
শ্রীরামপুর: জল থেকে মাথায় ঢুকছে অ্যামিবা, শরীরে বাসা বাঁধছে। এই আতঙ্কই এখন ঘিরে ধরেছে দেশের মানুষকে। কেরলে ১৯ জনের মৃত্যুর পর আতঙ্ক ছড়িয়েছে বাংলাতেও। পুকুরের জল থেকে ছড়াতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে এই অ্যামিবার আক্রমণ মানেই কি মৃত্যু? চিকিৎসকরা বলছেন, না। ঠিক যেমন সুস্থ হয়ে উঠলেন হুগলির প্রৌঢ়।
বাহির শ্রীরামপুরের বাসিন্দা প্রবীর কর্মকার(৫৬), পেশায় কল মিস্ত্রি। গত প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে তাঁর অসুস্থতা অনেকটাই বেড়ে যায়। ঘনঘন জ্ঞান হারান তিনি, হাঁটা চলার ক্ষমতাও প্রায় হারিয়ে ফেলেছিলেন।
বিভিন্ন জায়গায় ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার পর অবশেষে শিশু মঙ্গল হাসপাতাল হয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন তিনি। দু’মাস ধরে সেই হাসপাতালেই তাঁর চিকিৎসা চলে। চিকিৎসকরা নানা পরীক্ষা-নিরিক্ষার পর বুঝতে পারেন প্রৌঢ়ের মগজে এককোষী অ্যামিবা বাসা বেঁধেছে। চিকিৎসার পর বর্তমানে শ্রীরামপুরের বাড়িতেই রয়েছেন প্রৌঢ়। শারীরিক দুর্বলতা থাকলেও আগের থেকে অনেকটাই কম। ক্রমশ সুস্থ হয়ে উঠছেন তিনি।
প্রৌঢ় বলছেন, “একটা সময় কথা জড়িয়ে যেত, কোনও জ্ঞান থাকত না।” শ্রীরামপুর শেওড়াফুলি এলাকার একটি বাড়িতে কল সারানো ও জলের ট্যাঙ্ক পরিষ্কারের কাজ করতেন তিনি।
প্রৌঢ়ের স্ত্রী পম্পা কর্মকার বলেন, “আমরা প্রথমে কিছুই বুঝতে পারিনি। হাসপাতালে ভর্তি করার পর চিকিৎসকরাই বললেন কোনও কারণে ওঁর মস্তিষ্কে অ্যামিবা আক্রমণ করেছে। যে কারণেই শারীরিক এই অসুস্থতা দেখা দিয়েছে। একদমই বিছানা থেকে উঠতে পারছিলেন না। সেই অবস্থা থেকে এখন অনেকটাই ভাল আছেন, সবার সঙ্গে কথা বলছেন, হাঁটাচলা করছেন। টাইম কলের জল না খেতে বলেছেন চিকিৎসকরা।”
সম্প্রতি কেরলে ১৯ জন এই ব্রেন ইটিং অ্যামিবার আক্রমণে মারা গিয়েছেন। বাংলাতেও আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। তবে ঠিক সময়ে চিকিৎসা হলে যে সুস্থ হওয়া সম্ভব, সেকথাই বলছেন প্রবীর কর্মকার।