কোচবিহার: লেভেল ক্রসিং পড়া ছিল না। হু হু করে ছুটে আসছিল ডেমু প্যাসেঞ্জার। এদিকে, ট্রেন খেয়ালই করেননি চার চাকা গাড়ির চালক। ভ্রূক্ষেপ না করেই লাইন পার হচ্ছিলেন তিনি। বাঁ পাশ থেকে সজোরে ধাক্কা ট্রেনের। তখন ট্রেনের নীচে আটকে যায় গোটা গাড়িটা। দুমড়ে মুছড়ে একাকার অবস্থা। আর গাড়ির ভিতর থেঁতলে গিয়েছেন প্রত্যেক যাত্রীর শরীর। রক্ত চুঁইয়ে বের হচ্ছে কাচ বেয়ে। ভয়ঙ্কর ঘটনা অসম বাংলা সীমান্তারে গলোকগঞ্জের লেভেল ক্রসিংয়ে। বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে দুর্ঘটনায়। কিন্তু ক’জনের মৃত্যু হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। উত্তেজিত জনতা ট্রেন লক্ষ্য করে ছুড়তে থাকেন ইট। তাতে আহত হন বেশ কয়েকজন যাত্রী।
শুক্রবার রাতে কোচবিহারগামী ডেমু প্যাসেঞ্জার ট্রেন সিগন্যাল মেনেই চলছিল। অসাম বাংলা সীমান্তের গলোকগঞ্জের লেভেল ক্রসিং পড়া ছিল না। সেসময় একটি গাড়ি লেভেস ক্রসিং পার হচ্ছিল। ডেমু প্যাসেঞ্জারের নীচে চলে আসে একটি চারচাকা গাড়ি। বিকট শব্দ শুনতে পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষী থাকেন তাঁরা। ট্রেনটির নীচে আটকে গিয়েছে গাড়ি। ওই অবস্থাতেই ট্রেনটি কয়েকশো মিটার চলেছে। তারপর থেমেছে। ততক্ষণে গাড়িটা দলা পাকিয়ে গিয়েছে পুরোটাই।
গাড়ির ভিতরের যাত্রীদের অবস্থা অবর্ণনীয়। তাঁদেরকে দেখে রীতিমতো স্থবির হয়ে যান স্থানীয়রা। প্রথমে তাঁরা বুঝতেই পারছিলেন না কীভাবে গাড়ি থেকে তাঁদেরকে বার করে আনবেন। শরীরগুলো একে অপরের সঙ্গে রীতিমতো পেঁচিয়ে যায়। এদিকে, দুর্ঘটনার পর উত্তেজিত হয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। লাইন থেকেই ইট তুলে তাঁরা ট্রেন লক্ষ্য করে ছুড়তে থাকেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন রেল পুলিশের আধিকারিক ও অসম পুলিশের বাহিনী। পৌঁছয় দমকলও। গ্যাস কাটার দিয়ে গাড়িটিকে কেটে যাত্রীদের বার করে আনা হয়। ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে প্রত্যেক যাত্রীর। উত্তেজিত জনতা রেল আধিকারিকদের ঘিরেও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
পরে রেলের উচ্চ পদস্থ কর্তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করেন। ট্রেনটি বেশ কিছুক্ষণের জন্য লাইনের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। পরে গাড়িটিকে ক্রেন দিয়ে সরানো হয়। তারপর ফের ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেয়।
আরও পড়ুন: Kolkata Fire: শাটারের নীচ থেকে গল গল বেরোচ্ছে ধোঁয়া, ফল ব্যবসায়ীর প্রায় দু’লক্ষ নগদ টাকা তখন ছাই