SIR in Bengal: SIR ‘আতঙ্কে’ বিষপান, SSKM-এ মৃত্যু ধনেখালির বধূর! আসরে তৃণমূল
Another Death Amid SIR: আশা বিবাহিতা। কিন্তু থাকতেন নিজের বাপের বাড়িতে। বছর আষ্টেক আগে হরিপালে বিয়ে হয় তাঁর। কিন্তু দাম্পত্য কলহের জেরে নিজের বাপের বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি। তারপর থেকে গত ৫ থেকে ৬ বছর ধরে এটাই ছিল তাঁর স্থায়ী ভিটে। কিন্তু দিন গুজরান যখন হয়ে যাচ্ছিল, তা হলে আত্মহত্যা করার মতো পরিস্থিতি কেন তৈরি হল?

হুগলি: আতঙ্কই শেষ করল জীবন। এই দাবি একাধারে যেমন পরিবারের, তেমনই রাজ্যের শাসকশিবিরেরও। বাংলায় ভোটার তালিকার নিবিড় পরিমার্জন ঘিরে তরজার শেষ নেই। বিজেপির চোখ রাঙানিতেই সাধারণ মানুষ ‘প্রাণ হারাচ্ছেন’ বলে অভিযোগ তৃণমূলের। এই আবহেই আরও একটা মৃত্যু। টানা লড়াইয়ের পর হার মানল ধনেখালির বধূ।
দিনকতক আগেই এসআইআর আতঙ্কে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনি, দাবি পরিবারের। অবশ্য় একা নন, সঙ্গে নিজের বছর ছয়ের মেয়েকেও বিষ খাইয়ে দেন ওই মহিলা। নাম আশা সোরেন। তিনি হুগলি জেলার ধনেখালির থানার অন্তর্গত সোমসপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কানা নদী এলাকার বাসিন্দা।
আশা বিবাহিতা। কিন্তু থাকতেন নিজের বাপের বাড়িতে। বছর আষ্টেক আগে হরিপালে বিয়ে হয় তাঁর। কিন্তু দাম্পত্য কলহের জেরে নিজের বাপের বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি। তারপর থেকে গত ৫ থেকে ৬ বছর ধরে এটাই ছিল তাঁর স্থায়ী ভিটে। কিন্তু দিন গুজরান যখন হয়ে যাচ্ছিল, তা হলে আত্মহত্যা করার মতো পরিস্থিতি কেন তৈরি হল?
আশা সোরেনের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটার তালিকার নিবিড় পরিমার্জনের কাজ শুরু হতেই তাঁর বাপের বাড়িতেও ফর্ম দিয়ে যান বিএলও। পরিবারের প্রত্যেকে ফর্ম পেলেও, নিহত মহিলা তা পাননি। এরপরেই আতঙ্ক গ্রাস করে তাঁকে। এদিকে শ্বশুড়বাড়ির সঙ্গেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। সুতরাং, সেখান থেকে সাহায্য পাওয়ার কোনও প্রসঙ্গই নেই। এরপরই আত্মহত্য়ার চেষ্টা।
এই ঘটনার পরেই আশার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন ধনেখালির তৃণমূল বিধায়ক অসীমা পাত্র। ঘটনা সম্পর্কে তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়কেও অবগত করেন তিনি। তড়িঘড়ি ওই মহিলা ও তাঁর শিশুকন্যাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু দিন কয়েকের টানাপোড়েনের পর সোমবার দুপুরে মৃত্যু হয়েছে ওই মহিলার। অবশ্য তাঁর মেয়ের এখনও চিকিৎসাধীন, তুলনামূলক সুস্থ বলে দাবি, চিকিৎসকদের। তৃণমূল শিবিরের দাবি, আশাকে নিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৫ জনের প্রাণ গিয়েছে।
এদিন ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্র বলেন, ‘ধনেখালির ৫০ শতাংশ মানুষজন তফসিলি জাতি ও উপজাতি-ভুক্ত। এঁদের বেশির ভাগের কাছেই অনেক কাগজ নেই। এরা আতঙ্কিত, চিন্তিত। কোথায় যাবে, কোথায় থাকবে।’ এই প্রসঙ্গে নোটবন্দির প্রসঙ্গও তুলে ধরেন তিনি। বিধায়কের কথায়, ‘নোটবন্দির সময় দেখেছি ব্যাঙ্কের লাইনেও দাঁড়িয়ে মানুষ মারা গেছেন। এর দায় কে নেবে? ২০০২ সালে এসআইআর হয়েছিল দু’বছর ধরে। এখন জনসংখ্যা বেড়েছে অথচ সময় দেওয়া হচ্ছে মাত্র দু’মাস। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’ এই ঘটনায় বিজেপির প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি।
