অস্তিত্বই নেই, অথচ এমন পড়ুয়ার নামে সংখ্যালঘু বৃত্তি! কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ২৫ লক্ষ টাকা নয়ছয় শিলিগুড়িতে

Siliguri: উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ ছাত্রছাত্রীর নামও রয়েছে ওই তালিকায়। যদিও কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, তাঁদের কেউ কেন্দ্রীয় বৃত্তির আবেদন করেননি।

অস্তিত্বই নেই, অথচ এমন পড়ুয়ার নামে সংখ্যালঘু বৃত্তি! কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ২৫ লক্ষ টাকা নয়ছয় শিলিগুড়িতে
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 11, 2021 | 8:30 AM

শিলিগুড়ি: সরকারি স্কুল বা বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল, অথবা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। সবেতেই রয়েছে ভূতুড়ে মেধাবি সংখ্যালঘু পড়ুয়া। কেন্দ্রীয় বৃত্তি পোর্টালের তথ্য বলছে, প্রতি বছর বিপুল অঙ্কের টাকা তাঁরা বৃত্তিও পাচ্ছেন। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিলেই দেখা যাচ্ছে বাস্তবে হয় পড়ুয়ারা কেউ আবেদনই করেননি, কোথাও আবার তালিকার নামের কোনও পড়ুয়ার অস্তিত্ব নেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। সম্প্রতি রায়গঞ্জে একই অভিযোগ ওঠার পর পুলিশ এই প্রতারণা চক্রের হদিশ পেল। গ্রেফতার হয়েছে বেশ কয়েক জন। দেখা যাচ্ছে, সব মিলিয়ে কেন্দ্রের বৃত্তি পোর্টালে ভুয়ো নাম ঢুকিয়ে জালিয়াতি করে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা।

২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে শিলিগুড়ি মহকুমার সুকনায় ইলা পাল চৌধুরী মেমোরিয়াল স্কুলে অন্তত কেন্দ্রের তালিকা অনুযায়ী বৃত্তি পেয়েছেন ১০৬ পড়ুয়া। প্রি ম্যাটিক স্কলারশিপে এত পড়ুয়ার বৃত্তি পাওয়ার বিষয়ে কিছুই জানে না স্কুল।

প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য, “তালিকায় যেসব নাম দেখছি, এমন কেউ আমাদের স্কুলে পড়ে না। সব নাম ভুয়ো। কারা বৃত্তি পেল জানি না। স্কুলের নাম কীভাবে ঢুকল তাও জানি না।”

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ ছাত্রছাত্রীর নামও রয়েছে ওই তালিকায়। যদিও কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, তাঁদের কেউ কেন্দ্রীয় বৃত্তির আবেদন করেননি। অবিলম্বে এ নিয়ে বিস্তারিত তদন্তের দাবি উঠেছে। কারা কীভাবে টাকা লোপাট করছেন, তা তদন্ত করে প্রকাশ্যে আনার দাবি জানিয়েছেন উপাচার্য সুবিরেশ ভট্টাচার্য।

শিলিগুড়িতে বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ডন বসকো। তালিকা অনুযায়ী ওই স্কুলের ১২ জন বৃত্তি পেয়েছেন। এর মধ্যে আবার বেশ কয়েকজন ছাত্রী। যদিও স্কুলটি কেবল ছাত্রদের। ওখানে কোনও ছাত্রীর পড়ার সুযোগই নেই। স্কুল কর্তারা জানাচ্ছেন, “এমন স্কলার শিপের নাম শুনিনি। আমরা কোথাও তালিকা পাঠাইনি। তাছাড়া তালিকায় মেয়েদের নাম আছে। আমাদের স্কুল কেবল ছেলেদের।”

শিলিগুড়ি সেলসিয়ান কলেজেও একই পরিস্থিতি। সেখানে পোস্ট ম্যাট্রিক স্কলারশিপের নামে তালিকা অনুযায়ী ৬ পড়ুয়া বৃত্তির টাকা পেলেও তাদের খোঁজ দিতে পারেনি কলেজ কর্তৃপক্ষ।

এছারা নকশালবাড়ি হিন্দি স্কুল, চম্পাসারির একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল-সহ বহু স্কুলের ভুয়ো ছাত্রছাত্রীর নামে এভাবে বৃত্তি প্রাপক দেখিয়ে কারা কীভাবে টাকা তুলেছে, তা স্পষ্ট নয়। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য মাইনরিটি সেলের কার্যকরী সভাপতি নাসির আহমেদ যা জানিয়েছেন তা আরো বিস্ফারক।

তাঁর দাবি, “শুধু কেন্দ্রের বৃত্তি নয়, সংখ্যালঘু বৃত্তিতে রাজ্যের প্রকল্পেও পুকুরচুরি হয়েছে। এর আগে প্রতারক চক্রের সদস্যদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন সরকারি আধিকারিক গ্রেফতার হয়েছেন। কিন্তু প্রতারণার কারবার থামেনি।” একই সঙ্গে স্কুলগুলিকে তার অনুরোধ অবিলম্বে এ নিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানান। আরও পড়ুন: দফায় দফায় বিক্ষোভ, ঘেরাও! অধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পরও আরজিকরে অধরা সমাধান সূত্র