বীরভূম: বগটুই যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আক্রান্তের পরিবার ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলতে চান তিনি। সেই উদ্দেশেই মিহিলালকে গ্রামে ফিরিয়ে আনতে গিয়েছিলেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। কিন্তু নিজের গোটা পরিবারকে যিনি চোখের সামনে জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে যেতে দেখেছেন, তিনি কোনওভাবেই ফিরতে রাজি ছিলেন না। বিডিও-র সামনে হাতজোড় করে কেঁদেছিলেন মিহিলাল। বাতাসপুর থেকে বগটুই যাওয়ার পথেই যদি কিছু ঘটে যায়। এই আতঙ্কেই সিঁটিয়ে ছিলেন তিনি। কিন্তু পরে দেখা গেল পুলিশের সঙ্গে বগটুই যাচ্ছেন সেই মিহিলাল। বিশাল পুলিশ বাহিনী নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তাঁকে। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন বলেও জানা গিয়েছে।
সোমবার রাতে বগটুইতে ঘটে সেই অগ্নিকান্ড। দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় অন্তত ৮ জনের। ঘটনার পর আতঙ্কে গ্রামছাড়া হন ওই পরিবারের বাকি সদস্যরা। বাতাসপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন মিহিলাল নামে ওই ব্যক্তি। বুধবারই সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলেন তিনি। আর বৃহস্পতিবারই জানা যায়, মুখ খুলতেই হুমকি দেওয়া শুরু হয়েছে মিহিলালকে। প্রাণে মেরে ফেলা হবে, এমন হুমকিই দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। তাই বিডিও তাঁকে নিতে এলেও রাজি হননি মিহিলাল।
চোখের সামনে পুরো পরিবারকে দগ্ধ হয়ে মরতে দেখেছেন। বিডিও-র সামনে হাতজোড় করে এ কথা জানিয়ে মিহিলাল বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তার দায় নেবে কে? ওখানে গিয়ে যদি বিপদের মুখে পড়তে হয়!’ সেই আতঙ্কেই ভুগছিলেন তিনি। সেই রাতের ঘটনার পর আর সাহস নেই তাঁদের। যাঁরা বেঁচে আছেন, তাঁরা অন্তত সুরক্ষিত থাকুক, এটাই চাইছেন তিনি। তাই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে বগটুই যাবেন না বলে জানিয়ে দেন মিহিলাল।
কিন্তু মিহিলাল এই আর্জি জানানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখা যায় মিহিলালদের সঙ্গে নিয়ে বগটুইয়ের দিকে রওনা হয়েছে পুলিশ। বিশাল পুলিশ বাহিনী নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তাঁকে। যিনি এ ভাবে আতঙ্কে কুঁকড়ে ছিলেন, তাঁকে কি চাপের মুখে মত বদলাতে হল? উঠছে সেই প্রশ্ন। জানা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। উল্লেখ্য, স্ত্রী-সন্তানদের মৃত্যু দেখেছেন তিনি। তবে এখনও খোঁজ নেই তাঁর দুই নাতির। দুই শিশু কোথায় গেল, প্রশাসনের কাছে সেই প্রশ্ন রেখেছেন মিহিলাল।