শিলিগুড়ি: কোনও উপসর্গই নেই। পরীক্ষাও করেননি তাঁরা। তাই কোভিড পজিটিভ হওয়ার কোনও প্রশ্নই আসছে না। অথচ সাতসকালে ঘুম থেকে উঠে তাঁরা দেখলেন, তাঁদের বাড়ি স্যানিটাইজেশন হচ্ছে। শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্য দফতরের থেকেই নাকি স্যানিটাইজ করা হচ্ছে তাঁদের বাড়ি। প্রশ্ন করা হলে, স্বাস্থ্যকর্মীদের সাফ জবাব, ‘চুপ করে থাকুন। আপনাদের করোনা হয়েছে। বেশি বাড়াবাড়ি করলে এই এলাকা কনটেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করে দেব।’ এমনই বিচিত্র অভিযোগ উঠল এবার শিলিগুড়িতে। তবে পুরভোটের আবহে এই ঘটনার নেপথ্যে রাজনৈতিক রঙ খুঁজে পাচ্ছেন তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ নেতা তথা নির্দল প্রার্থী বিকাশ সরকার।
ঘটনাটি ঠিক কী হয়েছে?
শিলিগুড়ি ভারতনগর এলাকা। বৃহস্পতিবার সকালে দেখা গেল ওই এলাকায় বেছে বেছে আটটি বাড়িকে স্যানিটাউজ করছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা। কিন্তু বক্তব্য, ওই আটটি পরিবারের কোনও সদস্যই অসুস্থ নন। তাঁরা কেউই করোনা পরীক্ষা করেননি। এমনটাই দাবি তাঁদের। কিন্তু এদিন সাতসকালে এলাকায় এসে হাজির স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা। আটটি পরিবারকে খুঁজে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হল, তাঁরা নাকি করোনা আক্রান্ত!
এই নিয়ে ওই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে স্বাস্থ্য কর্মীদের কথা কাটাকাটি হয়। তাঁদের দেখিয়ে দেওয়া হয় রিপোর্টও। বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিবাদ জানান এলাকার বাসিন্দারা। অভিযোগ, তখন তাঁদের পাল্টা হুমকি দেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। ‘বেশি প্রতিবাদ জানালে এলাকা ব্যারিকেড করে আটকে দেওয়া হবে। কনটেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হবে।’- ঠিক এমনটাই হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সঙ্গে বলা হয়, স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট মিথ্যা নয়।
স্তম্ভিত হয়ে যান বাসিন্দারা। তাঁদের নমুনাই সংগ্রহ করা হয়নি। অথচ তাঁদের রিপোর্ট কীভাবে এল? তাহলে কি জাল রিপোর্ট তৈরি হল? প্রশ্ন উঠছে একাধিক।
এই পরিবারের এক সদস্য বলেন, “আমরা তো কোনও টেস্টই করাই নি। হঠাৎ কীভাবে আমরা কোভিড পজিটিভ হলাম? রিপোর্টই বা এল কোথা থেকে? বাড়িতে লোক এসে হুমকি দিচ্ছে কনটেইনমেন্ট জোন করে দেবে! কী হচ্ছে বোঝা যাচ্ছে না। সাতসকালে দেখি আমাদের বাড়ি স্যানিটাইজ়়ড হয়ে গেল!”
ঠিক এখানেই রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন যুব তৃণমূল নেতা নির্দল প্রার্থী বিকাশ সরকার। তাঁর দাবি, “আমায় টিকিট না দেওয়ার জব্য ওরা বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। এখন আমি নির্দল প্রার্থী। তাই ওদের কন্টেইনমেন্ট জোন করে আটকে দিতেই এসব করা হচ্ছে। ঢাল হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে করোনা। এরা কেউ সোয়াব দিলেন না, তাই কীভাবে ওদের টেস্ট রিপোর্ট এল?” এই ঘটনার সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল শিবির। তৃণমূল প্রার্থী প্রতুল চক্রবর্তী জানান, ভিত্তিহীন ও মিথ্যে অভিযোগ। দলকে বদনাম করতেই দলের নেতা ও প্রার্থীদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করছেন নির্দল প্রার্থী।