শিলিগুড়ি: প্রার্থী পছন্দসই নয়। বদল না করা হলে ভোট বয়কটের পথে হাঁটার হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। শুক্রবার সকালে শিলিগুড়ির ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে এ নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পথে নেমে দলের বিরুদ্ধে সুর চড়ান একাধিক তৃণমূল কর্মী।
এই ওয়ার্ডে প্রার্থী করা হয়েছে প্রতুল চক্রবর্তীকে। অন্যদিকে এই ওয়ার্ডের নেতা পুরনো নেতা বিকাশ সরকারকে ছেঁটে ফেলেছে দল। বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, গৌতম দেবের অনুগামী বিকাশকে টিকিট না দেওয়ার পিছনে তৃণমূলের ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের ভূমিকা রয়েছে। তাঁর প্রস্তাবেই এই তালিকা তৈরি হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তাঁরা।
এদিন সকাল থেকে ২৪ নম্বর ওয়ার্ড সরগরম। শিলিগুড়িতে গৌতম দেবের অনুগামী যুব তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক বিকাশ সরকারকে প্রার্থী না করায় ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। শুক্রবার স্থানীয় ভারতনগরে এ নিয়ে বিক্ষোভে শামিল হন বিকাশ সরকারের অনুগামীরা।
শিলিগুড়ির ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন বিধায়ক শংকর ঘোষ। তৃণমূল প্রার্থী করেছে তৃণমূলের অন্যতম পুরনো নেতা, স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রতুল চক্রবর্তীকে। বৃহস্পতিবার রাতে প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর শুক্রবার সকালে বিক্ষোভ শুরু হয় ভারতনগর এলাকায়। বিকাশ সরকারের অনুগামীদের দাবি, প্রার্থী করতে হবে বিকাশ সরকারকেই। না হলে ভোট বয়কটের হুমকি দেন তাঁরা।
বিকাশ সরকার জানান, “আমি প্রার্থী হবো জেনে প্রস্তুতিও শুরু করেছিলাম। কিন্তু দল অন্য কাউকে যোগ্য মনে করেছে।”
পাশাপাশি ১৮ নম্বর ওয়ার্ডেও টিকিট নিয়ে একটা চাপানউতর তৈরি হয়েছে। টিকিট পাননি বিদায়ী কাউন্সিলর, বরো চেয়ারম্যান ও তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা কোঅর্ডিনেটর নিখিল সাহানি। সেখানেও অসন্তোষ ছড়িয়েছে। এখানে প্রার্থী হয়েছেন সঞ্জয় শর্মা।
২৮ নম্বর ওয়ার্ডেও অসন্তোষের আগুন জ্বলছে শাসকদলের অন্দরে। সেখানে বাম কাউন্সিলর শর্মিলা দাসকে তৃণমূলে যোগদান করানো হলেও প্রার্থী তালিকায় তাঁর নাম নেই। এই পরিস্থিতিতে কেউ কেউ নির্দল হিসাবে লড়াই করার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন বলেই সূত্রের খবর। তবে দলের তরফে বলা হয়েছে, যোগ্যরাই প্রার্থী হয়েছেন। দলের শৃঙ্খলা না মানলে বা কেউ নির্দল হিসাবে লড়লে তাঁদের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে।
এই ধরনের পরিস্থিতি এর আগে কলকাতা পুরসভার ভোটেও দেখা গিয়েছিল। টিকিট না পেয়ে নির্দলের প্রতীকে ভোটেও দাঁড়ান। রাজ্যের প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায় (৬৮ নম্বর ওয়ার্ড) কিংবা সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় (৭২ নম্বর ওয়ার্ড) নির্দল প্রার্থী হিসাবে ভোট দাঁড়ানোর জন্য দল তাঁদের বহিষ্কারেরও সিদ্ধান্ত নেন। অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, এই দুই প্রার্থীই তৃণমূলের প্রার্থীদের কাছে হেরে গিয়েছেন কলকাতার ভোটে।
বৃহস্পতিবার কালীঘাটে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত বক্সীরা। সেখানেই চার পুরনিগমের প্রার্থী তালিকায় সিলমোহর পড়ে। তালিকা প্রকাশের আগে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার সময় দল নজরে রেখেছে প্রার্থীর ভাবমূর্তি স্বচ্ছ কি না, তাঁর জেতার ক্ষমতা রয়েছে কি না আর প্রার্থী তাঁর এলাকায় দলের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখতে পারবেন কি না।
আরও পড়ুন: Bidhannagar Municipal Election: প্রার্থী অপছন্দ, রাস্তায় টায়ার জ্বেলে বিক্ষোভ তৃণমূল কর্মীদের