
দিঘা: ভূতুড়ে ভোটার নিয়ে বঙ্গ রাজনীতির আঙিনায় চাপানউতোর শেষ নেই। এবার ভোটার লিস্টে ‘ভূত’ ধরতে কিছুদিন আগেই কমিটি তৈরি করে ফেলেছিল তৃণমূল। ভোটের যখন আর মেরে কেটে এক বছরও বাকি নেই তখন নির্বাচন কমিশনের ডিক্লারেশন ফর্ম নিয়ে গুরুতর আপত্তি তুলতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলে তাঁর সাফ কথা, বাংলাকে প্রথম টার্গেট করা হচ্ছে। এরপর এক এক করে বাকি সব রাজ্যকে ক্যাপচার করে নেওয়া হবে। আর এ ক্ষেত্রে হাতিয়ার করা হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে। বিজেপির কথায় কি ফের NRC চালুর চেষ্টা হচ্ছে? কেন মা-বাবার বার্থ সার্টিফিকেট চাইছে নির্বাচন কমিশন? দিঘায় সাংবাদিক সম্মেলন থেকে এমনই একগুচ্ছ প্রশ্ন তুলে দিলেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
মমতা বলছেন, ডিক্লারেশন ফর্ম আপত্তিজনক। কমিশন সবাইকে ক্রীতদাস ভাবছে, এটা ঠিক নয়। তাঁর দাবি, ভিন রাজ্যের লোকেদের বাংলার ভোটার লিস্টে ঢোকানোর চেষ্টা চলছে। নির্বাচন কমিশন ও বিজেপির বিরুদ্ধে একযোগে আক্রমণ শানিয়ে তিনি বলেন, “আপনার ভার্ডিক্ট মেনে গ্রাম বাংলার লোকেরা বাদ হয়ে যাবে। বাইরে থেকে আপনি সেই সংখ্যা ভরাবেন অনলাইনে। বিহারে গিয়ে বাংলার ভোটার দিয়ে নাম ভর্তি করবেন। আপনি যেহেতু হেরে যাবেন তাই গুজরাটে উত্তরপ্রদেশের লোক দিয়ে নাম ভরাবেন।”
মমতার দাবি নির্বাচন কমিশন যা বলছে তা হলে গ্রামের লোক, পরিযায়ী শ্রমিকরা বঞ্চিত হবে। এরপরই আক্রমণের ধার আরও বাড়িয়ে তিনি বলেন, “ভোটের দিন বুথ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ভোটার লিস্ট থেকে ২৫ থেকে ৩০টা নাম বাদ গিয়েছে। শেষ মুহূর্তে বিজেপির কথায় নামগুলো কেটে দেওয়া হয়।” তাঁর অভিযোগ, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে অমিত শাহের আঁতাত রয়েছে। দেশ চালাচ্ছে অমিত শাহই। এরপরই কমিশনের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে ফের বলেন, “রাজ্যের কোনও আধিকারিককে দিয়ে নির্বাচন করায় না। বিজেপির সঙ্গে বৈঠক করে। কিন্তু, নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ হতে হয়।”
‘চুপ করে থাকবে না তৃণমূল’
তবে তিনি এও মনে করছেন গোলযোগের এখানেই শেষ নয়। আরও আছে। সাংবাদিক বৈঠক থেকেই তিনি বলেন, “আরও অনেক ঘাপলা আছে, বের করতে টাইম লাগবে। কিন্তু প্রথম ঘাপলাটা তো বের করে দিলাম।” সতর্ক করেন অন্য রাজ্যগুলিকেও। বলেন, এটা সব রাজ্যে হচ্ছে। আমরা ভুলটা ধরিয়ে দিলাম। বাকিরাও এবার সতর্ক হোক। তবে অবৈধভাবে নাম বাদ গেলে তৃণমূল চুপ করে যে থাকবে না তাও এদিন সাংবাদিক বৈঠকে বুঝিয়ে দেন তিনি। কমিশনের উপর চাপ বাড়িয়ে বলেন, “ভোটার লিস্ট আপনার অস্তিত্ব। এরা চেষ্টা করবে আপনার নাম বাদ দেওয়ার। আপনি চেষ্টা করবেন আপনার নাম ঢোকানোর। কিন্তু, কোথায়ও যদি অবৈধভাবে কোনও নাম বাদ পড়ে সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস মা মাটি মানুষকে নিয়ে আন্দোলনে যাবে।”