Mountaineer Piyali Basak: সাপ্লিমেন্টারি অক্সিজেন ছাড়াই এভারেস্ট জয়ের লক্ষ্যে চন্দননগরের মেয়ে
Chandannagar: ২০২১ সালের ১ অক্টোবর পৃথিবীর সপ্তম উচ্চতম শৃঙ্গ ধৌলাগিরি জয় করেন অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবহার ছাড়াই।

হুগলি: সেই কোন ছোট্টবেলায় বইয়ের পাতায় ‘এভারেস্ট অভিযান’ পড়েছিলেন। এরপর থেকে পাহাড় জয়ের স্বপ্ন দেখতেন। যত বয়স বেড়েছে, সে স্বপ্ন আরও সুদৃঢ় হয়েছে মেয়ের। বাস্তবের মাটিতে পা রাখার জন্য ছটফট করেছে। ছ’ বছর বয়স থেকে পাহাড়ে চড়া শুরু চন্দননগরের পিয়ালী বসাকের। ট্রেকিংয়ে বের হতেন মা-বাবার হাত ধরে। এখন তিনি দিদিমণি। স্কুলে পড়ান। একইসঙ্গে সযত্নে লালিত করে চলেছেন পাহাড় ডিঙোনোর স্বপ্নও। এবার অক্সিজেনের সাপোর্ট ছাড়াই পৃথিবীর সর্বোচ্চ শিখরে উঠবেন চন্দননগরের এই পর্বতারোহী। দারুণ রোমাঞ্চিত পিয়ালী।
তেনজিং নোরগের সঙ্গে পাঠ্যপুস্তকে আলাপ পিয়ালীর। তাঁর এভারেস্টে ওঠার কাহিনী রোমাঞ্চিত করেছিল চন্দননগরের কানাইলাল প্রাথমিক স্কুলের এই শিক্ষিকাকে। এরপর মা, বাবার হাত ধরে পাহাড়ে ট্রেকিংয়ে বেরোতেন। সেই থেকেই পাহাড়ে চড়ার নেশা তাঁর উপর জাঁকিয়ে বসে। ২০০০ সালের ১ অগস্ট অমরনাথ অভিযানে গিয়ে জঙ্গি হামলা খুব কাছ থেকে দেখা তাঁর। কেদারনাথে গিয়ে মেঘভাঙা বৃষ্টি, তুষারপাত, ধস থেকে জীবন হাতে করে বেঁচে ফেরা কিংবা সেই সফরেই প্রায় ১০০ জন তীর্থযাত্রীকে বাঁচানোর অভিজ্ঞতাই পিয়ালীকে আরও নিবিড়ভাবে বেঁধে ফেলেছে পাহাড়ের সঙ্গে।
২০২১ সালের ১ অক্টোবর পৃথিবীর সপ্তম উচ্চতম শৃঙ্গ ধৌলাগিরি জয় করেন অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবহার ছাড়াই। তার আগে ২০১৮ সালে অষ্টম শৃঙ্গ মানাসুলু জয় করেন তিনি। বহু শৃঙ্গ জয়ের রেকর্ড রয়েছে তাঁর। পিয়ালী বসাক জানান, তিনি অক্সিজেন সাপোর্ট ছাড়া এভারেস্ট জয়ে আত্মবিশ্বাসী। এর আগেও তিনি একাধিক শৃঙ্গে ওঠার সময় অক্সিজেন সাপোর্ট নেননি। এমনকী অক্সিমিটারে পরীক্ষা করেও দেখেছেন, সবই স্বাভাবিক রয়েছে। তবে অক্সিজেন সিলিন্ডার সঙ্গে থাকবে এই পর্বতারোহীর।
বাবার হাত ধরে পিয়ালী যে স্কুলে পর্বতারোহীদের পোশাক, সামগ্রীর প্রদর্শনী দেখতে যেতেন ছোটবেলায়, এখন তিনি সেই স্কুলেই পড়ান। খুব ভাল ছবি আঁকতে পারেন পিয়ালী। মার্শাল আর্টেও ব্ল্যাকবেল্ট। আইস স্কেটিংয়ে রাজ্যের প্রথম মহিলা খেলোয়ার তিনি। যে রাঁধে সে চুলও যে বাঁধে, চন্দননগরের পিয়ালী বসাকের ক্ষেত্রে তা ভীষণভাবে প্রযোজ্য। বাবা তপন বসাক এখন অসুস্থ। তাঁকে নিয়ে হাসপাতালেও দৌড়াদৌড়ি করেন পিয়ালীই। বাড়ির দোকান বাজার সবই করতে হয়। পাহাড়ে চড়তে গিয়ে ঋণ হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। তারপরও হাল ছাড়েননি পিয়ালী। লড়াকু পিয়ালীর কাছে পাহাড়ই প্রথম ভালবাসা। পিয়ালী বসাকের কথায়, “এর আগে আমি ধৌলাগিড়ির মত একটা কঠিন শৃঙ্গ অক্সিজেন ছাড়াই পৌঁছলাম সফলভাবে। আমি অক্সিজেন ছাড়াও পারব বুঝে গিয়েছি।”
আরও পড়ুন: Kolkata Book Fair: বইয়ের পাতায়ও কি যুদ্ধ লাগে? বইমেলায় রাশিয়ার ফাঁকা স্টল উস্কে দিচ্ছে প্রশ্ন
