পৃথক রাজ্যের দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীর দরবারে রাজেশ লাকড়া, সঙ্গী বংশীবদন, অস্বস্তিতে তৃণমূল
TMC: সূত্রের খবর, গত শুক্রবার রাতেই গোপনে বৈঠক সারেন লাকড়া ও বংশীবদন। রাজবংশী ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষকে বিভিন্ন ইস্যুতে একজোট করার বিষয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
আলিপুরদুয়ার: গ্রেটার কোচবিহার আন্দোলনের নেতা বংশীবদন বর্মনের পৃথক রাজ্যের দাবিকে প্রকাশ্যে সমর্থন আদিবাসী সংগঠন ভারতীয় মূলনিবাসী আদিবাসী বিকাশ পরিষদের নেতা তথা তৃণমূলের এসসি এসটি সেলের সাধারণ সম্পাদক রাজেশ লাকড়া (Rajesh Lakra) ওরফে টাইগারের। পৃথক রাজ্যের দাবিতে মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখাও করতে চলেছেন রাজেশ (Rajesh Lakra) ও বংশীবদন। ফলে, বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। মঙ্গলবার, এ প্রসঙ্গে সাবধানী মন্তব্য আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামীর।
মঙ্গলবার, জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, “আমরা দলের তরফে আগেও বলেছি বাংলা ভাগ হতে দেব না। কিছুদিন আগে বিজেপি সাংসদ জন বার্লা পৃথক রাজ্যের দাবি করেন। আমরা সেই দাবি নাকচ করেছি। বংশীবদন কী বলছে সে নিয়ে আলাদা করে কোনও কথা হয়নি। তাছাড়া বংশীবদন দলের নেতা নয়। কিন্তু রাজেশ আমাদের দলের নেতা। তাই রাজেশ কী বলতে চায় সে বিষয়ে নিশ্চই ওঁর সঙ্গে কথা বলব। এ বিষয়ে যদিও আমাদের কোনও কথা হয়নি। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দলের শীর্ষ নেতৃত্ব নেবেন। তবে, তৃণমূল কংগ্রেস পৃথক রাজ্যের দাবিকে সমর্থন করে না। প্রয়োজনে দলের পক্ষ থেকে ফের এ বিষয়ে কথা বলা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যে কেউ দেখা করাতে পারেন, নিজের দাবি জানাতে পারেন। সে বিষয়ে রাজ্য নেতৃত্ব যা বলার বলবেন। ”
প্রসঙ্গত, আগেও পৃথক রাজ্যের দাবিতে গ্রেটারের আন্দোলনের জেরে উত্তপ্ত হয়েছে কোচবিহার-সহ উত্তরের একাধিক জেলা। বেশ কয়েকজন শহিদ হয়েছিলেন এই আন্দোলনের জেরে। একাধিকবার নিউ কোচবিহার স্টেশনে অবরোধও করে রেখেছিলেন গ্রেটার সমর্থকরা। পরে তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে বংশীবদনের। রাজবংশী ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কালচারাল বোর্ডের সভাপতি হিসেবে পদপ্রাপ্তি ঘটে তাঁর। কিন্তু, সোমবার বীরপাড়ার ৫ নম্বর শ্রমিক লাইনের ফুটবল মাঠে বিশ্ব আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পৃথক রাজ্যের দাবি করেন বংশীবদন। তাঁর দাবিকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেন রাজেশ লাকড়া (Rajesh Lakra)।
তবে রাজেশ লাকড়া পরিষ্কার করে দেন, আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লার পৃথক রাজ্যের দাবিকে তিনি সমর্থন করেন না। তিনি বলেন, “জন বার্লা পঞ্চম তফশিলিতে কী আছে তাই জানেন না।” তবে তাঁরা সংবিধান মেনে স্বায়ত্ব শাসন চান। স্বায়ত্ব শাসন পেলে উত্তরবঙ্গের সব সম্প্রদায়ের মঙ্গল হবে বলে মন্তব্য টাইগারের। সূত্রের খবর, গত শুক্রবার রাতেই গোপনে বৈঠক সারেন লাকড়া ও বংশীবদন। রাজবংশী ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষকে বিভিন্ন ইস্যুতে একজোট করার বিষয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এমনকী মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এই দাবিতে তাঁরা একজোট হয়ে সাক্ষাত্ করবেন বলেও খবর সূত্রের। বস্তুত, টাইগার ও বংশীবদনের এই সম্মিলিত দাবি কেবল ইঙ্গিতপূর্ণ নয়, পাহাড়-রাজনীতির সমীকরণ পরিবর্তনে বিশেষ তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আরও পড়ুন: জোর করে কুরুচিকর ভিডিয়ো দেখিয়ে নিজের মেয়ের গোপন অঙ্গে ‘হাত’ বাবার!