Mamata Banerjee: ‘সব টাকা জলেই চলে যাচ্ছে…’ ডিভিসির কাছে ক্ষতিপূরণ চাইবেন মমতা!

Bengal Flood: বাংলার বন্যা পরিস্থিতির জন্য আগেই ডিভিসি-কে দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। এবার আরামবাগে বন্যা বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনের সময় ফের তোপ দাগলেন তিনি।

Mamata Banerjee: 'সব টাকা জলেই চলে যাচ্ছে...' ডিভিসির কাছে ক্ষতিপূরণ চাইবেন মমতা!
আজ বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছেন মমতা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 02, 2021 | 3:19 PM

আরামবাগ: বানভাসি বাংলায় ‘ম্যান মেড’ তত্ত্ব আগেই খাড়া করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পাশাপাশি, ঝাড়খণ্ডের বৃষ্টিকেও দায়ী করেছেন বাংলার বন্যা পরিস্থিতির জন্য। আর এবার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ফের দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের (DVC) বিরুদ্ধে সরাসরি তোপ দাগলেন তিনি। পরিসংখ্যান দিয়ে বোঝালেন ঠিক কত কিউসেক জল ছেড়েছে ডিভিসি। এই বন্যা পরিস্থিতির জন্য ডিভিসি-র কাছে ক্ষতিপূরণ (Compensation) চাইতে হতে পারে বলেও উল্লেখ করলেন মমতা। এ দিন আরামবাগে (Arambagh) গিয়ে তিনি বলেন, ‘ডিভিসির কাছে ক্ষতিপূরণ চাইতে হতে পারে।’ মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘সব টাকা তো জলেই চলে যাচ্ছে।’

এদিন মমতা আরামবাগে দাঁড়িয়ে বলেন, ডিভিসি আর খাড়খণ্ডের জন্যই বাংলায় এই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাঁর দাবি, ডিভিসির যদি বছরে চারবার এভাবে জল ছাড়ে, তাহলে বহু মানুষের ক্ষতি হয়। তিনি বলেন, ‘সব টাকা তো জলেই চলে যাচ্ছে।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উল্লেখ করেন, যে এলাকায় ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেখানে মানুষ সারাতে না সারাতেই আবার ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।

এ দিন মমতা পরিসংখ্যান দিয়ে উল্লেখ করেন, গতবারের বন্যায় ১ লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছিল ডিভিসি। আর এবার কয়েকদিনের মধ্যে সাড়ে ৫ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে।

তিনি জানান, ৩০ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ ভবানীপুরে ভোটের দিন থেকে শুরু করে পরপর লক্ষ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। আর তাতেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, হাওড়ার বিস্তীর্ণ অংশ। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ৩০ তারিখে প্রথমে ৪৯ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। ১ ঘণ্টার মধ্যে আবার ১ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। মধ্যরাতেও জল ছাড়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। ১ অক্টোবর প্রথমে ১ লক্ষ ৫০ হাজার কিউসেক ও পরে ১ লক্ষ ২৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে বলে জানান মমতা। সবটাই রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে হয়েছে বলেই অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই মমতার দাবি, রাজ্যের তরফে ডিভিসির কাছে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হতে পারে। ড্রেজিং করে অন্তত আরও ২ লক্ষ কিউসেক জল আটকানো সম্ভব বলেও দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।

শুধু ডিভিসি নয়, এ দিন ঝাড়খণ্ডের দিকেও আঙুল তুলতে ভোলেননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, ঝাড়খণ্ড জল ছেড়ে দেওয়ায় পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এর জন্য ঝাড়খন্ডের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান তিনি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন হেলিকপ্টারে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন মমতা। আরামবাগে নেমে এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এবারের বন্যা পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ লক্ষ বাড়ি। ৪ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। এ দিন পরিদর্শন সেরে নবান্নে ফিরে তিনি বৈঠক করবেন আধিকারিকদের সঙ্গে। নবান্ন থেকে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চলছে বলেও জানান তিনি।

তবে, মমতার এই ক্ষতিপূরণের মানুষের জন্য চাইছেন নাকি দলের জন্য? সেই প্রশ্নই তুলেছে বিজেপি। বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘যে মানুষগুলোর ক্ষতি হয়েছে তাঁদের জন্য ক্ষতিপূরণের কথা ভাবছেন নাকি ওই টাকা আমফানের মতো কাটমানি হিসেবে নেবে তৃণমূল নেতারা?’ তিনি আরও বলেন, ‘বৃষ্টি বেশি হলে জল ছাড়তে হবে এটাই স্বাভাবিক। আর ভৌগলিক নিয়মেই খাড়খণ্ডের জল বাংলায় চলে আসে। কিন্তু, গত কয়েক বছরে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির জন্য উনি কী করেছেন?’

মমতার ম্যান-মেড তত্ত্বের জবাবে আগেই তোপ দেগেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। গতকালই তিনি বলেন, ‘দুর্বল বাঁধের মেরামত হয়নি। অতিবর্ষণে ভেঙে গিয়েছে। নিজের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার বাঁচাতে ৫০ লক্ষ মানুষকে ডুবিয়েছেন তিনি। এই অপরাধ ঈশ্বরও ক্ষমা করবেন না।’

আরও পড়ুন: BJP: বিজেপি-কে ‘বহিরাগত’ বলে দাগিয়ে দেওয়া ছিল মমতার ভোট জেতার স্ট্র্যাটেজি, দাবি সুকান্তর