্যন্ত। জুলাইয়ে সাসপেনশনের মেয়াদ ফুরনোর আগেই নতুন করে নোটিস দিয়ে জানানো হয়, সাসপেনশন জারি থাকছে। ওই তিন পড়ুয়া এখনও ক্লাস করতে পারবেন না। এমনকী, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও কাজেই উপস্থিত থাকতে পারবেন না। জুলাই থেকে এই সাসপেনশন বেড়ে জারি থাকবে অক্টোবর মাস পর্যন্ত।

শাস্তিপ্রাপ্ত পড়ুয়াদের অভিযোগ, আগেও সাসপেনশন বাড়ানোর নামে ‘ভুয়ো’ মেইল করা হয়েছিল কর্তৃপক্ষের তরফে। এমনকী সেই মেইলে বিশ্বভারতীর অথোরাইজেশনের কোনও চিহ্ন ছিল না বলেই অভিযোগ করেছিলেন ফাল্গুনীরা। পড়ুয়াদের একাংশ জানিয়েছেন, বিশ্বভারতীতে (Visva Bharati University) স্বৈরতন্ত্র চলছে। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ইচ্ছাকৃত পরিস্থিতি ঘোলাটে করে তুলেছেন।

উপাচার্যের বিরুদ্ধে মুখ খোলাতেই কি এই শাস্তি? প্রশ্ন তুলছেন সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকেই। যদিও, এ বিষয়ে বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি স্পষ্টই জানিয়ে দেন উচ্চ কর্তৃপক্ষ যা সিদ্ধান্ত নেবে তা বহাল থাকবে। বিশ্বভারতীর শিক্ষক সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, উপাচার্যের স্বৈরচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় শাস্তির সম্মুখীন হতে হয়েছে পড়ুুয়াদের।

উল্লেখ্য়, সম্প্রতি পড়ুয়াদের মাওবাদী তকমা দেওয়া থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যমকে তোপ দাগা, একের পর এক বিতর্কে নিজেকে জড়িয়েছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের চলতি পরিস্থিতিতে উদ্বেগ জানিয়ে অকারণে শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে ইতিমধ্যেই পাশে দাঁড়িয়েছে দেশ ও রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনগুলি।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য়ের  বিভাগীয় প্রধান স্যমন্তক দাস বলেন, “পড়ুয়ারা ভুল করলে, তাদের ভুলটা ধরিয়ে দেওয়া উচিত। সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত কঠোর না হয়ে তাদের মনোভাব বুঝে পদক্ষেপ করা উচিত। সেক্ষেত্রে শাস্তি কঠোর হলে পড়ুয়ারা ঠিক ভুল শিখে যাবে এমনটা কিন্তু নয়।” অন্যদিকে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যলয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান রাজ্যেশ্বর সিংহ এ প্রসঙ্গে বলেন, “যে পড়ুয়াদের সাসপেন্ড করা হয়েছে তাঁরা কি আর এমন কোনও কাজ করেছেন যাতে সাসপেনশন বাড়ানো যায়? উপাচার্য যা করছেন তা আসলে প্রতিবাদী স্বর রুদ্ধ করার প্রক্রিয়া। এইভাবে থামানো যাবে না। যাঁরা শুভবুদ্ধিসম্পন্ন তাঁরা সকলেই এই পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াবেন।” আরও পড়ুন: উপাচার্যের ‘রুষ্মা’! ছাত্রদের ‘মাওবাদী’ তকমা থেকে সংবাদমাধ্যমকে তোপ, ফাঁস একাধিক অডিয়ো, চর্চায় বিশ্বভারতী

Next Article