‘দার্জিলিঙের গর্ব বিক্রি করতে চলেছে বিজেপি সরকার’, টয় ট্রেন নিয়েই পথে অনীত

Toy Train: কেন্দ্রীয় নীতি আয়োগের ঘোষণা অনুযায়ী বেসরকারিকরণের দিকে যেতে পারে একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। সম্প্রতি, দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ অন্যান্য বেশ কিছু সংস্থার সঙ্গে টয় ট্রেনও বেসরকারিকরণের পথে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন

দার্জিলিঙের গর্ব বিক্রি করতে চলেছে বিজেপি সরকার, টয় ট্রেন নিয়েই পথে অনীত
অনীত থাপা, ছবি: টুইটার

| Edited By: tista roychowdhury

Aug 27, 2021 | 5:31 PM

দার্জিলিঙ: সদ্যই নিজের নতুন দলের ঘোষণা করেছেন পাহাড়ে নিজের নতুন দল প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করেছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার অন্যতম প্রাক্তন নেতা অনীত থাপা (Anit Thapa)। এ বার, দার্জিলিঙের গর্ব বিক্রি করতে চলেছে বিজেপি সরকার এই অভিযোগ তুলে পথে নামল অনীত থাপার নেতৃত্বাধীন মোর্চা। শুক্রবার সকালে টয়ট্রেন এবং দার্জিলিং হিমালয়ান রেলেওয়ের সম্পত্তি বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে কর্মসূচি পালন করলেন অনীত-অনুগামীরা।

এদিন, সুকনা থেকে টয় ট্রেনে চড়ে দার্জিলিঙের প্রত্যেক স্টেশনে প্রতিবাদ দেখানো হয়। সুকনা, রংটং, তিনধারিয়া, ঘুম, দার্জিলিং, কার্শিয়াং প্রতিটি স্টেশনেই সকাল ‍১১টা থেকে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়। মোর্চা নেতাদের দাবি, টয় ট্রেন কেবল রাজ্যের নয়, দেশের গর্ব। সঙ্গে রয়েছে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমাও। সেখানে টয় ট্রেনের বেসরকারিকরণ হলে ক্ষতি হবে রেলকর্মীদের। শুধু তাই নয়, এতে টয় ট্রেনের ভাড়া যেমন বাড়বে তেমনই যাত্রী না হলে বন্ধ করে দিতে হবে পরিষেবা। সেক্ষেত্রে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমা হারাতে পারে দার্জিলিঙের একান্ত নিজস্ব এই টয় ট্রেন।

প্রতিবাদ বিক্ষোভ কর্মসূচি, নিজস্ব চিত্র

অনীত-মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপাত্র কেশবরাজ পোখরেল বলেন, “টয় ট্রেন আমাদের গর্ব। কিন্তু, সেই গর্বকেই ধূলিসাত্‍ করতে চাইছে বিজেপি সরকার। তাই আমরা প্রতিবাদে নেমেছি। এই কর্মসূচিতে কোনও রাজনীতি রঙ বা পতাকা থাকবে না। পাহাড়ের সব মানুষকে আমরা এতে যোগ দিতে অনুরোধ করছি। প্রয়োজনে আমরা গণস্বাক্ষর অভিযানও করব।”

কেন্দ্রীয় নীতি আয়োগের ঘোষণা অনুযায়ী বেসরকারিকরণের দিকে যেতে পারে একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। সম্প্রতি, দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ অন্যান্য বেশ কিছু সংস্থার সঙ্গে টয় ট্রেনও বেসরকারিকরণের পথে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। টয় ট্রেনের টিকিট বিক্রি কেবল নয়,   বিপণন, বিজ্ঞাপন, স্টেশন এমনকী রেলের জায়গা ব্যবহারের কথাও বলেছেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু, টয় ট্রেনের লাইন ও স্টেশনের ধারে অনেক মানুষের বাস। বেসরকারিকরণ হলে তাঁরাই বা কোথায় যাবেন? মোর্চা নেতা কেশব পোখরেল জানিয়েছেন প্রয়োজনে প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তোলা হবে। কিন্তু, কখনই রেললাইনে পারের বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করা যাবে না বলেই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন মোর্চা নেতা।

কেন্দ্রীয় সরকারের এই ঘোষণার পর থেকেই পাহাড়ে কার্যত কিছুটা মানুষের ‘রোষানলে’ বিজেপি। রেলের বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন থেকে শুরু করে পর্যটন সংগঠন, ব্যবসায়ীরাও সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব। এই মর্মে চিঠি পাঠানো হয়েছে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে সিদ্ধান্ত পুনর্বার বিবেচনার জন্য আর্জি জানানো হয়েছে। যদিও, দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা বলেন, “বেসরকারিকরণ ও লিজ দেওয়ার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। সেই পার্থক্য যাঁরা বোঝেন না তাঁরাই প্রতিবাদ করছেন। সেই বিষয়টি আগে বুঝতে হবে। কোনওভাবেই এতে টয় ট্রেনের হেরিটেজ তকমায় আঁচ পড়বে না।”

সম্প্রতি, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার পদ ছেড়েছিলেন বিনয় তামাং (Binay Tamang)। ক্ষমতা তুলে দিয়েছিলেন বিমলের হাতে। কার্যত ‘একা’ হয়ে পড়েছিলেন অনীত থাপা (Anit Thapa)। তখনই কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল, নতুন দল গড়তে চলেছেন অনীত। চলতি মাসেই  সেই জল্পনায় সিলমোহর পড়ে। আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই নতুন দল ঘোষণা করতে চলেছেন অনীত থাপা। সাংবাদিক বৈঠক করে এমন কথাই ঘোষণা করেন অনীত।

শুক্রবারের সাংবাদিক বৈঠকে অনীত বলেন, “পাহাড় সমস্যার সমাধান কোনও দলই করতে পারেনি। পাহাড়ের উন্নয়ন নিয়ে কেউ চিন্তা করেনি। সেই কথা মাথায়  রেখেই নতুন দল গড়তে চলেছি। এই বছরের সেপ্টেম্বরেই নতুন দলের নাম ঘোষণা করব। আমাদের দল পাহাড়ের কথা বলবে। পাহাড়ের মানুষের কথা, তাঁদের উন্নয়নের জন্য চিন্তা করবে।” তাহলে, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার রাশ কি পুরোপুরি বিমলের হাতেই তুলে দিলেন অনীত? যদিও, সেদিন সে প্রশ্ন এড়িয়ে যান তিনি। আরও পড়ুন: ফুঁসছে মাল নদী, চোখের নিমেষে হড়পা বানে জলের তলায় ১১ টি বাড়ি!