শিলিগুড়ি: আশা ছিল। কিন্তু, সময় যত যাচ্ছে ততই যেন ক্রমেই ক্ষীণ হচ্ছে সেই আশা। বাম কর্মীদের আশা-ভরসায় কার্যত জল ঢেলে বাংলার কোনও লোকসভা কেন্দ্রেই হুল ফোটাতে পারেননি প্রার্থীরা। কার্যত ‘ব্যর্থ’ সৃজন থেকে সুজন, সেলিম থেকে দিপ্সীতা। সকালে ভোট গণনা শুরুর সময় মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে সেলিম কিছুটা এগিয়ে থাকলেও বেলা বাড়তেই কার্যত নিচে নামতে থাকেন। অন্যদিকে ভোট শতাংশের হিসাবে রাজ্যে বিশেষ কিছু ফায়দা করতে পারেনি বামেরা। অন্যদিকে ‘বন্ধু’ কংগ্রেস মালদহ দক্ষিণে এগিয়ে থেকে কিছুটা যেন মুখ রক্ষা করছে। তবে রাজ্যে যে বাম কংগ্রেস দাগ কাটতে পারল না তা স্বীকার করে নিলেন প্রবীণ বাম নেতা অশোক ভট্টচার্য। যার হাত ধরে এক সময় উত্তরবঙ্গে বামেদের উত্থান, যে ‘অশোক মডেল’ নিয়ে লাগাতার চর্চা চলেছে বাম শিবিরের অন্দরে, সেখানে গত কয়েক বছর ধরে পদ্ম শিবিরের দাপাদাপি দেখা গিয়েছে। এখন আবার ফের ফুটছে ঘাসফুল।
এদিকে ফল প্রকাশ নিয়ে যখন তুমুল শোরগোল চলছে রাজ্য-রাজনীতির আঙিনায় ঠিক সেই মুহূর্তে অশোক ভট্টচার্য বললেন, “বিজেপি বিরোধীতায় রাজ্যে বাম-কংগ্রেসের বদলে মানুষ তৃণমূলকে বেছে নিয়েছে। কিন্তু, কেন রাজ্যে বাম-কংগ্রেস দাগ কাটতে পারেনি।” খানিক আত্মসমালোচনার সুরে বললেন, “রাজ্যে বাম-কংগ্রেস কেন মুখ থুবরে পড়ল তা খতিয়ে দেখতে হবে৷ রাজ্যের মানুষ বিজেপির বিরুদ্ধে আমাদের বদলে তৃণমূলকে বেছে নিয়েছে।”
তবে এদিন সকাল থেকেই এক্সিট ফলের পরিসংখ্যান ওলটপালট করে দেশজুড়ে ভাল ফলের ইঙ্গিত দিচ্ছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট। এদিন তা নিয়ে অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “ইন্ডিয়া জোট ভাল ফল করছে। দেশে ইন্ডিয়া জোটের সাফল্য মোদীর পরাজয়।” প্রসঙ্গত, শেষ পাওয়া আপডেটে দেখা যাচ্ছে যে দুই কেন্দ্রে লড়ছেন খোদ রাহুল গান্ধী সেই দু’টিতেই বিশাল বড় ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন তিনি। তাতেও উচ্ছ্বাসের ছবি দেখা যাচ্ছে হাত শিবিরের অন্দরে।
ইন্ডিয়া জোটের ‘সাফল্যে’ কিছুটা অক্সিজেন মিললেও আক্ষেপ কিন্তু তার কথার পরতে পরতে। নতুন করে ভোট শতাংশ বাড়াতে না পারা নিয়ে অশোকবাবু আরও বলেন, “দু’টো সিট পাব ভেবেছিলাম। বামেদের ভোটব্যাঙ্ক যা আগে চলে গিয়েছিল তাও আর ফিরে আসেনি। রাজ্যে আমাদের তৃণমূলের সঙ্গে জোট ছিল না। রাজ্যে এই জোট হলে লাভ হত কিনা কিছু বলব না। মানুষ আমাদের বেছে নেয়নি। এটা দুর্ভাগ্য।”