Balurghat Minor Marriage: পরনে বেনারসি, বাথরুমে গিয়ে বাবার মোবাইল থেকে ফোন… বিয়ের দিনই বাবার কীর্তি ফাঁস করল মেয়ে

Balurghat Minor Marriage: নাবালিকা চেয়েছিল উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষটা পাশ করতে। তারপর উচ্চশিক্ষিত হতে চেয়েছিল সে।

Balurghat Minor Marriage: পরনে বেনারসি, বাথরুমে গিয়ে বাবার মোবাইল থেকে ফোন... বিয়ের দিনই বাবার কীর্তি ফাঁস করল মেয়ে
নাবালিকার বিয়ে রুখল পুলিশ (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 24, 2022 | 7:07 AM

দক্ষিণ দিনাজপুর: প্যান্ডেল বাঁধা হয়ে গিয়েছে। হাতে মেহেন্দিও। আত্মীয়রাও বাড়িতে আসতে শুরু করেছিলেন। পাত্রীর পরনে উঠেছিল লাল রঙা বেনারসি। এরইমধ্যে বাবার মোবাইলটা নিয়ে লুকিয়ে পাত্রী ফোন করে দিয়েছিল আসল জায়গায়। একেবারের বিয়ের মণ্ডপে ছাদনাতলায় সিঁদুর দানের আগেই হাজির পুলিশ। প্রথমে স্কুল, পরে থানায় ফোন করে নিজের বিয়ে নিজে আটকাল নাবালিকা। প্রতিবেশীদের কথায়, নিম্নবিত্ত পরিবারে কঠোর অনুশাসনের মধ্যে বড় হয়েও মারাত্মক দুঃসাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে ওই নাবালিকা। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের চকভগু এলাকার ওই নাবালিকাকে এখন দৃষ্টান্ত করছে পুলিশও। পুলিশ ওই নাবালিকার বাবাকে গ্রেফতার করেছে।

নাবালিকা চেয়েছিল উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষটা পাশ করতে। তারপর উচ্চশিক্ষিত হতে চেয়েছিল সে। কিন্তু দিনমজুরির আয়ে যেখানে সংসারে নুন আনতে পানতা ফুরোয়, সেখানে উচ্চশিক্ষা ছিল ওঁদের কাছে বিলাসিতা। মেয়ের বিয়ে ঠিক করে ফেলেছিলেন দিনমজুর বাবা। মেয়ে রাজি ছিল না প্রথম থেকেই। বারবার সেকথা বাড়িতে জানিয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। মেয়েটা চেয়েছিল অন্তত তাকে যেন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাটা পাশ করতে দেওয়া হয়। কিন্তু পেশায় মাছ ব্যবসায়ী পাশের গ্রামের ছেলেকে হাতছাড়া করতে চায়নি পরিবার।

বিয়ের দিন ঠিক হয়ে গিয়েছিল। দুই বাড়ির আয়োজনও সারা। বিয়ের দিনেও বাবাকে বারবার বলেছিল মেয়েটা। কিন্তু শোনেননি তিনি। বাধ্য হয়েই বাবা যখন কাজে ব্যস্ত, পকেট থেকে মোবাইলটা বার করে নিয়েছিল সে। তারপর প্রথম ফোনটা স্কুলের শিক্ষিকাকে, আর তার পরের ফোনটা পুলিশ ও চাইল্ড লাইনে!

ফোন পেয়েই একেবারে পুলিশ ওই নাবালিকার বাড়িতে চলে যায়। নাবালিকার বাবার সঙ্গে কথা বলে। পুলিশের সামনেই কান্নায় ভেঙে পড়ে নাবালিকা। নাবালিকা মেয়েকে জোর করে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ বাবাকে গ্রেফতার করেছে। নাবালিকার বাবাকে পুলিশ বালুরঘাট জেলা আদালতে তোলে। নাবালিকা বিবাহ আইনে পুলিশ বাবার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। ওই কিশোরীকে রায়গঞ্জের একটি হোমে বুধবার বিকেলে পাঠানো হয়।

স্কুল, চাইল্ড লাইন ও প্রশাসনের তরফে বাড়ির সদস্যদের বোঝানো হয়। কিন্তু তা মানতে চায়নি পরিবার। পুলিশ চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমেটির হাতে নাবালিকাকে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাকে আপাতত রায়গঞ্জের এক হোমে পাঠানো হয়েছে।

বালুরঘাট সদর ডিএসপি হেডকোয়ার্টার সোমনাথ ঝাঁ বলেন, “ওই নাবালিকাকে কুমারগঞ্জে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এরপর ওই নাবালিকা নিজে স্কুলে ফোন করে বিষয়টি জানায়। তারপর সেই বিয়ে বন্ধ করে নাবালিকাকে উদ্ধার করে আনা হয়। পাশাপাশি নাবালিকার বাবাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের তরফে চাইল্ড ম্যারেজ নিয়ে নানাভাবে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে।”

নদীপার এনসি গার্লস হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রীতা ধর বলেন, “বিষয়টি ফোনের মাধ্যমে আমাদের জানায় ওই ছাত্রী। এরপর পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় বিয়ে বন্ধ করা হয়। এর আগেও ওই নাবালিকা স্কুলে এসে জানিয়েছিল। ওই পরিবারকে বোঝানো হয়েছিল। কিন্তু শোনেনি। এখন সে হোমে রয়েছে। সামনেই পরীক্ষা রয়েছে।”

আরও পড়ুন: কানে এসেছিল অদ্ভূত শব্দ, মধ্যরাতে এক ব্যক্তি গাড়ি দাঁড় করিয়ে কলকাতার রাস্তায় সমবয়সী দুই যুবককে যে অবস্থায় দেখলেন…