বীরভূম: বাড়ি থেকে বেরনোর পর ২০০ মিটার পর্যন্ত ঠিক ছিল। তারপর ফুঁস করে কনভয় যে কোথায় ধাওয়া, তার টিকি খুঁজে আর পাওয়া যাচ্ছে না। মেঠো রাস্তার এগলি-ওগুলি চক্কর কেটেও অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondol) খুঁজে বার করতে পারলেন না কমিশনের (Election Commission) আধিকারিকরা। কোথায় গেলেন কেষ্ট? হন্যে ম্যাজিস্ট্রেটও।
নির্বাচনের আগে প্রতিবারই অনুব্রত মণ্ডল বীরভূম চষে বেরান। কর্মীদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করেন। ঠিক করে দেন শেষ মুহূর্তে স্ট্র্যাটেজি। বুধবারও বাড়ি থেকে বের হন নিয়ম মাফিক। ঘড়ির কাঁটায় সময়টা তখন ১১.৪০ মিনিট। তারপর আর দশ মিনিট! তাঁর কনভয় অনুসরণ করতে পারেন কমিশনের আধিকারিকরা। ব্যস, আচমকাই সকলের চোখে ধূলো দিয়ে অনুব্রতর কনভয় পুরো বেপাত্তা। হতভম্ব হয়ে যান আধা সামরিক বাহিনী, ম্যাজিস্ট্রেট, ভিডিয়োগ্রাফার- প্রত্যেকেই।
নিজের গড় হাতের তালুর মতো চেনেন অনুব্রত। কোন গলি কোথায় গিয়ে শেষ কোথায় গিয়ে কোন রাস্তা মিসবে, তা তাঁর নখদর্পণে। আর সেটাকেই কাজে লাগিয়েই হঠাৎ করে ‘হাওয়া’ হয়ে গেলেন তিনি। প্রশ্ন উঠছে, অনুব্রত গাড়ির একেবারে পিছনেই ছিল কমিশনের গাড়ি, তবে কীভাবে এটা সম্ভব? কমিশনের কর্তারাও বলছেন, পথ বিভ্রাটের কারণেই এই সমস্যা হয়েছে।
তবে সূত্র মারফত কমিশনের আধিকারিকরা জানতে পারেন, অনুূব্রত সাঁইথিয়াতে রয়েছেন। গতবারও নজরবন্দি নিয়ে রীতিমতো কমিশনের আধিকারিকদের নাকানিচুবানি খাইয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তবে এমনটা যে হতে পারে, তার আঁচ মিলছিল মঙ্গলবারই। অনুব্রত বলেছিলেন, “বীরভূমের মানুষ নজরবন্দি করাতে আরও রেগে গেল। নজরবন্দি মানে তো গৃহবন্দি নয়। নজরবন্দি আবার কী? আমার সঙ্গে একটা ক্যামেরা থাকবে। আমি কী করছি, তা দেখবে তো! দেখুক।”
আরও পড়ুন: ডিসিআরসি-তে শিঁকেয় করোনাবিধি! সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লেন ২ভোট কর্মী
আপাতত অনুব্রতকে হন্যে হয়ে খুঁজছে কমিশন। বীরভূম অতি স্পর্শকাতর একটি এলাকা। গত কয়েকদিনে বারবার রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বীরভূম। শান্তিপূর্ণ ওসুষ্ঠুভাবে ভোট করানোই কমিশনের চ্যালেঞ্জ। সেক্ষেত্রে বীরভূমের পুলিশ সুপার পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠীকে। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে অনুব্রতর জেলায়। এমতাবস্থায় অন্যান্যবারের মতো এবারও অনুব্রত মণ্ডলকে ফের ‘নজরবন্দি’ করা হয়েছে।