Sivok-Rangpo Railway: সুড়ঙ্গে সাফল্য রেলের, সেবক-রংপো রেলপথের ৮ টানেলের এডিট নির্মাণ শেষ
Sivok-Rangpo Railway: এখানেও কাজ করছেন বাংলার বহু ইঞ্জিনিয়ার এবং শ্রমিক। তাঁরাও জানালেন তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা। এদের অনেকেই উত্তরকাশীর প্রকল্পেও কাজ করেছেন। এখন এই প্রকল্পে রয়েছেন। তারা বললেন, "দুর্ঘটিনা বলে আসে না। কিন্তু যে পদ্ধতিতে সুড়ঙ্গ নির্মাণ হয় তাতে এমন ঘটনা বিরল।"
শিলিগুড়ি: বাংলায় সাফল্য ভারতীয় রেলের। সেবক-রংপো রেলপথে আটটি টানেলে এডিট (Adit) নির্মাণ কাজ শেষ করল ইরকন। এই প্রকল্পে ৪৫ কিলোমিটার যাত্রাপথে ১৪টি সুড়ঙ্গপথে ৩৫কিমি সুড়ঙ্গযাত্রা করবে ভারতীয় রেল। তার কাজ জোরকদমে চলছে। বস্তুত, সাল্কিয়ারায় সুড়ঙ্গ খুঁড়তে গিয়ে বিপর্যয় গোটা দেশবাসীর জানা। ১৭দিনের লড়াই শেষে উদ্ধার হয়েছেন ৪১ শ্রমিক। আমাদের রাজ্যেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ চলছে। এখানে সাফল্যের সঙ্গেই কাজ চালাচ্ছেন কর্মীরা। পাহাড় কেটে সুড়ঙ্গ পথে একটু একটু করে এগোচ্ছেন শ্রমিকরা৷ সেবক-রংপো রেলপথে দ্রুতগতিতে কাজ এগোচ্ছে। কাজ করতে গিয়ে ভুলচুক হলেই সমুহ বিপদ। ১৪টি ট্যানেলের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন যাত্রাপথ ছিল টানেল ১-এ। সেই ট্যানেলের এডিট সম্পন্ন হল বুধবার।
কীভাবে এগোচ্ছে কাজ? উত্তরকাশীর ঘটনা সামনে রেখে কী কী সতর্কতা রয়েছে এখানে? সবটাই ধরা পড়ল টিভি ৯ বাংলার ক্যামেরায়।
সেভক থেকে রংপো। পাহাড়ের ভিতর দিয়ে গুহাপথে একাধিক টানেল পেরিয়ে দৌড়বে ট্রেন। প্রথম পর্যায় শেষে রংপো থেকে নাথুলা পৌঁছবে ট্রেনটি। সীমান্তে যাবে রসদ ও সেনাও। প্রায় ৪৫ কিলোমিটার রাস্তায় রয়েছে ১৪টি সুড়ঙ্গপথ। আর সেই সুড়ঙ্গের এক্কেবারে সুড়ঙ্গের ভিতরে পৌঁছল টিভি ৯ বাংলা। যেখানে বোরিংয়ের কাজ চলছে সেখানকার কর্তারা এবং কর্মীরা জানালেন, একটু করে খোদাই করে সিমেন্ট দিয়ে মুড়ে দিয়ে সাপোর্ট দিতে হচ্ছে গুহাপথে। এভাবে NATM পদ্ধতি ব্যবহার করে এগোচ্ছে কাজ। কারণ কাজ এভাবে না এগিয়ে দ্রুত এগোতে গেলেই বিপদ। তাই একটু একটু করে এগোচ্ছেন তাঁরা।
প্রজেক্ট ডিরেক্টরের কথায়, সবচেয়ে কঠিন ছিল এই টানেল ১ এর কাজ। কারণ এই ৪.২ কিলোমিটা লম্বা টানেল যে এলাকায় তৈরি হচ্ছে সেখানকার মাটি মূলত বালি-মাটি। তার ধসের প্রবল সম্বাবনা মাথায় রেখেই এগোতে হয়েছে। ইতিমধ্যেই টানেলের এডিট নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। ঘটা করেই তার ‘সেলিব্রেশন’ সারলেন কর্মী-ইঞ্জিনিয়াররা।
এডিট (Adit) কী ?
