Recruitment Scam: ‘বিকাশ ভবনে ইন্টারভিউও করিয়েছিলেন’, এবার চাকরি ‘চুরি’র অভিযোগ রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধেও
Pandua: নাসিরা খাতুন নামে ওই মহিলার অভিযোগ, আব্বাস নাকি ২০১৫ সালে তাঁর পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছিলেন স্কুলে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে।
পাণ্ডুয়া: ইডি বলছে অয়ন ‘সোনার খনি’। অয়নের হাত কতদূর ছড়িয়েছিল, তার হিসেব খুঁজছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। অয়ন শীলের র্যাকেটে কে কে ছিলেন? সেই সব তথ্য খুঁজতে হিমশিম খাচ্ছেন গোয়েন্দারা। আর এরই মধ্যে আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ হুগলির পাণ্ডুয়ায়। নিয়োগ কেলেঙ্কারির (Recruitment Scam) অভিযোগে এবার নাম জড়াল রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত এক শিক্ষকেরও। পাণ্ডুয়ার দাবরা হাই মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন আব্বাস আলি। রাষ্ট্রপতি পুরস্কারও পেয়েছিলেন। ২০২১ সালে চাকরি থেকে অবসর নেন তিনি। এবার তাঁর বিরুদ্ধেই চাকরির জন্য টাকা তোলার অভিযোগ আনছেন পাণ্ডুয়ার বাসিন্দা নাসিরা খাতুন নামে এক গৃহবধূ। শুধু তাই নয়, আব্বাস আলির সঙ্গে নাকি যোগাযোগ ছিল নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার অয়ন শীলেরও। এমনই দাবি ওই মহিলার।
নাসিরা খাতুন নামে ওই মহিলার অভিযোগ, আব্বাস নাকি ২০১৫ সালে তাঁর পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছিলেন স্কুলে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে। শুধু নাসিরাই নন, এলাকার আরও বেশ কয়েকজনের থেকেই নাকি টাকা তুলেছিলেন আব্বাস। নাসিরা বলছেন, তিনি নিয়ম মেনেই আবেদন করে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কিন্তু এরপর চাকরি না হওয়ার কারণে, লোক মারফত শুনতে পেয়ে আব্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন তিনি। টাকাও দিয়েছিলেন। নাসিরার দাবি, এরপর তাঁদের বিকাশ ভবনেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, ইন্টারভিউয়ের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিকাশ ভবনের পিছন দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁদের। তারপর বিকাশ ভবনের দোতলায় নিয়ে গিয়ে একজনের কাছে ডায়েরিতে নাম ও ফোন নম্বর লেখানে হয়। ব্যস, এটুকুতেই ইন্টারভিউ হয়ে যায়।
নাসিরা জানাচ্ছেন, কিন্তু পরে যখন চাকরি না হয়, তখন তাঁরা গিয়ে আব্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সেই সময় নাকি আব্বাস এই অয়ন শীলের নাক বলেছিল। এরপর তারা অয়নের ফ্ল্যাটেও গিয়েছিলেন বলে দাবি। সেই সময় অয়ন তাঁদের একটি কাগজ বের করে দেখিয়েছিল। বলেছিল, এই তালিকায় যাঁদের নাম নেই, তাঁদের হবে না। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থও হয়েছিলেন নাসিরা। কিন্তু এখনও কোনও লাভ হয়নি বলে দাবি তাঁর।
যদিও আব্বাস আলির দাবি, গোটা অভিযোগটাই ভিত্তিহীন। অয়ন যখন পাণ্ডুয়া পঞ্চায়েতে কাজ করত, সেটুকুই তিনি জানতেন। কিন্তু অয়নের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ বা পরিচয় ছিল না। তিনি কোনও টাকা নেননি বলেও স্পষ্ট দাবি করেন আব্বাস আলি। বললেন, ‘আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দেখলেই তো বোঝা যাবে।’
উল্লেখ্য, এই আব্বাস শেখের রাজনৈতিক একটি পরিচয়ও রয়েছে। অতীতে পাণ্ডুয়া পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সদস্যও হয়েছিলেন তিনি। পরে অবশ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ যোগ দেন তিনি। আব্বাস আলির সন্দেহ, এসবের পিছনে রাজনৈতিক কারণ থাকতে পারে। এই নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির অন্দরে চাপানউতরও শুরু হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল শিবির বলছে, ‘শুনেছি উনি বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। আমাদের দলে যাঁদের নাম উঠে আসছে, দল সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের বহিষ্কার করে দেয়। কিন্তু বিজেপি কি করছে? এরপর দেখবেন আরও অনেকে ধরা পড়বে।’
যদিও বিজেপি জেলা নেতৃত্ব বলছে, যদি সত্যিই এমন কোনও অভিযোগ ঘটে, যদি সত্যিই দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে দল অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।