বালুরঘাট: বিগত কয়েকদিন ধরেই ফের খবরে উঠে এসেছে চিনের করোনা সংক্রমণ। আবারও লকডাউন জারি হয়েছে সেখানে। তবে এরাজ্যে সংক্রমণের হার ততটাও বেশি নয়। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৩ জন। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের অন্যান্য করোনা হাসপাতালের মত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট কোভিড হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। মূলত, করোনা সংক্রমণ কমার জন্য কোভিড হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। বুধবার থেকে বালুরঘাট নাট্য উৎকর্ষ কেন্দ্রে থাকা কোভিড হাসপাতাল বন্ধ হচ্ছে। জেলায় সংক্রমণ না থাকায় আপাতত এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, করোনা হাসপাতাল বন্ধ হওয়ার ফলে কর্মহীন প্রায় ২৪ জন স্বাস্থ্য কর্মী। যাঁরা মূলত অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন। এদিকে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে একটি করোনা ইউনিট রাখা হচ্ছে। করোনা সংক্রমিত গুরুতর রোগী হলে তবেই তাঁকে সেখানেই চিকিৎসা করা হবে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। অন্যদিকে, কর্মহীনদের দাবি কঠিন পরিস্থিতিতে তাঁরা পরিষেবা দিয়েছিলেন, সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এখন তাঁদের পাশে দাঁড়াক সরকার ৷ বকেয়া বেতনের পাশাপাশি বিকল্প কাজের দাবি জানিয়েছেন কর্মহীন স্বাস্থ্য কর্মীরা।
জানা গিয়েছে, করোনার যখন শিরে সংক্রান্তি অবস্থা, তখন বালুরঘাট শহর লাগোয়া চকবাখরে অবস্থিত নাট্য উৎকর্ষ কেন্দ্রকে করোনা হাসপাতাল করে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর। যেখানে শেষ পর্যন্ত মোট ৮৫ টি বেড ছিল, ৯ টি সিসিইউ বেড ছিল। গত এক মাস থেকে ওই হাসপাতালে একজন রোগীও নেই।
জেলা জুড়ে সাকুল্যে দু’একজন করে সংক্রমণ হচ্ছে। যার ফলে তারা বাড়িতে থেকেই সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। এছাড়াও ওই হাসপাতালের কাজের জন্য বেশ কয়েকজন অস্থায়ী নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল। মোট নার্স ছিল ১৩ জন, কোভিড যোদ্ধা ৪ জন ও সহকারী হিসেবে আরও ৭ জন ছিলেন। এই ২৪ জনের মধ্যে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ২০ জনকে নিয়োগ করেছিল। বাকি ৪ জন কোভিড যোদ্ধা রাজ্য থেকে নিয়োগ করা হয়েছিল। এদিকে কোভিড হাসপাতাল বন্ধের ফলে কার্যত তাঁরাও কাজ হারাচ্ছেন৷ কী করে এখন তাঁদের দিন চলবে তা ভেবেই শিউরে উঠছেন।
এবিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা: সুকুমার দে বলেন, ‘জেলায় কোভিড সংক্রমণ নেই। হাসপাতালে রোগী আসছে না। যার ফলে নাট্য উৎকর্ষ কেন্দ্রের করোনা হাসপাতালটি আমরা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছি। আপাতত বালুরঘাট সদর জেলা হাসপাতালে একটি আলাদা করোনা ইউনিট খোলা হচ্ছে। সেখানেই সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসা করা হবে। কবে বন্ধ হবে, তা এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে খুব শীঘ্রই তা বন্ধ হবে।’
অন্যদিকে এবিষয়ে কোভিড হাসপাতালে অস্থায়ী কর্মী মৃত্যুঞ্জয় দেব চৌধুরী বলেন, তিনি আগে রেলে শ্রমিকের কাজ করতেন ৷ তারপর প্রায় ২ বছর আগে এই কাজে ঢোকেন। এখন শুনছে কাল থেকে কাজ থাকবে না। এদিকে এখনো ৫ মাসের বকেয়া বেতন বাকি রয়েছে। কী করে এখব সংসার চলবে? বাড়ি অসুস্থ মা আছে। ভাবলেই কান্না চলে আসছে। আবার হয়তো দিন মজুরের কাজ করতে হবে। তাদের দাবি সরকার তাদের জন্য বিকল্প কাজের ব্যবস্থা করুক ৷ তা না হলে আত্মহত্যা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।
আরও পড়ুন: Manoranjan Byapari: ‘বিহারী’ মানেই ‘বিমারি’! এবার মুখ খুললেন মনোরঞ্জন