Hooghly: ‘ক্রিমিনাল, বারে যাওয়া রুটিন’, দলের নবনিযুক্ত যুব সভাপতির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক তৃণমূল কাউন্সিলর

TMC leaders slams party youth leader: তৃণমূল কাউন্সিলরের আরও দাবি, "আমাদের লক্ষ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেতানো। কিন্তু নিচুতলার কিছু লোক গন্ডগোল করে ছেড়ে দিচ্ছে।" তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, "জিয়ারুল আকানকে সভাপতি মানব না। দল তাড়িয়ে দিলেও কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু জিয়ারুল আকানকে যুব সভাপতির পদ থেকে সরাতে হবে।"

Hooghly: ক্রিমিনাল, বারে যাওয়া রুটিন, দলের নবনিযুক্ত যুব সভাপতির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক তৃণমূল কাউন্সিলর
সূর্য দে (বাঁদিকে), জিয়ারুল আকান (ডানদিকে)Image Credit source: TV9 Bangla

| Edited By: সঞ্জয় পাইকার

Sep 22, 2025 | 1:45 AM

ডানকুনি: একটা ক্রিমিনাল। একাধিক নারী সংযোগ রয়েছে। বারে যাওয়া নিত্য রুটিন। এই অভিযোগ তুলে ডানকুনি টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের নবনিযুক্ত যুব সভাপতি জিয়ারুল আকানের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ডানকুনি পৌরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সূর্য দে। তিনি আরও বলেন, জিয়ারুল কোনওদিন রাজনীতি করেননি। তাঁকে যুব সভাপতি করা হল কীভাবে, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। জিয়ারুল আকানকে সরানোর দাবি জানান। এই অভিযোগ তোলার জন্য তিনি খুন হয়ে যেতে পারেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তৃণমূল কাউন্সিলর। শাসকদলের যুব সভাপতির বিরুদ্ধে তৃণমূল কাউন্সিলর সরব হওয়ায় কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা।

রবিবার সন্ধেয় একাধিক জেলার সাংগঠনিক পদাধিকারীদের নামের তালিকা প্রকাশ করে তৃণমূল। সেখানে ডানকুনি টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভাপতি হিসাবে জিয়ারুল আকানের নাম প্রকাশ করা হয়। এরপরই সাংবাদিক বৈঠক করেন ডানকুনি পৌরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সূর্য দে।

জিয়ারুল আকানকে যুব সভাপতি হিসেবে মানছেন না জানিয়ে সূর্য দে বলেন, “জিয়ারুল আকান একটা ক্রিমিনাল। নিয়ম করে প্রতিদিন বারে যাওয়াই তার কাজ। রাজনীতি না করেই পদ পেয়েছে আইপ্যাকের রিপোর্টে।” কীভাবে আইপ্যাক জিয়ারুলকে পদ দেওয়ার যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করল, তার প্রমাণ দেখাতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন সূর্য দে।

তাঁর বক্তব্য, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওর বিষয়ে কিছুই জানেন না। নিচুতলার কিছু ব্যক্তি ভুল বার্তা দিয়েছে দলকে। এবং জিয়ারুল আকানকে ডানকুনি টাউনের যুব সভাপতি করা হয়েছে। একটা ক্রিমিনালকে কীভাবে যুব সভাপতি করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আইপ্যাককেও দেখাতে হবে কবে দল করেছে জিয়ারুল।”

তাঁর আরও দাবি, “আমাদের লক্ষ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেতানো। কিন্তু নিচুতলার কিছু লোক গন্ডগোল করে ছেড়ে দিচ্ছে।” তাঁর বক্তব্য, সিপিএমের আমলে অনেক কেস দেওয়া হয়েছে তাঁকে ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের। কিন্তু, তিনি লড়াই করে গিয়েছেন। আর জিয়ারুল কোনওদিনও রাজনীতিই করেননি বলে তৃণমূল এই কাউন্সিলরের দাবি। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, “জিয়ারুল আকানকে সভাপতি মানব না। দল তাড়িয়ে দিলেও কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু জিয়ারুল আকানকে যুব সভাপতির পদ থেকে সরাতে হবে। জিয়ারুল আকানের বাজে চরিত্র। একাধিক নারীতে আসক্ত। জিয়ারুল আকানকে ডানকুনি শহর তৃণমূল কংগ্রেস মানবে না। কারখানায় স্ক্র্যাপের মাল তোলা থেকে বারে যাওয়া তার নিত্য কাজ।”

সূর্য দে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “আমি মার্ডার হয়ে যেতে পারি, তাও বলব। যে পার্টিটাই কোনওদিন করেনি, সে সভাপতি কী করে হয়? যাকে খুশি সভাপতি করা হোক, কিন্তু জিয়ারুল আকানকে নয়।
আমাকে শোকজ বা সাসপেন্ড করলে মাথা পেতে মেনে নেব। কিন্তু তার আগে জিয়ারুল আকানের বিরুদ্ধে মামলাগুলো দেখা হোক। জিয়ারুল আকান আমাকে মার্ডার করতে পারে। আমি মার্ডার হলে জিয়ারুল আকান দায়ী থাকবে।”

সূর্য দের বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন ডানকুনি পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসান মণ্ডল। জিয়ারুল কখনও রাজনীতি করেননি বলে তিনিও দাবি করেন। হাসান মণ্ডল বলেন, “গত তিনটে নির্বাচনে জিয়ারুল আকনকে দলের সঙ্গে থাকতে দেখিনি। তবে তৃণমূলকে পরাস্ত করার জন্য কাজ করেছে। বিরোধীদের স্ট্রং করার জন্য লাখ লাখ টাকা খরচ করেছে। যুব সভাপতি হিসাবে মেনে নেওয়া যায় না। সূর্য যা বলেছে সব সত্যি। মদের বারের সামনে থেকে জিয়ারুলকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সন্ধে হলেই বারে যাওয়া রুটিং ছিল। সিসিটিভি দেখলেই প্রমাণ পাওয়া যাবে। দলকে ভুল বার্তা দেওয়া হয়েছে। দলকে চিন্তাভাবনা করার অনুরোধ করব।”

তাঁর বিরুদ্ধে দলেরই দুই কাউন্সিলর সরব হওয়ার পর জিয়ারুল আকান বলেন, “একটা পরিবারে থাকতে গেলে অশান্তি হয়। সূর্য আর আমার দাদা ভাইয়ের সম্পর্ক। দাদা ভাইয়ের সম্পর্ক ঠিক হয়ে যাবে। এটা নিয়ে যা করার দল করবে। আমাকে দল যে দায়িত্ব দিয়েছে পালন করব।”

অন্যদিকে এই নিয়ে শাসকদলকে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। বামেদের ডানকুনি এরিয়া কমিটি সম্পাদক মনোজ গায়েন বলেন, “তৃণমূল আপদমস্তক চোর, দুর্নীতিগ্রস্ত দল। এতদিন বাংলার মানুষ যা বলে আসছিলেন, সেটা তৃণমূল কাউন্সিলর স্বীকার করে নিলেন।”