বালুরঘাট : দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুর পুরসভা ফের একবার দখল নিল তৃণমূল। গতবারের পুরো নির্বাচনের থেকে আরও বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বালুরঘাট পুরসভার মসনদে বসছে তৃণমূল কংগ্রেস। পুরসভার ২৫ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৩ টি ওয়ার্ডেই জয়লাভ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দুটি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে বামফ্রন্ট। পুরসভার ১৭ নং ওয়ার্ডে আরএসপি ও ২০ নং ওয়ার্ডে সিপিআএম প্রার্থী জয়ী হয়েছে। সেই জায়গায় বিজেপি খাতায় খুলতে পারেনি। এমনকি বেশিরভাগ ওয়ার্ডেই বিজেপি তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
অন্যদিকে গঙ্গারামপুর পুরসভা গতবারের মত এবারও বিরোধী শূন্য করে তৃণমূল কংগ্রেস জয়ী হয়েছে। ১৮ টি ওয়ার্ডেই তৃণমূল কংগ্রেস জয়ী হয়েছে। এদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের গড় বালুরঘাট। পুরভোটে রাজ্য সভাপতির গড়েই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল বিজেপি। পুরভোটে বালুরঘাট পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে দাপিয়ে বেড়ালেও ২৫ টি ওয়ার্ডের মধ্যে একটি ওয়ার্ডেও নিজেদের দখলে আনতে পারেনি। খোদ সুকান্ত মজুমদারের ওয়ার্ড ২২ নম্বরেই জিততে পারেনি বিজেপি। সেই ওয়ার্ডে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর পুত্রবধূ প্রদীপ্তা চক্রবর্তী। এদিকে বালুরঘাট পুরসভায় একাধিক ওয়ার্ডে বিজেপির থেকে বামেরাই ভাল ফল করেছে বলে জানা গিয়েছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি যে শহরের, সেই শহরেই কার্যত ধূলিসাৎ হওয়ার ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এবিষয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, “ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে। বুথে বুথে তৃণমূল কর্মীরা বুথ জ্যাম করেছে। বালুরঘাটের ২২ নম্বর বুথেও তৃণমূল প্রার্থী নিজে বুথের সামনে দাঁড়িয়েছিল। যার ফলে মানুষ আতঙ্কেই তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে। আমাদের অনেক কর্মীদের ভয় দেখিয়ে আতঙ্কিত করেছে। যার ফলে সাংগঠনিক দুর্বলতা হয়েছে।” তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, “তৃণমূল ও বামেরা দুইজন দুইজনকে সাহায্য করছে। তাই এই ফলাফল। এইভাবে বেশিদিন নির্বাচন করা যাবে না।”
অন্যদিকে এই বিষয়ে তৃণমূলের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র বলেছেন, “গতবার পুরভোটে বালুরঘাট তৃণমূলের দখলে থাকলেও সেইবার মাত্র ১৪ টি আসন পেয়েছিলাম। কিন্তু এবার ২৩ টি আসন পেয়েছে তৃণমূল। বালুরঘাটে এত সুন্দর ফল আমরাও আশা করতে পারিনি। বিজেপির রাজ্য সভাপতির গড় হলেও মানুষ বিজেপির প্রতি বিশ্বাস হারিয়েছে। তাদের প্রতি আর মানুষের আস্থা নেই। গোটা পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির যে উত্থান হয়েছিল, এখন তা একেবারেই নিম্নমুখী তা বোঝাই যাচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের ম্যাজিকে বিজেপি ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। যার ফলে জেলার দুই পুরসভাতেই অভূতপূর্ব ফল হয়েছে। এই জয়ের জন্য আমাদের কর্মী ও সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ জানাই।”
আরও পড়ুন : West Bengal Municipal Election Results 2022 : অপরাজিত বাম, তাহেরপুরকে মডেল করে ঘুরে দাঁড়াবে লাল ফৌজ?