আরামবাগ: নিখোঁজ প্রৌঢ়ের দেহ উদ্ধার হল বাড়ির অদূরেই। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য হুগলির পুরশুড়া হরিহর এলাকায়। রহস্যমৃত্যু নিয়ে উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন। মৃতের নাম ফনিভূষণ সামন্ত (৫১)। কীভাবে মৃত্যু হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বিকালে বাড়ি থেকে বের হন ফনিভূষণ। তারপর নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর আর বাড়ি ফেরেননি। পরিবারের তরফে সম্ভাব্য সমস্ত জায়গায় তাঁর খোঁজ করা হয়। তাঁরা সকালে ভেবেছিলেন থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করবেন। কিন্তু তার আগেই গ্রামবাসীদের তরফে খবর আসে দেহ উদ্ধারের।
সাত সকালেই বাড়ির কিছুটা দূরে একটি পুকুর থেকে ফনিভূষণের দেহ উদ্ধার হয়। প্রথমে স্থানীয় বাসিন্দারাই তাঁর দেহ জলে ভেসে থাকতে দেখেন। চিনতে পেরে তাঁরা খবর দেন পরিবারে। পরে পরিবারের সদস্যরা গিয়ে দেহ শণাক্ত করেন। এরই মধ্যে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। ডুবুরি নামিয়ে দেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
কীভাবে মৃত্যু তা নিয়েই তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। পরিবারের তরফেও কোনও ‘ক্লু’ পাননি তদন্তকারীরা। ওই ব্যক্তি কি আত্মঘাতী হয়েছেন, নাকি তাঁকে খুন করে দেহ পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে? যদি খুন-ই হয়ে থাকেন, তবে কেন তাঁকে হত্যা করা হল? একাধিক প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
প্রৌঢ়ের রহস্যজনক মৃত্যুতে এলাকায় প্রশ্ন উঠেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ দেখেছে, প্রৌঢ়ের মাথায় আঘাতের চিহ্ন আছে। অর্থাত্ তাঁকে মাথায় কোনও ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারছেন না তাঁরা। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। কথা বলা হচ্ছে এলাকাবাসীদের সঙ্গেও।
তবে এখনও পর্যন্ত সেরকম কোনও তথ্য উঠে আসেনি পুলিশের হাতে। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ওই ব্যক্তিটি পুকুরে উপুড় হয়ে পড়ে ছিল। তাঁর মাথার পিছনে আঘাতের চিহ্নটা স্পষ্ট ছিল। সেটা কোনও বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। ওই ব্যক্তি কী কাজ করতেন, তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “কালকে থেকেই খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না, সেটা আমরা শুনেছিলাম। আমরা অনেকেই বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ করি। আজ সকালে দেখি একটা লাশ উপুড় হয়ে পড়ে রয়েছে। পুকুরে এর আগে এমনটা ঘটেনি। মনে সন্দেহ হয়েছিল। পরিবারে খবর দেওয়া হয়। পরে পরিবারের সদস্যরা এসেই দেহ চিহ্নিত করেন। খুন নাকি বোঝা যাচ্ছে না। মাথার পিছনে একটা ক্ষত রয়েছে। এমনতি একটা প্রশ্ন তো থাকছেই, এই শীতের রাতে পুকুরে নিজে থেকে কেন নামতে যাবেন ওঁ?”