Anupam Hazra: ‘কেষ্টবাবু’কে ঠিকঠাক ভাবে জেরা করলে উনিই হয়ত… অনুব্রত-অনুগামী কাজল শা নিয়ে বিস্ফোরক অনুপম হাজরা
Kajal Shah: সূত্রের খবর, এক সময় সবজি বিক্রি করতেন কাজল শা। জেলায় কান পাতলে শোনা যায়, এই কাজল শা নাকি 'কেষ্ট'দার একনিষ্ঠ ভক্ত।
নয়া দিল্লি: শনিবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের সামনে তৃণমূলের যে নেতাদের দেখা গিয়েছিল, সেই তালিকায় ছিলেন কাজল শা। যিনি একসময় সিউড়ি পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষও ছিলেন। সেই কাজলকে নিয়ে এবার বিস্ফোরক দাবি বিজেপি নেতা অনুপম হাজরার। তিনি বলেন, “আর কয়েকদিন অপেক্ষা করুন, যখন কাজল শাকে ইডি কিংবা সিবিআই ডাকবে, তখন বোঝা যাবে ওনার ভূমিকা।” এরপরই জল্পনা শুরু হয়েছে, তবে কি এবার তদন্তকারীদের স্ক্যানারে উঠে আসতে পারেন অনুব্রত-অনুগামীরা?
সূত্রের খবর, এক সময় সবজি বিক্রি করতেন কাজল শা। জেলায় কান পাতলে শোনা যায়, এই কাজল শা নাকি ‘কেষ্ট’দার একনিষ্ঠ ভক্ত। অনুব্রতর অনুগামীদের মধ্যে একেবারে প্রথম সারিতে রয়েছেন তিনি। দাদার হাত মাথায় থাকায় রাতারাতি কাজল নেতা হয়ে উঠেছিলেন বলেও দাবি এলাকার লোকজনের। শনিবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে এই কাজলের নেতৃত্বেই অনুব্রতর সমর্থনে গলা ফাটাতে শোনা যায় তৃণমূল কর্মীদের। এই কাজল শার নাম জড়িয়েছিল ২০১৯ সালের ২৯ জুন জেলাশাসকের বাংলোর সামনে বোমা মারার ঘটনায়।
এমনও অভিযোগ, ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধীদের মনোনয়ন আটকাতে তিনি নাকি অনুব্রতর অন্যতম ভরসা ছিলেন। পদে না থেকেও ব্লকের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণে কাজলের ভূমিকা নাকি উল্লেখযোগ্য, শোনা যায় সে কথাও। বেআইনি বালি খাদানগুলি নিয়ে ২০১৯ সালে জেলা প্রশাসন সক্রিয় হওয়ার কারণেই নাকি জেলাশাসকের বাংলোর সামনে বোমাবাজি হয় বলে অভিযোগ।
অনুপম হাজরার কথায়, “কাজল শা এক সময় পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন বীরভূমের। বালির কারবার। বিভিন্ন বালি খাদান থেকে অবৈধভাবে অনেক টাকা রোজগারও করেন। সেক্ষেত্রে একটা ভারী ব্যাগ অনুব্রতবাবুর কাছে পৌঁছতেন। যে কারণে অনুব্রত মণ্ডলের নজরে উনি ভাল ছেলে, ভাল সংগঠক। অথচ এই কাজলই ডিএমের বাংলোর সামনে বোমা মারার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন। এর আগে অনুব্রত মণ্ডল যখন পুলিশের উপর বোমা মারার নিদান দেন, তাঁর দলনেত্রী তাঁকে দক্ষ সংগঠক বলেছিলেন। ইনিও বোমা মারার পর কেষ্টবাবু বলেছিলেন, কাজল ভাল ছেলে। তৃণমূলের সিস্টেমটাই এরকম। যতক্ষণ না আপনি মানুষের মনে সন্ত্রাস জাগানোর মতো কোনও কাজ করছেন ততক্ষণ দক্ষ সংগঠক হতে পারবেন না। ভাল ছেলে হতে পারবেন না। ”
একইসঙ্গে আসানসোল আদালত চত্বরে কাজলের সরব হওয়া নিয়ে অনুপম হাজরার মন্তব্য, “অনুব্রত জেলে যেতেই অনুগামীদের বাজার দর বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। কে কত বড় অনুগামী। আসানসোল কোর্ট চত্বরে একেই দেখা গেছে গলা ফাটাতে। এই কাজল শা যে অনুব্রতর সঙ্গে জড়িয়ে তা বোঝাই যাচ্ছে। এক চোর ধরা পড়লে, আরেক চোরের এত ব্যথা মনে, নিশ্চয়ই আঁতাত আছে। আর কয়েকদিন অপেক্ষা করুন, যখন কাজল শাকে ইডি কিংবা সিবিআই ডাকবে, তখন বোঝা যাবে ওনার ভূমিকা। আমি দু’দিন আগে বোলপুর গিয়েছিলাম। ওনার বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ পেয়েছি। কেউ বোলপুর থেকে আসানসোল চলে গেল এত ডেসপারেটলি, কেষ্টবাবুর হয়ে গলা ফাটাচ্ছে, এটা তো গভীর সম্পর্ক না হলে হয় না। হতে পারে কেষ্টবাবুকে ঠিকঠাক ভাবে জেরা করলে উনিই হয়ত কাজল শার কথা বলে দেবেন।” যদিও কাজল শার সঙ্গে কোনওভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি।