AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Durga Puja 2021: ভুরশুভার মানিক রাজার বাড়িতে খেলতে আসতেন ছোট্ট গদাই

Goghat: রামকৃষ্ণদেবের স্মৃতি বিজরিত এই মানিক রাজার দুর্গাপুজো আজও মানিক রাজার বংশধরেরা সমান ভাবেই করে আসছেন।

Durga Puja 2021: ভুরশুভার মানিক রাজার বাড়িতে খেলতে আসতেন ছোট্ট গদাই
গোঘাটের ভুরশুভার মানিক রাজার দেশ। নিজস্ব চিত্র।
| Edited By: | Updated on: Oct 10, 2021 | 10:50 PM
Share

হুগলি: গোঘাটের ভুরশুভার মানিক রাজার দেশ (Durga Puja 2021)। আজ থেকে তিনশো বছর কিংবা তারও আগেকার কথা। তখনও চারিদিকে সেই ভাবে বসত গড়ে ওঠেনি। ঘন জঙ্গলে ঘেরা ছিল এলাকা। গ্রামের বাসিন্দা মানিকরাম বন্দ্যোপাধ্যায় তখনও রাজা উপাধি পাননি। কিন্তু মানুষের সঙ্গে তাঁর মেলামেশা, আতিথেয়তা তৈরি হওয়ায় গ্রামের মানুষজন তাঁকে শ্রদ্ধা করতেন। সেই মানিকরাম বর্ধমানের মহারাজার কাছ থেকে রাজা উপাধি লাভ করেছিলেন। এমনকী বর্ধমানের মহারাজা তাঁকে তাঁর সততা ও নিষ্ঠার পরিচয় পেয়ে প্রচুর সম্পত্তিও দান করেন।

সেই মানিকরাম বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৃষ্ট মন্দির আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ভাঙাচোরা সেই রাজবাড়ি ও মন্দিরের নিদর্শন আজও বিদ্যমান বটে! তবে আট পুরুষ আগের সে সমস্ত স্মৃতিকে বর্তমান প্রজন্মের সদস্যরা কিছুটা নতুন করেই গড়েছেন। তবে এ মন্দিরে যে দুর্গা বন্দনা হয় তাতে কিন্তু নিয়মের কোনও বদল আনা হয়নি। শুধুমাত্র লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া।

বহু পুরনো এই মানিক রাজার ভুরশুভা গ্রামের পুজো। রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবও নাকি এই মানিকরাম বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুর্গা পুজোয় আসতেন। তিনি অবশ্য তখন অনেক ছোট। সকলের আদরের গদাই। মানিক রাজার আমবাগানে আদুল গায়ে খেলে বেড়াতেন। এমনও শোনা যায়, এই আমবাগান থেকেই আম পেড়ে সেই আমের আঁটি কামারপুকুরে নিজের বসত বাটিতে পুঁতে আম গাছ তৈরি করেছিলেন রামকৃষ্ণ। আজও কামারপুকুর মঠের ঠিক পাশেই তাঁর হাতে বসানো সেই আম গাছ দাঁড়িয়ে আছে।

রামকৃষ্ণদেবের স্মৃতি বিজরিত এই মানিক রাজার দুর্গাপুজো আজও মানিক রাজার বংশধরেরা সমান ভাবেই করে আসছেন। এখন যারা পুজো করে, তারা রাজার অষ্টম প্রজন্ম। কর্ম সূত্রে এই পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও পুজোর দিনগুলো সকলে এক হয়ে আনন্দটা উপভোগ করেন। আর অন্য কোথাও তাঁরা যান না।

আজ থেকে সাড়ে চারশো বছর আগেকার কথা। তখন মানিক অর্থনৈতিক ভাবে অত্যন্ত দুর্বল ছিলেন। গরীব হওয়ায় সংসার চালাতে পুরানো কলকাতায় বেতনভোগী হিসাবে কাজও করতেন। কথিত আছে, একদিন তিনি মায়ের স্বপ্নাদেশ পান। মা তাঁকে বলছেন,”তুই আমাকে নিয়ে চল তোদের বাড়িতে আমি যাব। আমাকে ওখানেই রাখবি। আমার পুজো করবি।” এরপরই নাকি কাজের জায়গায় ছুটি নিয়ে ভুরশুভায় চলে আসেন তিনি। এরপরই সমস্ত বন্দোবস্ত করে দুর্গাপুজোর প্রচলন করেন। মানিকের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর সেই সময়ের মালিকও।

মানিক রাজার পরিবারের সদস্যরা জানান, এখানে গোস্বামী মতে পুজো হয়। কোনও বলি হয় না। পরিবারের সদস্য প্রভাত বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়রা বলেন, “এই পরিবারে স্বয়ং রামকৃষ্ণদেব আসতেন। তিনি এখানে খেলা করতেন।” প্রতিপদ থেকেই ঘট বসানো হয়। সেই দিন থেকেই পুজো শুরু হয়ে যায়। পুজোর দিনগুলি সারা গ্রামের মানুষ জড়ো হন। নানা অনুষ্ঠান, খেলাও হয়। সকলে মিলেমিশে উৎসবের দিনগুলো কাটান।

আরও পড়ুন: Durga Puja 2021: এ বাড়িতে শুটিং হয়েছে উত্তম কুমারের অ্যান্টনি ফিরিঙ্গিরও, জাড়ার রায়বাড়ির পুজো এখনও সমাদৃত