মাথাভাঙা: ভোট দিতে যাচ্ছিলেন, আচমকাই গুলি সিআরপিএফ জওয়ানের। মাথাভাঙায় পরপর তিন জনের মৃত্যু। রাস্তাতেই পড়ে আরও এক জনের দেহ। প্রত্যেকেই নিজেদের তৃণমূল কর্মী বলে পরিচয় দিয়েছেন। গ্রামবাসীদের ভয়ঙ্কর অভিযোগ ঘিরে ভোট চতুর্থীতে (West Bengal Assembly Election 2021) রণক্ষেত্রের চেহারা নিল মাথাভাঙা (Mathabhanga )-শীতলকুচি (Sitalkuchi) মধ্যবর্তী জোরপাটকি এলাকা। শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত শীতলকুচিতে ভোট হিংসার বলি ৫।
ভোট চতুর্থীর সকাল থেকেই হিংসার নিরিখে লাইমলাইটে শীতলকুচি। রাত থেকে কড়া প্রহরা ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী, পুলিশের। নজর কমিশনেরও। তবুও রোখা সম্ভব হল না হিংসা। সকালেই পাঠানটুলিতে আনন্দ বর্মন নামে তেইশ বছরের এক তরুণের মৃত্যু হয়। তিনি বিজেপি কর্মী বলে দাবি। এই অভিযোগ ঘিরে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধে সকালেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে রীতিমতো খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায় গ্রামবাসীদের। ঘণ্টা খানেকের খবর আসে মাথাভাঙা ও শীতলকুচির মধ্যবর্তী এলাকা জোরপাটকিতে গুলি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সেখানে চার জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।
তিন জনের দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। রাস্তাতেই পড়ে থাকে আরও এক জনের দেহ। আহত হন আরও বেশ কয়েকজন। হাসপাতালেই আহত এক যুবকের বক্তব্য, তাঁরা মাদ্রাসা বুথে ভোট দিতে যাচ্ছিলেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী রাস্তায় এক বাচ্চাকে মারে। তারা প্রতিবাদ করাতেই গুলি চালাতে শুরু করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। এলোপাথাড়ি গুলি লাগে পরপর চার জনের গায়ে। আহত আরও যুবকের বক্তব্য, “কেন্দ্রীয় বাহিনী কীভাবে মারধর করেছে, তার গোটা ভিডিয়োটা রয়েছে। আমি ভিডিয়ো করছিলাম বলেই গুলি চালায়।”
ভোটের সাম্প্রতিকতম খবর জানতে ক্লিক করুন
এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে চাইছিলেন রক্তাক্ত হোক ভোট। বারবার বিভিন্ন সভা থেকে মানুষকে বলেছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে আক্রমণ কর। হাত-খুন্তি নিয়ে আক্রমণ কর। তাঁর উস্কানিমূলক মন্তব্যের জেরেই এই ঘটনা। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালিয়েছে এটা কে বলল?”
ঘটনাকে ঘিরে চরম উত্তেজনা শীতলকুচিতে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে কমিশন। কে গুলি চালিয়েছে, কেন- তার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ চেয়ে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে।
শীতলকুচিতে গুলি চলার ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করলেন নরেন্দ্র মোদী। ভোট চলাকালীন এভাবে নিরীহ মানুষদের প্রাণ যাওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক বলে অভিহীত করেন তিনি। নিশানা করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। তাঁর বক্তব্য, বিজেপির সমর্থন দেখে দিদি ও তাঁর গুন্ডারা ভয় পেয়ে গিয়েছে।
অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে একহাত নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বসিরহাটের সভা থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন তিনি। রবিবারই শীতলকুচি যাচ্ছেন নেত্রী।