কোচবিহার: ফের শিউরে ওঠার মতো ঘটনা। জমি বিবাদের কারণে মা ও মেয়েকে বাঁশ পেটা এলাকার কয়েকজন পুরুষের। তাদের যথার্থ সঙ্গ দিচ্ছেন মহিলারাও । পরে বিষয়টি নজরে আসতেই অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়।
কী ঘটেছে?
মেখলিগঞ্জের জামালদহ বাজার এলাকার ঘটনা। একটি ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে কয়েকজন পুরুষ ও মহিলা মিলে মা ও তাঁর মেয়েকে মারধর লাঠি, বাঁশ নিয়ে বেধড়ক মারধর করছে। সেই আঘাতে রীতিমত কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁরা। ঘটনার জেরে গুরুতর জখম হয়েছেন ওই দুই মহিলা। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, প্রতিবেশীদের সঙ্গে আক্রান্ত ওই পরিবারের জমি বিবাদ দীর্ঘদিনের। তারই চরম ফল প্রকাশ পায় গতকাল দুপুরে।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে আহত মেয়ে বলেন, “তিনটের সময় এলাকার কয়েকজন পুরুষ ও মহিলা চড়াও হয় আমাদের উপর। এদের প্রত্যেকের হাতে লাঠি, বাঁশ ছিল। দুপুর নাগাদ আমায় এবং মাকে বেধড়ক মারধর করে। এমনকী আমার শ্লীলতাহানিরও চেষ্টা করা হয়। আজ থেকে নয় দশ পনেরো বছর আগে থেকেই আমাদের সঙ্গে জমি নিয়ে ঝামেলা। আমাদের জমি ওরা বেআইনিভাবে টাকা দিয়ে নিজের নামে করেছে। ওই নিয়ে আমার মা ওদের কথা শোনাত। এরপর সেটা নিয়েই আজকে ঝামেলা।”
গতকাল উত্তরবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুরে হুবহু একই ঘটনা ঘটেছে। সেখানে নাবালক ছেলের সামনেই তার মাকে জমি বিবাদের জন্য বেধড়ক মারতে দেখা যায় প্রতিবেশীদের। এবার নাবালক ছেলেটি মাকে বাঁচাতে কী করবে বুঝে উঠতে পারছিল না। পরে সে গোটা ঘটনার ভিডিও করে। সেই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরই নিন্দার ঝড় ওঠে। পরে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়।
জানা গিয়েছে, আক্রান্ত ওই মহিলার নাম মিনু বর্মণ(৪০)। স্বামীর নাম নেপাল বর্মণ। তিনি কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে থাকেন। তপনের দ্বিপখন্ডা অঞ্চলের সাকইর গ্রামে ওই গৃহবধূ তাঁর নাবালক ছেলেকে নিয়েই থাকেন। পাশেই প্রতিবেশির চিন্তা ও গৌড় বর্মণের বাস। তাঁদের সঙ্গে বাড়ির জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছিল ওই পরিবারের। যা সোমবার সকালে বচসায় গড়ায়।
অভিযোগ, সেই সময়ে প্রতিবেশি ওই বাড়ির সদস্যরা মিলে হামলা চালায় মিনু দেবীর উপর। এদিকে, মায়ের উপরে সেই হামলার ঘটনা দেখে বারো বছরের নাবালক ছেলে পাশে দাঁড়িয়ে মোবাইলে রেকর্ড করে গোটা ঘটনা। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মাঝবয়সী দুই ব্যক্তি মিলে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে পর পর ওই মহিলার পায়ে ও কোমরে আঘাত করছে। আর সেই আঘাতের জেরে ভেঙে গিয়েছে কাঠ ও বাঁশ। তবুও থামছে না তারা।
এরপর সাতান্ন সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি নিয়ে ওই নাবালক ও তাদের আত্মীয়রা মিলে থানায় লিখিত ভাবে অভিযোগ দায়ের করে। এদিকে ওই ভিডিও ভাইরাল হতেই মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহলে।