AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Hooghly: ‘মেয়েটা শেষবার আমার হাতে ডাল-ভাত-ডিম খেয়েছিল’, বিলাপ থামছে না দিদিমার

Hooghly: দুই দিন নিখোঁজ থাকার পর গতকাল সন্ধ্যায় কানাইপুরের নিখোঁজ নাবালিকার মৃতদেহ উদ্ধার হয় ন'পাড়া এলাকা থেকে। গত মঙ্গলবার বিকেল চারটের সময় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন বছর তেরোর ওই নাবালিকাকে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়েছিলেন এক যুবক।

Hooghly: 'মেয়েটা শেষবার আমার হাতে ডাল-ভাত-ডিম খেয়েছিল', বিলাপ থামছে না দিদিমার
কেঁদে চলেছেন নাবালিকার দিদিমাImage Credit: TV9 Bangla
| Edited By: | Updated on: May 30, 2025 | 3:27 PM
Share

হুগলি: কেঁদে চলেছেন তিনি। নাতনিকে শেষবার তিনিই খাবার খাইয়ে দিয়েছিলেন। আর সেই নাতনির দেহ উদ্ধারের পর বাকরুদ্ধ তিনি। দোষীর ফাঁসি চাইলেন হুগলির কানাইপুরের মৃত নাবালিকার দিদিমা। নাবালিকার পরিবারের লোকজনও দোষীর ফাঁসির সাজা চাইছেন। কঠোর শাস্তির দাবি জানালেন কানাইপুর কলোনির বাসিন্দারাও।

দুই দিন নিখোঁজ থাকার পর গতকাল সন্ধ্যায় কানাইপুরের নিখোঁজ নাবালিকার মৃতদেহ উদ্ধার হয় ন’পাড়া এলাকা থেকে। গত মঙ্গলবার বিকেল চারটের সময় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন বছর তেরোর ওই নাবালিকাকে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়েছিলেন এক যুবক। তিনি নাবালিকার বাবার বন্ধু। আগে এক সময় তাঁরা একসঙ্গে দিনমজুরের কাজ করতেন। নাবালিকার বাবার যক্ষ্মা হওয়ার পর তিনি আর কাজ করতে পারেন না। তাই ওই যুবকের সঙ্গে যোগাযোগ কমে যায়।

কানাইপুর বাঁশাই কলোনির বাসিন্দা অভিযুক্ত যুবক। তিনি বিবাহিত। তাঁর স্বভাবের জন্য তিন বছর আগে স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন। ভাড়াবাড়িতে মা, বাবা এবং নিজের ছেলেকে নিয়ে থাকেন। ঘটনার দিন মাটি কাটার কাজ আছে বলে নাবালিকার বাবাকে ডাকতে যান অভিযুক্ত যুবক। অসুস্থ থাকায় যেতে পারবেন না জানান নাবালিকার বাবা। অভিযুক্ত যুবককে তাঁর কাকার বাড়ি দেখিয়ে দিতে মেয়েকে বলেন। এরপরই নাবালিকাকে নিয়ে যান অভিযুক্ত যুবক।

নাবালিকার দিদিমা শাক পাতা বিক্রি করেন। ওইদিন দুপুরে নাতনি তাঁর হাতে মাখা ডাল-ভাত-ডিম খেয়েছিল। বলেন, “শেষবার আমার হাতে খেয়েছিল। ওই আমি একটু ডাল ভাত মেখে দিয়েছিলাম। একটা ডিমও ছিল।” বলতে বলতেই কেঁদে ফেলেন তিনি। নাতনি নিখোঁজ হওয়ার পর দু’দিন নিদ্রাহীন কেটেছে তাঁর। সেই নাতনির নিথর দেহ উদ্ধারের পর থেকে শুধু বিলাপ করে চলেছেন তিনি। আর অভিযুক্তের কঠিন শাস্তি চাইছেন। বলেন, “আমার নাতনিকে যেমন মেরেছে, ওকেও মেরে ফেলা হোক।”

এক সময়ের বন্ধু যে তাঁর মেয়ের সঙ্গে এমন কাণ্ড ঘটাবে, ভাবতে পারেননি নাবালিকার বাবা। নাবালিকার মা-বাবা এবং প্রতিবেশীরা অভিযুক্তের ফাঁসি চাইছেন। তাঁদের দাবি, এই ঘটনায় আর কেউ যুক্ত থাকলে তাঁদেরও কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করুক পুলিশ। নাবালিকা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন। তার সঙ্গে এমন ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না কেউ।

অভিযুক্তকে ডানকুনির খড়িয়ালে প্রথমে ধরে ফেলেন স্থানীয়রা। মারধর করেন। তারপর পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। বাঁশাই কলোনির যে বাড়িতে ভাড়া থাকে অভিযুক্তর পরিবার, সেই বাড়ি তালা দেওয়া। তাঁর পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তার স্বার্থে। এদিন ধৃতকে শ্রীরামপুর আদালতে পেশ করা হয়। তাঁকে তিনদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। মৃতদেহ ওয়ালস্ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হবে এদিন। নাবালিকার মৃত্যু কীভাবে হয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে তা নিশ্চিত হতে চাইছে পুলিশ।

কানাইপুরের ঘটনা প্রসঙ্গে এদিন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, “প্রথমত এটা জঘন্যতম অপরাধ। এবং এই অপরাধ যে বা যারা ঘটিয়েছে, তাদের কঠোরতম শাস্তি চাইছি। ধর্ষণ করে খুনের চরমতম শাস্তি হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড। বিধানসভায় সেই বিল আনা হয়েছে। যেটা শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতির সইয়ের অপেক্ষা। আমরা চাই এই ঘটনায় চরমতম শাস্তি হোক, যাতে আগামী দিনে অন্যরা এ ধরনের অপরাধ ঘটাতে সাহস না পায়।”