শ্রমিক ও যাত্রী নিরাপত্তায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এটি। মূল টানেলের ভিতর থেকে আরও ছোট ছোট কিছু সুড়ঙ্গ পথ খোঁড়া হয় (মূলত শ্রমিকরা বিপদে পড়লে যাতে উলটো দিক দিয়ে বের হতে পারেন) সেই পথকেই ইঞ্জিনিয়ারিং এর ভাষায় বলা হয় এডিট। আগামী দিনে রেল চলাচল শুরুর যদি দুর্ঘটনা ঘটেও, এই পথেই গুহার ভিতর ঢুকবে অ্যাম্বুলেন্স ও উদ্ধারকারী দল। সতর্কতা বিধি মেনে সাফল্যের সঙ্গে কাজ এগিয়ে আটটি টানেলে এই কাজ সেরে কার্যত গুহার ভিতরেই উৎসবে মাতলেন সকলে।
যারা দিনরাত কাজ করছেন, তারা জানালেন, উত্তরকাশীতে যে বিপর্যয় ছিল তা দেখে উদ্বেগে ছিলেন তারাও। কিন্তু ওখানেও উদ্ধার হয়েছেন কর্মীরা। এখানে যাবিতীয় নিরাপত্তা মেনে নিয়ে কাজ এগোচ্ছেন ইরকন নিযুক্ত কর্মীরা। উত্তরকাশীর শ্রমিকদের নিয়ে উৎকন্ঠা ছিল। এদের মধ্যে কেউ কেউ উত্তরকাশীর প্রকল্পেও কাজ করেছেন। আশায় ছিলেন ওই কর্মীরা উদ্ধার হবেই। আর ৪১ শ্রমিকের উদ্ধারের খবর সামনে আসতেই এখানেও ফের কাজের গতি বেড়েছে।
এখানেও কাজ করছেন বাংলার বহু ইঞ্জিনিয়ার এবং শ্রমিক। তাঁরাও জানালেন তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা। এদের অনেকেই উত্তরকাশীর প্রকল্পেও কাজ করেছেন। এখন এই প্রকল্পে রয়েছেন।
কতটা এগিয়েছে প্রকল্পের কাজ?
সবটা খতিয়ে দেখতে গুহাপথে শেষ সীমান্তে পৌঁছে গেল টিভি ৯ বাংলার ক্যামেরা। টিবিএম (TBM) মেশিন দিয়ে পাথর খোদাই কীভাবে হয় তা সরেজমিনে দেখালেন কর্মীরাই। তাঁরা জানিয়ে দিলেন,সাপোর্ট সিস্টেম ব্যবহার করে এভাবে এগোয় কাজ।
প্রজেক্ট ডিরেক্টরের দাবি, নির্ধারিত ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন হয়ে যেতে পারে। সবচেয়ে বাধা ছিল টানেল ওয়ান নির্মাণ। এলাকার মাটির সমস্যায় ভুগতে হচ্ছিল। কিন্তু সমস্যা অতিক্রম করে এখন সমস্ত টানেলেই কাজ এগোচ্ছে দ্রুত গতিতে। ফলে গুহাপথে বাংলা-সিকিমের রেল যোগাযোগে এই প্রকল্প চালু হওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
শুধু পর্যটক নয়, দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে এই প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীনা সীমান্তে নাথুলা অবধি এভাবেই ধাপে ধাপে রেলপথ নির্মাণ করে শজে সেনা জওয়ান ও রসদ পৌঁছবে সীমান্তে। ফলে সকলের নজর এই প্রকল্পে। সাফল্যের সঙ্গে এই প্রকল্পের কাজ এগাওনোর ক্ষেত্রে বাধা হটিয়ে কাজ এগিয়ে চলায় উৎসাহিত রেলকর্তারাও।