‘ওঁর বউ ইনজেকশন দিয়ে শান্ত করায়’, ‘কেষ্টর’ কুমন্তব্য, দিলীপও দিলেন পাল্টা
Visva Bharati University: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই বিজেপির শহিদ দিবস পালনের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে প্রশ্নের মুখে উপাচার্য বিদ্যুত্ চক্রবর্তী। সেই বিতর্কের আঁচে 'ঘি' ঢাললেন বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল
বীরভূম: বিভিন্ন সময়ে বারবার বিতর্কে জড়িয়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। এ বার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই বিজেপির শহিদ দিবস পালনের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে প্রশ্নের মুখে উপাচার্য বিদ্যুত্ চক্রবর্তী। সেই বিতর্কের আঁচে ‘ঘি’ ঢাললেন বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। শহিদ দিবস কর্মসূচি পালন প্রসঙ্গে স্পষ্টই জানিয়ে দিলেন খুব শীঘ্রই বিশ্বভারতীর অন্দরে অনুষ্ঠান করবেন তৃণমূল নেতা।
বুধবার, বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতার কথায়, “কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতেই পারেন। কিন্তু, কোনও বিশেষ দলের হয়ে কর্মসূচি পালন করা যায় না। তাহলে যে কেউ যা ইচ্ছে তাই করতে পারে। আমিও বিশ্বভারতীর ভেতরে অনুষ্ঠান করব। শিলচর লাইব্রেরির সামনেই করব। দেখি আমায় কী করে আটকায়!” এখানেই না থেমে অনুব্রত আরও বলেন, “বিশ্বভারতীর উপাচার্য একটা পাগল। ওঁর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ওঁ এতটাই পাগল যে ঘরে প্লেট থালা ছুঁড়ে ছুঁড়ে ভেঙে ফেলে। তখন ওঁর বউ ইনজেকশন দিয়ে শান্ত করে। ওই উপাচার্যের জন্যই বিশ্বভারতীর সংস্কৃতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি করা! আমি দেখিয়ে দেব। অনুষ্ঠান হবেই। বিশ্বভারতীর পাগল ভিসির সামনে অনুষ্ঠান হবে”
অনুব্রতের এ হেন মন্তব্য়ের পাল্টা বঙ্গ বিজেপির রাজ্য় সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “অনুব্রত নিজেকে বড় শিক্ষিত মনে করেন। এর আগেও ওঁ উপাচার্যকে পাগল-ছাগল বলেছেন। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী যেহেতু বিজেপি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন তাই তাঁকে সম্মান জানাতে আমাদের দলের লোকেরা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু দলের নেতারা তো ভাষণ দেননি। তাহলে দোষের তো কিছু নেই!”
প্রসঙ্গত, বিজেপির শহিদ সম্মান যাত্রা কর্মসূচি উপলক্ষ্যে বুধবার বর্ধমান থেকে বীরভূম হয়ে যাওয়ার পথে বিশ্বভারতীতে আসেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে তাঁকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। ঘণ্টাতিনেক অধ্যাপকদের সঙ্গে বৈঠকও করেন মন্ত্রী। শিক্ষাঙ্গনে এভাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দলীয় কর্মসূচি পালনে যে বিশ্ববিদ্য়ালয়ের গায়ে একটি বিশেষ রাজনৈতিক রঙ লাগতে পারে এমনই অনুমান সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের।
বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালেই বিশ্ববিদ্যালয়ের (Visva Bharati University) সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ না করার অভিযোগ করা হয়েছিল তৃণমূলের পক্ষ থেকে। এমনকী, খোদ মুখ্য়মন্ত্রী সংবাদমাধ্যমে স্পষ্ট জানিয়ে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। পরবর্তীতে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসের বিস্তীর্ণ এলাকায় দেখা যায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে লাগানো হয়েছে তৃণমূলের পতাকা। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেও রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়েছিল। পরে, নির্বাচন আবহে বিভিন্ন সময়ে উপাচার্যের সঙ্গে বিজেপি প্রার্থীর নাম জুড়ে নানা বিতর্কিত পোস্টার ও ব্যানারও চোখে পড়েছিল বিশ্বভারতীর আশেপাশে। এ বার সরাসরি জেলা সভাপতির এই নির্ঘোষ কার্যত আরও একবার রাজনৈতিক তরজার কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে বলেই মনে করছেন শিক্ষামহলের একাংশ।
আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীতেও বিজেপির ‘শহিদ সম্মান কর্মসূচি’ পালন! প্রশ্নের মুখে উপাচার্য