Army Helicopter Crash: কপ্টার দুর্ঘটনার ৪ দিন পর কফিনবন্দি হয়ে ঘরে ফিরছেন সতপল রাই
Satpal Rai Death: ভয়াবহ ওই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে যাঁরা পড়েছিলেন তাদের বেশিরভাগের দেহই আগুনে ঝলসে গিয়েছিল। এমনকি প্রাথমিকভাবে দেহগুলি শনাক্তকরণেও সমস্যা হচ্ছিল।
শিলিগুড়ি: বুধবার তামিলনাড়ুতে ভয়াবহ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন সস্ত্রীক প্রতিরক্ষা প্রধান বিপিন রাওয়াত (CDS Bipin Rawat) সহ আরও ১১ জন সেনা আধিকারিক। CDS বিপিন রাওয়াতের সঙ্গে কপ্টার দুর্ঘটনাতেই প্রাণ হারান তাঁর দেহরক্ষী ও দার্জিলিঙের বাঙালি জওয়ান সতপল রাই।
রবিবার, সতপলের দেহ শিলিগুড়ির বাগডোগরা হয়ে ব্যাঙডুবির সেনাছাউনিতে নিয়ে আসা হয়। সেখানে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। উপস্থিত ছিলেন দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা। রাজ্য সরকারের তরফে ছিলেন শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান গৌতম দেব।সেনাছাউনি থেকে সতপলের দেহ নিয়ে যাওয়া হবে দার্জিলিঙের তাকদায় তাঁর গ্রামের বাড়িতে। উপস্থিত ছিলেন সতপলের পরিবারও।
কপ্টার দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় সতপল রাইয়ের। শনিবার দিল্লি সেনা হাসপাতালে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে সতপলের দেহ শনাক্ত করা হয়। তাঁর পরিবারকেও নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লিতে। সেখান থেকেই রবিবার সকালে নিজের বাড়িতে কফিনবন্দি হয়ে ফিরছেন সতপল।
ভয়াবহ ওই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে যাঁরা পড়েছিলেন তাদের বেশিরভাগের দেহই আগুনে ঝলসে গিয়েছিল। এমনকি প্রাথমিকভাবে দেহগুলি সনাক্তকরণেও সমস্যা হচ্ছিল। প্রাথমিকভাবে সেনা সর্বাধিনায়ক বিপিন রাওয়াত, তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত এবং ব্রিগেডিয়ার লখিন্দর সিং লিড্ডারের দেহ সনাক্ত করা গিয়েছিল। বাকিদের নিথর দেহ দিল্লির সেনা হাসপাতালে রাখা ছিল এবং পরিবারের সদস্যদের দেহগুলি সনাক্ত করার অনুরোধ করেছিল সরকার।
জানা গিয়েছে, ওই দুর্ঘটনায় নিহত ছয় সেনা আধিকারিক, ল্যান্স নায়েক বিবেক কুমার, জুনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার প্রদীপ, উইং কমান্ডার পিএস চৌহান, জুনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার রানা প্রতাপ দাস, ল্যান্স নায়েক বি সাই তেজা এবং স্কোয়াড্রন লিডার কুলদীপ সিংয়ের দেহ ইতিমধ্যেই সনাক্ত করা হয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে তাদের দেহ গুলি বিমানকে করে তাদের বাড়ির নিকটবর্তী বিমানবন্দরে পৌঁছে দেওয়া হবে। দেহগুলি পাঠানোর আগেই সেনা হাসপাতালে তাদের শেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে।
জুনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার প্রদীপের কফিন সকাল ১১ টায় তামিলনাড়ুর সুলুর বিমান ঘাঁটিতে অবতরণ করার কথা এবং সেখান থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে তাঁর বাড়ি ত্রিশুরে নিয়ে যাওয়া হবে। ল্যান্স নায়েক বি সাই তেজার কফিনটি দুপুর ১ টার মধ্যে বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে অবতরণ করা হবে এবং সেখান থেকে অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তুর জেলায় তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। ল্যান্স নায়েক কুমারের কফিন হিমাচল প্রদেশের গাগ্গাল বিমানবন্দরে পৌঁছবে এবং তারপর কাংড়া জেলায় তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। স্কোয়াড্রন লিডার কুলদীপ সিংয়ের কফিন সকাল ১১.৪৫ টার মধ্যে রাজস্থানের পিলানি বিমানবন্দরে পৌঁছাবে এবং তারপরে ঝুনঝুনু জেলায় তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে।
উল্লেখ্য, হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন দেশের প্রথম প্রতিরক্ষা প্রধান বিপিন রাওয়াত। তাঁরসঙ্গে স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াক সহ ১১ জন সেনা আধিকারিকের মৃত্যু হয়েছে। সিডিএসের মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই দেশ জুড়ে শোকের ছায়া। প্রয়াত প্রতিরক্ষা প্রধান বিপিন রাওয়াত যে হেলিকপ্টারটিতে ছিলেন, সেটি এমআই-১৭। এমআই সিরিজ়ের সর্বাধুনিক হেলিকপ্টার হল এই এমআই-১৭-ভি-৫। রাশিয়া থেকে যে কপ্টারগুলি ভারত পেয়েছে, তার মধ্যে সর্বাধুনিক হল এই ভি-৫ মডেল। সাধারণত এই ধরনের হেলিকপ্টারগুলিতে ডবল ইঞ্জিন থাকে। অর্থাৎ, যদি ছোটখাটো কোনও যান্ত্রিক গোলযোগ হয়, বা যদি একটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়, তাহলে তা সামাল দেওয়ার জন্য বিকল্প একটি ইঞ্জিন থাকে। যান্ত্রিক গোলযোগ যে কোনও সময়েই হতে পারে। কিন্তু তারপরেও বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরা থেকেই যাচ্ছে। বায়ুসেনা ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: TMC Councilor Suicide Case: তৃণমূল কাউন্সিলরকে আত্মহত্যার প্ররোচনা, ১ বছর পর গ্রেফতার আপ্তসহায়ক!