
শিলিগুড়ি : মৃত চিতাবাঘের মাথাটা টেনে ধরে সেলফি তুলেছেন কয়েকজন যুবক। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করা হয়েছে সে সব ছবি। আর সেই সূত্র ধরে অভিযান চালাতে গিয়েই নজরে এল আসল ঘটনা। শুধু মৃত বাঘের সঙ্গে সেলফি তোলাই নয়, সেই চিতাবাঘ কেটে মাংস রান্না করে খেয়ে ফেলেছে ওই তিন যুবক। তারপর সেই বাঘের ছাল বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করছিল তারা। সেই সময়েই হাতেনাতে ধরে ফেলেন বন দফতরের আধিকারিকরা।
শিলিগুড়ি মহকুমার ঘোষপুকুর এলাকার ঘটনা। চিতাবাঘের চামড়া উদ্ধার হতেই পিছনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে এলাকায়। এসএসবির গোয়েন্দা বিভাগ এবং ঘোষপুকুর বনদফতরের যৌথ অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে তিনজনকে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে প্রথমে দুই বাইক আরোহীকে ধরে তল্লাশি চালানো হয়। পরে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়। এলাকায় এমন ঘটনা এই প্রথম বলেই জানাচ্ছেম পুলিশ ও বনদফতরের আধিকারিকরা।
শিলিগুড়ির কমলা চা বাগানের কাছ থেকে প্রথমেই গ্রেফতার করা হয় ২৪ বছরের পিতালুস কারকেট্টা এবং ১৮ বছর বয়সের মুকেশ কারকেট্টাকে। বাইকে তল্লাশি চালিয়ে চিতাবাঘের চামড়া উদ্ধার হয়। এগুলি নেপালে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করার চেষ্টা চলছিল বলে জানা গিয়েছে। পরে অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে মালবাজারের রানীচেরা চা-বাগান থেকে তাপস খুরার নাম উঠে আসে। অভিযান চালিয়ে পরে তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে বাঘের নখ উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি এই চিতাবাঘটি শিকার করেছিলেন তাঁরা।
ধৃতরা আরও জানিয়েছেন, এরপরে তাঁরা সকলেই বাঘের মাংস খাওয়ার পাশাপাশি চামড়া ছাড়িয়ে নেয়। এরপর চামড়া ও নখ ছাড়িয়ে সেগুলি গোপনে নেপালে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করার মতলব ছিল। এ দিন ধৃত তিন জনকে ফাঁসিদেওয়া পুলিশের হাত তুলে দেওয়া হয়েছে। শনিবার তাঁদেরকে আদালতে তোলা হবে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে এ ধরনের ঘটনা এই এলাকায় এই প্রথম।
বন দফতরের রেঞ্জ অফিসার সোনম ভুটিয়া জানিয়েছেন, তাঁরা প্রথমে একটা ফেসবুক পোস্ট দেখেছিলেন। মৃত বাঘের সঙ্গে ছবি তুলে পোস্ট করছিলেন অনেকে। নজর রাখছিলেন তাঁরা। পরে তাঁরা জানতে পারেন বাঘের ছাল পাচার হচ্ছে। তখনই ঘটনার যোগসূত্র খুঁজে বের করা হয়। ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোলের সঙ্গে যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতরা করা হয়।
আরও পড়ুন : TV9 Impact: TV9 বাংলার চেষ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হল মুসকান, মিলল মাধ্যমিক পরীক্ষার সুযোগও